বিএনপির পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত না পাওয়ায় নিজেদের মধ্যে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। শরিক দলের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
২০ দলীয় জোটের সমন্বয়ক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসন ভাগাভাগির বিষয়টি এখন মুখ্য নয়। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নির্বাচনের অনুকূলে আসার পরেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজা হওয়ায় তিন মাসেরও বেশি সময় কারাগারে রয়েছেন জোট নেত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দল চালাচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি রয়েছেন বিদেশে। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বলছেন, তাদের দাবি দুটি। নেত্রীর মুক্তি ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
আরও পড়ুন>>
** কাদের কনফার্ম না, ফখরুল কনফার্ম
আন্দোলন এবং নির্বাচনকে টার্গেট করে বিএনপি এগিয়ে যাচ্ছে এমনটি দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ৩০০ আসনে তাদের ৯০০ প্রার্থী প্রস্তুত আছে। তাহলে জোট শরিকদের কী অবস্থা সেটা নিয়ে প্রকাশ্যে তিনি কিছু বলছেন না।
সূত্র জানায়, বিষয়টা প্রকাশ্যে বলার বিষয় না হলেও জোটের শরিকেরা এ নিয়ে চিন্তিত। তারা বলছেন, নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যেই ঘোষণা করেছে অক্টোবরে তফসিল ও ডিসেম্বরে নির্বাচন হতে পারে। সে হিসেবে আর মাত্র ৪/৫ মাসের মতো সময় আছে। এই সময়ের মধ্যে প্রস্তুতি নিতে হবে। কোন দল কয়টা আসন পাবে, কে কোন আসনে নির্বাচন করবে সে বিষয়টি এখনো পরিষ্কার করেনি বিএনপি।
জোটের শরিক বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক বাংলানিউজকে বলেন, যেহেতু আসন বণ্টন নিয়ে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি, সেহেতু শরিক দলগুলো বিভিন্ন প্রকার কৌশলগত চাপে আছে। গত দুমাস আগে জোটের বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হলেও আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
জোটের শরিক বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূইয়া বাংলানিউজকে বলেন, ২০ দলীয় জোট নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়। আর কোন দলকে কোন আসন ছাড়বে এ ব্যাপারেও জোটের প্রধান শরিক বিএনপি স্পষ্ট করে কিছুই বলছে না। নির্বাচনের আর মাত্র ৫ থেকে ৬ মাস বাকি। বিএনপির উচিত হবে শরিকদের আসনের বিষয়টি নিশ্চিত করা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ন্যাপ একটি নিবন্ধিত দল। সুতরাং নিবন্ধিত দল হিসাবে আমরা অবশ্যই নির্বাচনে অংশগহণ করবো। সে কারণেই এখনই যদি বিএনপি আসনের বিষয়টি নিশ্চিত না করে তাহলে তো খুবই সমস্যা। তবে, আমরা জোট কিংবা একক দুইভাবেই নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
আসন ভাগাভাগি নিয়ে শরিকদের দাবির সর্বশেষ বহিঃপ্রকাশ ঘটে ৩ এপ্রিল মঙ্গলবার। ওই দিন এলডিপির ঢাকা মহানগর সম্মেলনে বিএনপির প্রতি কঠোর বার্তা ছুড়ে দেন দলের নেতারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, কয়েকজন নেতা উল্টাপাল্টা কথা বলেছেন এটা তাদের ব্যক্তিগত মতামত, দলীয় সিদ্ধান্ত না। আমরা আপাতত আসন নিয়ে কোনো চিন্তা করছি না। নির্বাচন যদি হয় সেক্ষেত্রে আমরা দলের প্রেসিডয়াম সদস্যরা বসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।
জোটের কাছে কত আসন চাইবেন এমন প্রশ্নের জবাবে রেদোওয়ান আহমেদ বলেন, সেটা এখনও ঠিক করা হয়নি।
২০ দলীয় জোটের সবচেয়ে বড় শরিক জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মিয়া গোলাম পরওয়ার বাংলানিউজকে বলেন, আসন নিয়ে এখনো দরকষাকষি হয়নি। আমরা আমাদের মতো করে প্রস্তুতি নিচ্ছি। জোটনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির পরে জোটের বৈঠকেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে কারা কত আসন পাবে।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালের চেয়ে এবার জোটের কাছে তারা বেশি আসন দাবি করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১২ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৮
এমএইচ/এমজেএফ