ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

কাঁচাবাজারে মাস্ক ব্যবহারে অনীহা ক্রেতা-বিক্রেতাদের

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০১ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২০
কাঁচাবাজারে মাস্ক ব্যবহারে অনীহা ক্রেতা-বিক্রেতাদের

মানিকগঞ্জ: সারাবিশ্ব করোনা সংক্রমণের বিপদজ্জনক সময় পার করলেও মানিকগঞ্জের কাঁচাবাজারগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে মাস্ক পরার অনীহা। এতে করে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি প্রতিনিয়তই বাড়ছে।

মাস্ক পরার অনীহা, শারীরিক দূরত্ব না মানা প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও তাদের গাড়ি দেখলেই সচেতন হওয়ার নাটকীয়তা দেখাচ্ছে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড কাঁচাবাজারে অবস্থানরত ক্রেতা-বিক্রেতারা। প্রশাসন থেকে মাইকিং করেও কোনো কাজ হচ্ছে না, মাঝে মধ্যে মাস্ক না পরার অপরাধে জরিমানা করছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড কাঁচাবাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে কোনো শারিরীক দূরত্ব নেই। গাদাগাদি পরিবেশে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করছে। ক্রেতাদের মুখে মাস্ক থাকলেও ফলের দোকানির মুখে নেই মাস্ক। কাঁচা সবজি দোকানি কিংবা মাছের দোকানিদের মুখে মাস্ক নেই, তাদের মন্তব্য করোনা এখন দেশে নেই। কোনো ক্রেতা দোকানিকে মাস্ক ব্যাবহারের কথা বললে সেই ক্রেতাকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করের দোকানিরা। প্রশাসন থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাঁচাবাজারগুলো বসানোর জন্য বলা হলেও দোকানিরা মানছে না।

আওয়াল নামে এক মৌসুমি ফল বিক্রেতা বাংলানিউজকে বলেন, মুখে মাস্ক পরলে দম বন্ধ হয়ে আসে। এছাড়া কাস্টমার ফলের দাম বললে পুনরায় আমি দাম বললে সে শুনতে পায় না। এ কারণে মুখ থেকে মাস্ক খুলে রাখছি। ম্যাজিস্ট্রেট এলে তখন দ্রুত মাস্ক পরে নিই।  

কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, সারাদিন দোকান করি, এতো গরমের মধ্যে কি শরীরে কোনো কাপড় রাখা যায় না আর সেখানে মুখে মাস্ক রাখাটা অনেক কষ্টের ব্যাপার। জানি মুখে মাস্ক পড়লে করোনা হওয়ার সম্ভবনা কম কিন্তু সারাদিন দোকান করলে মাস্ক পরে দোকান করা অনেক কঠিন। তবে অনেক কাস্টমার এলে ওই সময় মাস্ক পরি।

মোতালের নামে এক মাছ ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে বলেন, বেচি মাছ, তার আবার করোনা হওয়ার ভয় কি। এই রোগ আমাগো হইবো না, আমরা সারাদিন কাজ করে খাই, আজাইরা খাইলে নানা রোগে ধরবো। ম্যাজিস্ট্রেট এলে মাস্ক পরি না হলে তো জরিমানা করবো।

মানিকগঞ্জ কাঁচাবাজারের ক্রেতা সাইফুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, দুপুরে বাজার করতে আসছি কিন্তু এখনও বাজারে মানুষের ভিড়। প্রশাসনিকভাবে বার বার মাইকিং করছে অপ্রয়জনে বাসা-বাড়ি থেকে বের না হতে কিন্তু কিছু মানুষ আরও বেশি করে বের হচ্ছে। তাদের জন্য আমাদের সব চেয়ে বেশি বেগ পেতে হচ্ছে বাজার করতে এসে।  

আফিয়া মজলিশ নামে এক নারী বলেন, অফিস ছুটি হওয়ায় বাসার জন্য কিছু কাঁচা সবজি কিনতে এসেছি। আমরা যতই স্বাস্থ্যবিধি, মাস্ক ব্যবহার করি না কেন, যার কাছ থেকে পণ্য কিনছি তারাতো এখনো সচেতন হয়নি।
 
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী র্কমর্কতা (ইউএনও) মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা মানুষকে সচেতন করতে মাইকিং করছি। রাস্তায় চলাচলকারী মানুষের মুখে মাস্ক না থাকলে তাদের মাস্ক দিচ্ছি। এ পর্যন্ত কয়েক হাজার মাস্ক দিয়েছি আরও ১০ হাজার মাস্ক গাড়িতে নিয়ে ঘুরছি রাস্তায় কোনো লোকের মুখে মাস্ক না থাকলে প্রথমে তাকে মাস্ক ব্যবহারের উপকারিতা বুঝাচ্ছি এবং তাদের মাস্ক দিচ্ছি। মার্কেট কিংবা কাঁচাবাজারগুলোতে মাঝে মধ্যে অভিযান পরিচালনা করছি, কোনো দোকানির মুখে মাস্ক না থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।