এতে রূপালী ব্যাংক কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ) সভাপতি হিসেবে মোস্তাক আহম্মেদ ও সাধারণ সম্পাদক মো. কাবিল হোসেন কাজীর নামও উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ চলতি বছরের ১৯ জুলাই কর্মকর্তাদের সঙ্গে অসদাচারণের দায়ে রূপালী ব্যাংক সিবিএ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ তিনকে বহিষ্কার এবং ৫ জনকে চূড়ান্ত শাস্তি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সিবিএ সভাপতি-সম্পাদককে বহিষ্কারের পরও ব্যাংক কার্যালয়ে তাদের অনুষ্ঠান আয়োজনের খবর ব্যাংক কর্তৃপক্ষই জানে না। এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে মন্ত্রীর নাম ব্যবহার করায় বিষ্ময় প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ।
ব্যংক পাড়ায় সাঁটানো এই পোস্টারে শুধু শাজাহান খানই নন, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, শ্রম ও কর্ম সংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, শ্রমিক লীগ সভাপতি শুক্কুর মাহামুদ, রূপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মনজুর হোসেন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউর রহমান প্রধানের নামও দেওয়া হয়েছে।
পোস্টারে রূপালী ব্যাংক কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) নাম দিয়ে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে ২৩ আগস্ট এক আলোচনা সভা আয়োনের ঘোষণা দিয়েছেন মোস্তাক ও কাবিল।
বিষয়টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি গোচর করা হলে ৯ জুলাই বুধবার একটি নোটিশ জারি করা হয়েছে। শোক দিবস উপলক্ষে ১৫ আগস্ট ব্যাংকের পক্ষ থেকে প্রধান কার্যালয়ের ছয়তলায় আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হবে।
নোটিশে বলা হয়েছে, রূপালী ব্যাংক কর্মচারী ইউনিয়নের নাম ব্যবহার করে ২৩ আগস্ট ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আলোচনা সভা আয়োজন করে দিলকুশা ও মতিঝিলে পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। ওই পোস্টারে সিবিএ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যাদের নাম ব্যবহার করা হয়েছে তারা ব্যাংকের কেউ না। এছাড়াও পোস্টারে নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, অর্থ প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, ব্যাংকের চেয়ারম্যান মনজুর হোসেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাদের সম্মতি নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে রূপালী ব্যাংক কর্মচারী ইউনিয়নের বহিষ্কৃত সভাপতি মোস্তাক আহম্মেদের কাছে কারো অনমুতি না নিয়ে পোস্টারে নাম কেনো ব্যবহার করেছেন জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য না করে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
কর্মকর্তাদের সঙ্গে অসদাচারণের দায়ে চলতি বছরের ১৯ জুলাই রূপালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ব্যাংকের সিবিএ সভাপতি খন্দকার মোস্তাক আহম্মেদ, সেক্রেটারি মোঃ কাবিল হোসেন কাজী ও কেয়ার টেকার মোঃ আরমান মোল্লাকে স্থায়ীভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে। এছাড়াও বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয় ড্রাইভার মোঃ আবুল কালাম আজাদকে।
ঢাকার বাইরে বদলি করা হয়েছে কেয়ারটেকার মোঃ আনোয়ার হোসেন, ছাব্বির আহমেদ ভুঁইয়া ও মনিরুল ইসলামসহ অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার (গ্রেড-১) মোঃ আহসান হাবিবকে।
এর আগে ১৩ জুলাই সিবিএ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও একজন কেয়ারটেকারকে কেন বরখাস্ত করা হবে না তা জানতে চেয়ে সাতদিনের মধ্যে জবাব চেয়েছিল ব্যাংক। তাদের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় চুড়ান্ত বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।
রূপালী ব্যাংকের এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ব্যাংকিং খাতে সিবিএ নেতাকর্মীদের ১৪ বছরের অনাচারের লাগাম টেনেছে রূপালী ব্যাংক। ২০১৬ সালের ৫ ডিসেম্বর রূপালী ব্যাংকের স্থানীয় কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক মোঃ নূরুজ্জামান, উপ-মহাব্যবস্থাপক মোঃ শওকত আলী খান, সহকারী মহাব্যবস্থপক মোঃ সাখাওয়াত হোসেন ও প্রিন্সিপাল অফিসার মোঃ জসিম উদ্দিন সরকারের সাথে গুরুতর অসদাচরণ ও অশালীন আচরণ করে তাদেরকে শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত করেন আলোচিত এই সিবিএ নেতারা।
বাংলাদেশ সময়: ০৫৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৭
এসই/জেডএম