ব্যাবসায়ীরা জানানা, বিশ্বব্যাপী করোনার প্রাদুর্ভাবের মুখে পারসোনাল প্রটেক্টিভ ইক্যুইপমেন্ট (পিপিই), ফেস মাস্ক, পালস অক্সিমিটারসহ বিভিন্ন সুরক্ষা সামগ্রীর দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পায়। ফলে দেশে সরবরাহ ঠিক রাখতে সরকার এসব পণ্যের ওপর আমদানী শুল্ক প্রত্যাহার করে প্রজ্ঞাপন জারি করে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ইক্যুইপেমন্ট ইমপোর্টারস মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও ভাস্ট বাংলাদেশের মালিক কামরুজ্জামান সোহাগ বলেন, করোনার সুরক্ষা সামগ্রীতে ভ্যাট-ট্যাক্স ছাড়ের প্রজ্ঞাপনের মেয়াদ না বাড়ালে অসাধু ব্যবসায়ীদের দাপট বেড়ে যাবে। দেশে বর্তমানে করোনার প্রকোপ আগের চেয়ে বেড়েছে। ফলে আগামীতে সুরক্ষা সমাগ্রীর চাহিদা আরও বৃদ্ধি পাবে।
‘এ অবস্থায় সরকার ভ্যাট-ট্যাক্সের প্রজ্ঞাপনের মেয়াদ না বাড়ালে পণ্য মূল্য কম দেখিয়ে বাকি টাকা হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে চলে যাবে। ঘোষিত মূল্য কম দেখিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা নকল পণ্য আমদানি করবে। তখন আর কেউ চালান জমা দিয়ে ওষুধ প্রশাসনের আমদানি সংক্রান্ত অনুমতি পত্র নেবে না। তাতে করে মূল আমদানিকারকরা ব্যবসা ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়বেন। অসাধু ব্যবসায়ীরা অসৎ প্রতিযোগিতায় নামবেন। ’
এ প্রসঙ্গে কামরুজ্জামান সোহাগ আরও বলেন, আমার মনে হয়, আমাদের প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে অবগত নন। এমনকি এনবিআরের চেয়াম্যানও অবগত নন। তারা অবগত হলেই প্রজ্ঞাপনের মেয়াদ বাড়িয়ে দেবেন। আমরা ইতোমধ্যই ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, তারা আমাদের অর্থমন্ত্রী ও এনবিআর চেয়ারম্যান বরাবর সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি জানিয়ে চিঠি দিতে বলেছে। বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে আমাদের দাবি পেশ করবো।
এ খাতের সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, যে ধরনের বিশেষ কাপড় দিয়ে ওয়ান টাইম সার্জিক্যাল মাস্ক তৈরি হয়, বিশ্ববাজারে বর্তমানে তার দাম বেড়েছে। একেকটি সার্জিক্যাল মাস্ক পাইকারি মূল্যে ১০ টাকায় বিক্রি করা সম্ভব। খুচরা মূল্য হিসেবে তা ১২ থেকে ১৩ টাকায় বিক্রি করা যায়। তবে মধ্যস্বত্বভোগীরা এসবের দ্বিগুণ দাম রাখছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা তিন গুণও রাখা হচ্ছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড যখন ভ্যাট-ট্যাক্স মওকুফের প্রজ্ঞাপন জারি করে তখন দেশে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১০০ থেকে ১৫০ জন। তিন মাস দেশে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দৈনিক গড়ে প্রায় ৪ হাজার হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে সরকার পিপিই, মাস্ক ও সুরক্ষা সামগ্রীর আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের মেয়াদ না বাড়ালে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে। কারণ দাম বৃদ্ধি পেলে মানুষ এসব পণ্য ব্যবহার করা কমিয়ে দিবে।
তবে পিপিই, মাস্ক ও সুরক্ষা সামগ্রী আমদানির শুল্ক প্রত্যাহারের মেয়াদ বাড়ানো হবে জানিয়ে ঢাকা কাস্টমস হাউজের কমিশনার মোয়াজ্জেম হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, পারসোনাল প্রটেক্টিভ ইক্যুইপমেন্ট (পিপিই), মাস্ক ও সুরক্ষা সামগ্রী আমদানির ভ্যাট-ট্যাক্স অব্যাহতি সুবিধার মেয়াদ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৪ ঘণ্টা, জুলাই ০২, ২০২০
এসই/এইচজে