ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

ফখরুল বললেন, আন্দোলন আন্দোলন আন্দোলন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০১৮
ফখরুল বললেন, আন্দোলন আন্দোলন আন্দোলন বক্তব্য রাখছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের মানুষ অপেক্ষা করে আছে, কবে তারা একটা সুযোগ পাবে, সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে এই সরকারকে একেবারে চিরতরে উৎখাত করে দেবে। 

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে শনিবার (৩১ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাবন্দি বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য নেতাকর্মীদের আন্দোলনে নামার আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘গণতন্ত্রের মাতা’ আজকে কারাবন্দি।

যিনি স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে দীর্ঘ নয় বছর লড়াই করেছিলেন, সেই মাকে তারা বন্দি করে রেখেছে। আপনারা ফেটে পড়ুন সবাই, উঠে দাঁড়ান, সবাই জাগ্রত হন, এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করে সবাই রাজপথে বেরিয়ে আসুন। কোনো বিকল্প নেই, আন্দোলন, আন্দোলন, আন্দোলন।  

আন্দোলনের মধ্যে দিয়েই খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করা হবে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির আগে অন্য কোনো কিছু আমরা চিন্তা করবো না। আমরা এখন শান্তিপূর্ণ, একবারেই শান্তিপূর্ণ নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করছি। এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে আমরা এদের (সরকারের) পতন ঘটাবো।

সরকারকে অভিযুক্ত করে ফখরুল বলেন, আজ দেশের অর্থনীতি ধংস করে দিয়েছে। ব্যাংকগুলো লুট করে নিয়েছে। কয়েকদিন আগে (মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা) এফবিআই বলেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকে যে হ্যাকিং (রিজার্ভ চুরি) হয়েছিল, তার সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের লোকেরাই জড়িত আছে।

তিনি বলেন, আজকে প্রত্যেকটি প্রজেক্টকে তারা মেগা প্রজেক্ট বলছে। উদ্দেশ্য মেগা চুরি, মেগা লুট। ১০ টাকায় চাল খাওয়ানোর ওয়াদা করেছিল। এখন ৭০ টাকায়ও চাল পাওয়া যাচ্ছে না। গ্যাস, তেল, জ্বালানি, তেলসহ প্রত্যেকটা জিনিসের দাম তিন-চার-পাঁচ গুণ বেড়ে গেছে।

‘মির্জা ফখরুল সারাদিন মিথ্যা কথা বলেন’, ঠাকুরগাঁওয়ে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, অবৈধ সরকারের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী নিজে যেটা করেন সেটাই অন্যের বেলায়ও মনে করেন। অনেকে আমাকে জিজ্ঞাসা করেছেন আপনি এটার উত্তর দেননি কেন। আমি বলেছি, আমাদের রুচিতে বাধে। আমাদের রাজনৈতিক শিষ্টাচারে বাধে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের ঘরে ঘরে যেতে হবে। এই বাণী পৌঁছে দিতে হবে যে এখন ঘরে বসে থাকার সময় নেই। নিজের অধিকার আদায়ের জন্য, আমার ভোটকে আমিই দেবো, সেই অধিকার আদায়ের জন্য। দেশবাসীর বুকের ওপর চেপে বসা ভয়াবহ দানবকে সরানোর জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করতে হবে।

আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, যে চেতনা নিয়ে জিয়াউর রহমান ‘স্বাধীনতার ঘোষণা’ দিয়েছিলেন, মুক্তিযোদ্ধারা যু্দ্ধ করেছিলেন, সেই চেতনার আজ কী অবস্থা! মূল চেতনা ছিল গণতন্ত্র, আজকে সেই গণতন্ত্রের কী অবস্থা তা ব্যাখ্যা করে বলার প্রয়োজন হয় না। আজকে মানুষের কথা বলার অধিকার নেই। বিরোধী দলের সমাবেশ করার অধিকার নেই। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই, সত্য কথা লিখতে পারে না, কেউ সত্য কথা বলতে পারে না। এমন অবস্থা তৈরির জন্য এ দেশের লাখো মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হননি।

সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান ইনাম আহমেদ চৌধুরী, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, ফজলুর রহমান প্রমুখ।  

সভা পরিচালনা করেন দলের প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীম।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৭ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০১৮
এমএইচ/এইচএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।