ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রাজশাহীর আম নিয়ে করোনা আক্রান্তদের দুয়ারে সোহেল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৭ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০২০
রাজশাহীর আম নিয়ে করোনা আক্রান্তদের দুয়ারে সোহেল

ঢাকা: অনেকের মধ্যে যখন করোনা ভাইরাস সংক্রমিত ব্যক্তিকে এড়িয়ে চলার প্রবণতা তখন রাজশাহীর সুস্বাদু আম নিয়ে পাশে দাঁড়িয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন সাংবাদিক মাহমুদ সোহেল।

বেসরকারি টেলিভিশনের পর একটি ইংরেজি দৈনিকে সাংবাদিকতা করতেন মাহমুদ সোহেল।  

করোনা ভাইরাস মহামারির এই টালমাটাল সময়ে আমের সিজন শুরু হলে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে অনলাইনে আমের ব্যবসা শুরু করেন তিনি।

রাজশাহী বাগান থেকে আম পেড়ে পিকঅ্যাপ ভ্যানে সরাসরি গ্রাহকদের পৌঁছে দেন সোহেল।

শুধু ব্যবসার মধ্যে নিজেকে আটকে না রেখে আম নিয়ে করোনা আক্রান্তদের পাশে দাঁড়ান তিনি। স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে আম নিয়ে করোনা আক্রান্তদের দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছে দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া সাংবাদিক মাহমুদ সোহেল।

করোনা আক্রান্ত বিভিন্ন পরিবারকে তিনি উপহার হিসেবে তুলে দেন গোপালভোগ, হিমসাগর, ল্যাংড়াসহ বিখ্যাত জাতের রাজশাহীর সুমিষ্ট আম।

ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে আম বিক্রির পাশাপাশি বিনামূল্যে আম উপহার দেন সোহেল।  

বন্ধু, শুভাকাঙ্ক্ষী, আত্মীয়-স্বজন এবং করোনা আক্রান্ত আনুমানিক ২০০ জনকে আম উপহার দিয়েছেন মাহমুদ সোহেল।

আম বিক্রিতেও সফল সোহেল। তিনি এখন পর্যন্ত ৫শ মণের বেশি আম বিক্রি করেছেন। অনলাইনে, অফলাইনে ও মোবাইল ফোনে অর্ডার নিয়ে আমের ব্যবসা করছেন। ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডির পাশাপাশি ‘আম খাদক’ নামে একটি গ্রুপও আছে তার।

...মাহমুদ সোহেল বেশির ভাগ আমের অর্ডার তার পরিচিত সার্কেল থেকে পাচ্ছেন বলে বাংলানিউজকে জানান।

সোহেল থেকে আম নিয়েছেন মিরপুরের বাসিন্দা সাইফুল্লাহ শিকদার। তিনি বলেন, করোনার সময় বাসা থেকে খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হই না। সোহেল আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট ভাই। তার কাছ থেকে আম কিনেছি।

মাহমুদ সোহেলের কাছ থেকে নেওয়া রাজশাহীর আমের প্রশংসা করেন তিনি।

মাহমুদ সোহেলের কাছ থেকে উপহার হিসেবে আম পাওয়া করোনা আক্রান্ত মুহাম্মদ সোলাইমান বলেন, বাসায় শুধু আমি আর স্ত্রী, করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর বাসা থেকে বের হতে পারিনি। জরুরি ওষুধ, পণ্য আত্মীয়-স্বজনরা সামাজিক দূরত্বে থেকে দিয়ে গেছেন। আর এই সময়টাতে উপহার হিসেবে আম পাওয়াটা ছিল দারুণ ব্যাপার, তাও আবার রাজশাহীর সুস্বাদু আম।  

তিনি বলেন, আমের ব্যবসার পাশাপাশি আম নিয়ে করোনা আক্রান্তদের পাশে দাঁড়ানো এটা একটা ব্যক্তিক্রমী আইডিয়া এবং প্রশংসনীয় উদ্যোগ।

মাহমুদ সোহেল বলেন, আমার পরিচিত বিশাল সার্কেল রয়েছে। ওনারা এবং ওনাদের পরিচিতজনরা আমার বড় কাস্টমার। অন্য অনেকেও আম নিয়েছেন আমার কাছ থেকে।

‘আমের সাইজ পছন্দ হলে পুরো বাগান কিনি। এরপর বাগান থেকে আম পেড়ে সরাসরি আম গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেই। ’ 

সোহেল বলেন, আমের ব্যবসা শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে করোনা আক্রান্তদের জন্য কিছু করার চিন্তাটা মাথায় ছিল। চিন্তা করেছি এই দুঃসময়ে তাদের কাছে যদি উপহার হিসেবে কিছু আম পাঠানো যায় তাহলে নিশ্চয়ই অনেক খুশি হবেন।  

উদ্যোক্ত হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার পরিকল্পনার কথা জানিয়ে মাহমুদ সোহেল বলেন, চীন এত দ্রুত এগিয়ে গেছে কারণ তারা দেশে উদ্যোক্তা তৈরি করতে পেরেছে এবং সেই পরিবেশ নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ উদ্যোক্ততা হতে গেলে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় বারবার বাধা পেতে হয়। বাংলাদেশও যদি উদ্যোক্তা তৈরি করতে পারে দেশ অনেক দ্রুত এগিয়ে যাবে।

সাংবাদিক মাহমুদ সোহেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে মোবাইল নম্বর- ০১৯২৬১৫২১৫৩ ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০২০
এমইউএম/এএটি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।