তিনি বলেছেন, ‘আমরা সাধুবাদ জানাই, তারপরও তারা ড. কামাল হোসেন, বদরুদ্দোজা চৌধুরী সাহেব, আমাদের মাহমুদুর রহমান মান্না, আ স ম আবদুর রব, তারপর আবার কাদের সিদ্দিকীও বসছেন, সবাই মিলে একটা জোট করছেন। ’
নেপালে অনুষ্ঠিত বিমসটেক সম্মেলনে অংশগ্রহণ বিষয়ে রোববার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এ সাধুবাদ জানান।
আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে ড. কামাল হোসেনের সন্দেহের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ডা. কামাল হোসেন গং রা আদৌ নির্বাচন চান কি-না, এটা আমার প্রশ্ন। বাংলাদেশে তো একটা শ্রেণী বসেই থাকে অসাংবিধানিক, অনির্বাচিত কিছু যদি ক্ষমতা দখল করতে পারে, তবে তারা পতাকা পেতে পারে। তাদের গুরুত্ব বাড়ে। ’
‘আশা করি, আদৌ নির্বাচন হবে কি-না এসব না বলে, নির্বাচন বন্ধের কথা না বলে একসাথে হয়ে একটা জোট করে ইলেকশনটা করুক। ’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আদৌ নির্বাচন হবে কি-না? বলছেন। তার মানে ওনারা বসে আছেন – আমাদের তো কিছু হলেই সব উত্তর পাড়ার দিকে তাকিয়ে বসে থাকে। এটাই তো বাস্তবতা। ’
কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জোটকে আন্দোলন করার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আন্দোলনে বিশ্বাস করি, কেউ কিছু পেতে হলে আগে আন্দোলন করতে হবে। আন্দোলন না করলে আমি কিছু দেবো না। কামাল হোসেন সাহেবদের আন্দোলন করতে হবে। ’
তিনি বলেন, ‘আগে আন্দোলন করে যদি তিনি সফল হন আর যদি উত্তর পাড়ার থেকে কেউ আসে তাহলে ওনারা সাফল্য অর্জন করবেন। এটাই তো। ’
‘ওনারা তো সুস্থ গণতন্ত্র চান না। গণতন্ত্রটা হলো ওনাদের বলার জন্য। আর প্র্যাকটিসটা হচ্ছে অগণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতায় যাওয়া। ’
নতুন জোটের শরিক নেতাদের নিয়ে সরস মন্তব্য
বর্তমান সরকারে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত এমপিদের নিয়ে ড. কামাল হোসেনের সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ড. কামাল হোসেন তিনিও তো আনকনটেস্টেটেড জিতে আসা। জাতির পিতার ছেড়ে দেওয়া সিটে উনি নির্বাচন করে আনকনটেস্টেটেড। আনকন্টেটেস্টেড তিনি আবার সংবিধান প্রণেতাও। সংবিধানও উনি মানতে চান না। ’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ড. কামাল হোসেন সাহেব, উনি যদি গরম বক্তব্য দেন যে এখন থেকে সব বন্ধ। ধরে নেবেন যে ওনার প্লেন রেডি। বাক্সটা গাড়িতে থাকে। আমাদের সাথে তো ছিলেন, আমরা দেখেছি। ’
বিকল্প ধারার সভাপতি অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বদরুদ্দোজা চৌধুরী সাহেব- উনি এক সময় আমাদের খুব ঘনিষ্ট ছিলেন। ’৭৫ এর পর বিএনপি করতে যান। কিন্তু খালেদা জিয়াও তাকে সম্মান দেয়নি। তাকে বঙ্গভবন থেকে বের করে রেললাইনের ওপর দিয়ে দৌড় দেওয়ালো। ’
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, ‘রব সাহেব আমাদের ছাত্রলীগ করতেন এক সময়। তারপর ছাত্রলীগ ছেড়ে চলে গেলেন। আমরা ঠাট্টা করে বলতাম অসময়ে নীরব, সুসময়ে সরব – আ স ম আবদুর রব। আমরা ছাত্রজীবনে তাকে এ কথা বলতাম। উনি এখন সরব হচ্ছেন খুব ভালো কথা। ’
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কাদের সিদ্দিকী তিনিও আমাদের সাথে ছিলেন। ’৯৬ সালে হঠাৎ তার মাথায় কী ঢুকলো, তিনি স্বতন্ত্র নির্বাচন করে আসলেন। আওয়ামী লীগের এমপিরা তাকে ভোট দেবে, বিএনপির এমপিরা তাকে ভোট দেবে উনি প্রধানমন্ত্রী হবেন, সেই আশা নিয়ে ওই মাকাল ফলটা তাকে কে দেখালো জানি না। সেই আসা নিয়ে পদত্যাগ করে নির্বাচন করে নৌকা হারা হয়ে নির্বাচন জিতে আসতে পারলেন না। ’
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মাহমুদুর রহমান মান্না তিনিও আমাদের পার্টি করতে এসেছিলেন। তিনি এখানে খুব একটা স্বস্তি ফিল করেননি। তিনি সারা জীবন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে লিখে অভ্যস্থ। যখন আমাদের পার্টি করতে আসলেন, আমি বললাম আপনার হাত এতো ভালো, এত ভালো লেখেন – আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এতদিন লিখেছেন, এবার একটু পক্ষে লেখেন। দেখা গেলো উনি পক্ষে লিখতেই পারেন না। ওনাকে পক্ষে লিখতে বললেই, মান্না, জুড়ে দেয় কান্না। তিনি আবার আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। ’
বাংলাদেশ সময়: ২১১৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৮
এমইউএম/এসকে/এইচএ/
আরও পড়ুন
** আলোচনার প্রশ্নই ওঠে না, নির্বাচন ঠেকানোর শক্তি কারও নেই
** মিয়ানমার জঘন্য কাজ করেছে
** বিমসটেকের অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় রোহিঙ্গা বিষয় উঠেছে
** আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানো নিয়ে আলোচনা হয়েছে বিমসটেকে