ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পর্যটন

বাগেরহাটে নির্মাণ হচ্ছে পর্যটন করপোরেশনের মোটেল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৩ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২০
বাগেরহাটে নির্মাণ হচ্ছে পর্যটন করপোরেশনের মোটেল

বাগেরহাট: বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন, ষাটগম্বুজ মসজিদ, খানজাহান আলী (রহ.) এর মাজার শরীফসহ বেশকিছু পর্যটন স্পট রয়েছে বাগেরহাটে। একদিনে দুটি বিশ্ব ঐতিহ্য দেখার জন্য বাগেরহাট সব থেকে উত্তম জায়গা। প্রতি বছর প্রচুর সংখ্যক পর্যটক আসেন এখানে। কিন্তু খোদ বাগেরহাট শহর বা শহরের আশপাশে পর্যটন করপোরেশনের কোনো হোটেল বা মোটেল ছিল না। 

মোংলায় একটি হোটেল থাকলেও বাগেরহাট শহর থেকে দূরত্বের কারণে পর্যটকরা খুলনায় গিয়ে অবস্থান করতেন। স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবি ও বাগেরহাটের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে বাগেরহাটের রনবিজয়পুর গ্রামের খানজাহান আলী (রহ.) এর মাজার মোড়ে নির্মিত হচ্ছে সাত তলা বিশিষ্ট পর্যটন মোটেল।

সংশ্লিষ্টদের দাবি পর্যটন করপোরেশনের এই মোটেল বাগেরহাটের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা পালন করবে। দীর্ঘদিন পরে হলেও পর্যটন করপোরেশনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধি ও পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা।

বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, পর্যটন বর্ষ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি হোটেল ও মোটেল নির্মাণ হচ্ছে। বাগেরহাটের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে শহরের মাজার মোড়ে ৩৩ শতকের বেশি জমির উপরে এই মোটেল নির্মিত হচ্ছে। সাত তলাবিশিষ্ট এই ভবনে ৩০টি কক্ষ, ৫০ আসন বিশিষ্ট রেস্টুরেন্ট, অফিস রুম, অভ্যর্থনা কক্ষ, বারবি কিউ রুম ও গাড়ি পার্কিংয়ের সুবিধা থাকবে। পুরো ভবনের আয়তন হবে ২ হাজার ৭৬০ বর্গ মিটার। এর সঙ্গে সৌন্দর্য্য বর্ধনের জন্য বাগানও করা হবে। এসব কর্মযজ্ঞে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ কোটি ৭৭ লাখ ৬ হাজার টাকা।  

খাজা রাব্বি বিলকিস নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এই কাজ করছেন। ২০১৯ সালের জুনে শুরু হওয়া এই ভবনের কাজ ২০২১ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। ইতোমধ্যে ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। সম্পূর্ণ কাজ শেষ হলে বাগেরহাটে পর্যটকদের আনাগোনা আরও বেড়ে যাবে বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা।

নির্মাণাধীন পর্যটন করপোরেশনের মোটেল।  ছবি: বাংলানিউজ

ষাটগম্বুজ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান বাচ্চু বলেন, পদ্মার এপারে তিনটি বিখ্যাত জায়গার মধ্যে দুটোর অবস্থান বাগেরহাটে। কিন্তু দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যটকদের অবস্থান করার জন্য কোনো আবাসিক ব্যবস্থা ছিল না। পর্যটন শিল্পের বিকাশের জন্য অবকাঠামো ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের দাবি করে আসছিলাম। বাগেরহাটকে পর্যটন জোন হিসেবে ঘোষণার দাবিও করেছি প্রধানমন্ত্রীর কাছে। দীর্ঘদিনের দাবি ও এলাকার চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে পর্যটন করপোরেশন বাগেরহাটে একটি মোটেল নির্মাণ করছে। যা এ অঞ্চলের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। বাগেরহাটে এই মোটেল নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ তন্ময়কে আমরা ধন্যবাদ জানাই।  

স্থানীয় ট্যুরিস্ট গাইড মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, পর্যটন করপোরেশনের এই ভবন বাগেরহাটের পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিতে আরো সহায়তা করবে। কিন্তু এর পাশাপাশি স্থানীয় জনসাধারণকেও পর্যটকদের প্রতি সহযোগিতামূলক আচরণে উদ্যোগী হতে হবে। বিগত দিনগুলোতে দেখা গেছে দূর-দূরান্ত থেকে আগত পর্যটকরা স্থানীয়দের কাছ থেকে আশানুরূপ ভালো আচরণ পান না। এক্ষেত্রে পর্যটন এরিয়ার মানুষদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

“ষাটগম্বুজ-সুন্দরবন ট্যুরিজম” নামের ট্যুর অপারেটরের পরিচালক মীর ফজলে সাঈদ ডাবলু বলেন, মাজার মোড়ে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের নির্মাণাধীন বাগেরহাটের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। তবে এ ভবনের পাশাপাশি এই অঞ্চলের পর্যটন শিল্পের সার্বিক উন্নয়নের জন্য সড়কের পাশের অবকাঠামোকে নান্দনিক করতে হবে। পর্যটন স্পটগুলোর আশপাশের সব শ্রেণির মানুষকে প্রশিক্ষণ দিতে হবে যাতে তারা পর্যটকদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করেন।  

এছাড়া ষাটগম্বুজ, মাজার, মোংলাসহ যেসব স্থানের রেস্টুরেন্টে পর্যটকরা খাবার খায় সেসব রেস্টুরেন্টের কর্মচারীদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের মহা-ব্যবস্থাপক (পিটিএস) ও প্রকল্প পরিচালক মো. জাকির হোসেন সিকদার বলেন, মুজিব বর্ষ উপলক্ষে পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে সারা বাংলাদেশে ব্যাপক কাজ করা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে বাগেরহাটের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে খানজাহান আলী (রহ.) এর মাজার সংলগ্ন মোড়ে সাত তলাবিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। ২০২১ সালের জুনের মধ্যে এ কাজ সম্পন্ন হবে। এছাড়া বাগেরহাটের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে সুন্দরবন সংলগ্ন শরণখোলা এলাকা ঘীরে বেশকিছু পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৫০ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।