সম্প্রতি কয়েকটি রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে তার সরব উপস্থিতি ও অত্যন্ত আকর্ষণীয় বাচনভঙ্গিতে দেওয়া বক্তৃতা সবার নজর কেড়েছে। রাজনীতি সচেতনরা মনে করছেন, বঙ্গবন্ধুর পরিবারের তৃতীয় প্রজন্মের মধ্যে রাজনীতিতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হতে যাচ্ছেন তিনি।
বাবা শেখ হেলাল উদ্দীন বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য থাকায় তন্ময়কে বাগেরহাট-২ আসনের জন্য প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।
তাদের পরিবারের ঘনিষ্ট সূত্রে জানা যায়, তন্ময় লন্ডন থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে ২০১৫ সালে বিয়ে করেছেন। তার স্ত্রীর নাম শেখ ইফরাহ তন্ময়। তন্ময় পেশায় ব্যবসায়ী ও তার স্ত্রী শিক্ষকতা করছেন।
২০০১ সালে প্রধানমন্ত্রী যখন বাগেরহাট-১ আসনে নির্বাচন করেন তখন থেকেই তন্ময় রাজনীতিতে সক্রিয় হতে শুরু করেছেন। ওই সময় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর থেকে বিদেশে পড়ালেখার ফাঁকে ফাঁকে দেশে এলেই অংশগ্রহণ করেছেন দলীয় অনেক অনুষ্ঠানে।
সাম্প্রতিক সময়ে তন্ময় বাগেরহাট, খুলনা ও গোপালগঞ্জের বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হচ্ছেন। অতিথি হিসেবে রাখছেন বক্তব্যও।
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বাগেরহাটের রেল রোডের আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনের জনসভায় বুধবার (১০ জানুয়ারি) বিকেলে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় তার দরাজ কণ্ঠ সবাইকে মুগ্ধ করেছে। তার ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠেছিলো গোটা জনসভা।
ওইদিন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি তন্ময়ের বাবা বাগেরহাট-১ আসনের এমপি শেখ হেলাল উদ্দীন, অনুষ্ঠানের সভাপতি বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মোজাম্মেল হোসেন, বিশেষ অতিথি বাগেরহাট-২ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট মীর শওকাত আলী বাদশা, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা এসএম কামাল, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ কামরুজ্জামান টুকু, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ, পৌর মেয়র খান হাবিবুর রহমান, সাবেক এমপি মীর সাখাওয়াত আলী দারুর স্ত্রী ফরিদা আক্তার বানুসহ অন্যদের প্রশংসায় ভাসছিলেন তিনি।
বাগেরহাট জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সরদার নাসির উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, বঙ্গবন্ধু পরিবারের তৃতীয় প্রজন্মের এই নেতাকে আমরা গত দুইবছর আগে বরণ করে নিয়েছি। বাগেরহাটে তার উপস্থিতি তরুণ ও যুবক নেতা-কর্মীদের মধ্যে প্রাণের সঞ্চার করছে। তিনি অত্যন্ত পরোপকারী। কারও বিপদের খবর শুনলেই ছুটে আসেন। তার কানে কারও কোনো সমস্যার খবর পৌঁছালেই তার সমাধান করেন। আগামী দিনে আমরা তাকে বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে দেখতে চাই।
বুধবারের অনুষ্ঠানে তার বক্তব্য সব শ্রেণির নেতা-কমীকে মুগ্ধ করেছে বলেও জানান তিনি।
ফকিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি স্বপন দাশ বলেন, যুগে যুগে তরুণেরা তাদের নেতৃত্বের গুণে কাঙ্ক্ষিত ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা করেছে। তন্ময়ের রাজনীতিতে আসায় দলের তরুণদের মাঝে শৃঙ্খলা ফিরেছে। এসেছে প্রাণ-চাঞ্চল্য। বাবার উত্তরসূরী হিসেবে তিনি আমাদের অতি আপন হিসেবে এরই মধ্যে জায়গা করে নিয়েছেন।
তরুণ নেতা তন্ময়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মোজাম্মেল হোসেনও।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, তন্ময়ের বক্তব্য শুনে আমি অবাক হয়েছি। তার চেহারা দেখেও মুগ্ধ হয়েছি। তার বাবা এলাকার রাস্তা-ঘাটসহ অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। বঙ্গবন্ধুর রক্ত যার গায়ে সে কখনও খারাপ কিছু করতে পারবে না উপকার ছাড়া সাধারণ মানুষের ধারণা এটা। ব্যবহারও অতি ভালো। সবাই তাকে সাদরে গ্রহণ করেছেন।
গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান বাংলানিউজকে বলেন, বঙ্গবন্ধুর রক্ত তন্ময়ের গায়ে। শরীরেই রাজনীতির রক্ত। তিনি তো বঙ্গবন্ধুর উত্তরসূরী হয়ে আসতেই পারেন রাজনীতিতে। তাকে সাধুবাদ জানাই। তার আগমন আমরা ইতিবাচকভাবেই নিয়েছি।
তবে রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার বিষয়ে তন্ময়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তন্ময় এবং তার বাবার মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ০২১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪ , ২০১৮
এমআরএম/এমএ