ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিএনপি

নির্বাচন স্থগিত-আদালত বন্ধ রাখা দাবি বিএনপির

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২০
নির্বাচন স্থগিত-আদালত বন্ধ রাখা দাবি বিএনপির কথা বলেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কারণে আসন্ন পাঁচটি সংসদীয় আসনের উপ-নির্বাচন ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন স্থগিত এবং আদালত বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।

বৃহস্পতিবার (১৯ মার্চ) বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ আহ্বান জানান।

যেসব নির্বাচন স্থগিত রাখার দাবি করেছেন সেগুলো, ২১ মার্চ (শনিবার) ঢাকা-১০, গাইবান্ধা-৩ ও বাগেরহাট-৪ আসনে এবং ২৯ মার্চ বগুড়া-১, যশোর-৬ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচন।

মির্জা ফখরুল বলেন, করোনা ভাইরাস সারাবিশ্বে ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এবং মানবজাতির জন্য এই দশকে সবচেয়ে বড় সংকটের সৃষ্টি করেছে। সারাবিশ্বে প্রায় ২ লক্ষাধিক মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। বুধবার পর্যন্ত মারা গেছে ৮৭৯১ জন। চীন, ইতালি, ফ্রান্স, স্পেন, আমেরিকাসহ, বিশ্বের ১৭৩টি দেশে এই ভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছে। বাংলাদেশে ১৭ জন আক্রান্ত এবং বুধবার একজনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছে আইইডিসিআর। যদিও মানুষ এই তথ্যের প্রতি আস্থা রাখতে পারছে না। কারণ ইতোমধ্যে যারা প্রবাসী রয়েছেন তারা অনেকে দেশে এসেছেন যাদের সংখ্যা আমাদের জানা নেই। তবে আমরা খবর পাচ্ছি যেসব এলাকায় প্রবাসীরা এসেছেন তারা যত্রতত্র ঘুরে বেড়াচ্ছেন, দাওয়াত খাচ্ছেন, পিকনিকে যাচ্ছেন, দেখা সাক্ষাত করছেন। ইতোমধ্যে সরকারিভাবে যে ১৭ জন আক্রান্তের কথা বলা হয়েছে তাদের বেশিরভাগই বিদেশ থেকে আসা।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ইতোমধ্যে নির্বাচনের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। এর মধ্যে যে সারাদেশে ভীতির সৃষ্টি হয়েছে এই ভীতির কারণে আগামী উপ-নির্বাচন ও চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে কি ধরনের ভোটার সমাগম হবে সেটা আপনারা সহজেই অনুমান করতে পারেন। কিছুক্ষণ আগে নির্বাচন কমিশন বলেছে ২১ তারিখের নির্বাচনগুলো হবেই। আর ২৯ তারিখের নির্বাচনের ব্যাপারে ২১ তারিখে সিদ্ধান্ত দেবেন। আমরা এটাকে একেবারে একপেশে সিদ্ধান্ত মনে করি। জনগণের যে প্রত্যাশা এই দুর্যোগের মধ্যে নির্বাচন কমিশন মানবিক আচরণ করবেন। তারা সেটা করছেন না বরং তারা অমানবিক আচরণ করছেন বলে আমরা মনে করি।

মির্জা ফখরুল বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা প্রথম থেকেই দেখে আসছি সরকার এই করোনা ভাইরাসকে গুরুত্ব দেয়নি। আমরা প্রথম দিকে যে সংবাদ সম্মেলন করেছিলাম তখন বলেছিলাম সরকার দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে। আমরা তখন স্কুল কলেজ বন্ধ করতে বলেছিলাম। কিন্তু তারা করেনি। ১৬ মার্চ স্কুল কলেজ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। আজকে সেতুমন্ত্রী বলেছেন, প্রয়োজন হলে সব শাটডাউন করা হবে। যা যা দরকার করা হবে। এখন তো শাটডাউন করার পরিস্থিতি এসে গেছে। শাটডাউন না করলে ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। এসব কারণে আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি যে তারা তাদের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে মানুষের বেঁচে থাকার স্বার্থে এ নির্বাচনগুলোকে আপাতত স্থগিত রাখবেন।

তিনি আরও বলেন, আদালতগুলোতে প্রতিদিনই অসংখ্যা মানুষের সমাগম হয়। ঢাকাসহ সব আদালতেই এটা হয়। ইতোমধ্যে রিপোর্ট পেয়েছি ৩০ জন বিচারক কোয়ারেন্টিনে চলে গেছেন। ৩০ জন বিচারক যদি কোয়ারেন্টিনে যান সেক্ষেত্রে প্রমাণিত হয়েছে যে আদালতগুলোতে সংক্রামণ বেশি হচ্ছে। সে কারণে আমরা মনে করি জনগণের কথা বিচার করে আদালতগুলো কিছুদিন বন্ধ রাখা প্রয়োজন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। যখন এটা চীনে প্রথম দেখা দেয় তখন সবাই আশঙ্কা করেছে যে এটা ছড়িয়ে পড়তে পারে। আমাদের বেশিরভাগ মানুষের বিদেশের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। অনেক প্রবাসী রয়েছে তারা দেশে ফিরে এলে কি সমস্যা হতে পারে সেটা আমরা ইতোমধ্যে বুঝতে পারছি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকার অন্য বিষয়গুলোতে এত বেশি ব্যস্ত ছিল, যে তারা এই জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০২০
এমএইচ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।