বুধবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে তৈরি পোশাক শিল্প পণ্যের আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি। রাজধানীতে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি, বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) চার দিনব্যাপী এ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা অনেক দূর এগিয়েছি, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু এখনো দেশের তিন কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। বর্তমান সরকার সর্বান্তকরণে এ বিষয়ে কাজ করছে। বলতে গেলে সর্বশক্তি নিয়োগ করে গুরুত্ব দিয়েছে। তাই অনেকটা রাজনৈতিক হলেও আমি বলতে চাই, বর্তমান সরকারকে আরো এক টার্ম ক্ষমতায় থাকা দরকার।
মুহিত বলেন, এটা রাজনৈতিক কথা। কিন্তু অনেক সময়ই রাজনীতিকে এড়ানো যায় না। অর্থনীতিতে তো রাজনীতি বা রাজনৈতিক দর্শন থাকতেই হয়। গত নয় বছরে আমরা দেশের দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ১০ ভাগ কমিয়েছি। আরো এক টার্ম বর্তমান সরকার দেশ চালানোর ক্ষমতা পেলে আরো দশ ভাগ দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কমবে।
তিনি বলেন, তাহলে ২০২৪ সালে গিয়ে দেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা থাকবে মাত্র চার ভাগ। এটুকু থাকবেই। পৃথিবীর সব দেশেই এটা থাকে। কারণ রাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল মানুষ সব সময়ই, সব দেশে থাকে। এদের অনেকেই শারীরিকও মানসিক প্রতিবন্ধীসহ নানা প্রতিবন্ধকতায় আক্রান্ত থাকেন।
গার্মেন্টেক-২০১৮ উদ্বোধন করতে গিয়ে মুহিত আরো বলেন, গার্মেন্টস শিল্পকে আমরা দেশের মেইনস্ট্রিম শিল্প বলে থাকি। কিন্তু তারা একা কিছুই না। এর সঙ্গে আরো অনেক সেক্টর জড়িত। দেশের রফতানির বড় খাত হিসেবে সরকার সব সময়ই এই খাতকে গুরুত্ব দিয়ে আসছে। ভবিষ্যতেও এই সেক্টরের পাশে থাকবে সরকার।
অনুষ্ঠানে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, গার্মেন্ট সেক্টর সকল প্রতিকূলতা কাটিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কর পলিসি সব সময়ই এই শিল্পকে ভুগিয়ে থাকে। এই অবস্থা কাটানোর জন্য সরকারের ৫ বছরের জন্য কর পলিসি নির্ধারণ করা দরকার। এতে ব্যবসায়ীরা সে অনুযায়ী ব্যবসার পরিকল্পনা করতে পারবেন।
এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইএবি) সভাপতি সালাম মুর্শেদী বলেন, বাংলাদেশের রফতানি বাজারের হৃৎপিণ্ড হলো প্যাকেজিং সেক্টর। এই সেক্টর ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প। সাধারণত নারী ও তরুণ উদ্যোক্তরা এই সেক্টরে বিনিয়োগ করে থাকেন। তাই এদের টিকিয়ে রাখতে এই খাতে রিফাইন্যান্সিং সুযোগ দিতে হবে। এতে এই খাত এগিয়ে যাবে। রফতানিও বাড়বে। যদিও বর্তমানে এই সেক্টরের মোট রফতানি এক বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
অনুষ্ঠানে গার্মেন্টস এক্সসোরিজ প্যাকেজিং ম্যানুফেচারাস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন ( বিজিএপিএমইএ) সভাপতি আব্দুল কাদের খান, এএসকে ট্রেড অ্যান্ড এক্সিবিশন প্রাইভেট লিমিটেডের প্রধান নন্দ গোপাল কে, বিজিএমইএর সেকেন্ড ভাইস প্রেসিডেন্ট মোয়াজ্জেম হোসেন মতি বক্তব্য রাখেন।
দেশের পোশাক খাতের উন্নয়নে প্রদর্শনীকে চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে। মেশিনারি, ইয়ার্ন অ্যান্ড ফেব্রিকস, গার্মেন্টস এক্সসোসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ও প্রিন্টিং মেশিনারিজ অ্যান্ড টেকনোলজি ফর দ্য গার্মেন্টস সেক্টর।
প্রদর্শনীতে বাংলাদেশ, ভারত, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক, ভিয়েতনাম, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, শ্রীলঙ্কা, ইতালি, জার্মানি, সিঙ্গাপুর, জাপান, তাইওয়ান, সুইজারল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, সুইডেন, থাইল্যান্ড, কলম্বিয়া, মালয়শিয়া, কানাডা, স্পেন, ফ্রান্স ও হংকংয়ের ৪৫০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৮
আরএম/এমজেএফ/