কিন্তু সম্মেলন সুষ্ঠুভাবে হলেও ব্যর্থ হয়েছে কাউন্সিল। তৃণমূলের দাবি উপেক্ষা করে কমিটি চাপিয়ে দিতে গিয়ে তোপের মুখে পড়তে হয়েছে নুরুল ইসলাম নাহিদসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতাদের।
কাউন্সিলে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী ছিলেন ১৬ জন। সব প্রার্থীদের নিয়ে সমঝোতা বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে ঐক্যমতের ভিত্তিতে ৪ জনের নাম চূড়ান্ত করা হয়। তারা হলেন- বর্তমান সভাপতি অ্যাডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরী ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক রফিক উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সৈয়দ মিসবাহ উদ্দিন ও ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাহাবউদ্দিন আহমদ। এদের মধ্যে দু’জনকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং দুই জনকে প্রথম সভাপতি ও যুগ্ম পদে নাম ঘোষণা করার কথা ছিল। কিন্তু এ নামগুলো ঘোষণার জন্য কাউন্সিলস্থলে পৌঁছলেই শুরু হয় হট্টগোল।
এসময় উপস্থিত কাউন্সিলররা ভোটের মাধ্যমে তাদের নেতা নির্বাচনের দাবি তোলেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় ও জেলার নেতারা কমিটি চাপিয়ে দিতে চাইলে ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা নানা স্লোগান দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের একটি অংশ রাস্তায় নেমে আসে সড়ক অবরোধ করেন।
অবস্থা বেগতিক দেখে কেন্দ্র থেকে কমিটি ঘোষণার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের কবল থেকে রক্ষা পান। পরে পুলিশ পাহারায় তারা গোলাপগঞ্জ ত্যাগ করেন।
দীর্ঘ ১৪ বছর পর গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ও কাউন্সিলে ঘিরে উৎফুল্ল ছিলেন নেতাকর্মীরা। কিন্তু তাদের এই উৎসব তিমিরে হারিয়ে যায় কাউন্সিল না হওয়ায়।
এরআগে দুপুরে গোলাপগঞ্জ পৌরসভা মাঠে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি।
প্রথম অধিবেশন (সম্মেলন) চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। দ্বিতীয় অধিবেশন (কাউন্সিল) শুরু হয় বিকেল ৫টায় উপজেলা অডিটরিয়ামে। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লুৎফুর রহমান।
গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রফিক আহমদের পরিচালনায় প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন।
বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ইনাম আহমদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, কেন্দ্রীয় সদস্য ও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাবেক এমপি সৈয়দা জেবুন্নেছা হক, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক, যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন ইসলাম কামাল, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক বিজিত চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক জগলু চৌধুরী, সিলেট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক কবির আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য নুরুল আমিন, সৈয়দ মিসবাহ উদ্দিন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন গোলাপগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র আমিনুল ইসলাম রাবেল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. আব্দুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক লুৎফুর রহমান, সাবেক পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া আহমদ পাপলু, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মনসুর আহমদ, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজিরা বেগম শীলা প্রমুখ।
এ বিষয়ে জানতে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরীকে ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ সময়: ০২৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৯
এনইউ/জেডএস