জোটের অন্যতম শরিক বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান এক বিবৃতিতে বলেছেন, অর্থমন্ত্রী যে বাজেট পেশ করেছেন তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না বলেই অর্থনীতিবিদগণ মনে করেন। পেশকৃত বাজেট অদূরদর্শী, উচ্চাকাঙ্খী, কল্পনা বিলাসী ও নির্বাচনমুখী।
বর্তমান সরকারের ৯ বছরে আমরা লক্ষ্য করে আসছি যে সরকার প্রায় প্রতি বছরই মোটা অংকের বাজেট পেশ করলেও দুর্নীতি, অনিয়ম ও নানা বিশৃঙ্খলার কারণে তা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত বাজেট কাটছাট করতে বাধ্য হয়। সদ্য পেশ করা বাজেটের ক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রম হবে না বলেই মনে হচ্ছে।
প্রস্তাবিত বাজেট হাওয়াই মিঠার মতো ভেতরে ফাঁপা বলে দাবি করেছে ২০দলের অন্যতম শরীক দল খেলাফত মজলিস। দলটির আমির অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের এক যৌথ বিবৃতিতে অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বাজেটকে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার বাজেট হিসেবে উল্লেখ করে একে গণবিরোধী আখ্যায়িত করে বলেছেন, আকারে বড় কিন্তু ভেতরে ফাঁপা ঋণনির্ভর এ বাজেটে হাওয়াই মিটার মত। এতে সাধারণ জনগণের কোনো কল্যাণ হবে না। এ বাজেট দিয়ে নির্বাচনী বৈতরণীও পার হওয়া যাবেনা।
বিবৃতিতে তারা বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জনগণের ওপর অতিরিক্ত করের বোঝা চাপানো হয়েছে। এ বাজেটে সাধারণ জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। গরীব মারার এ বাজেট জনগণ মানবে না।
প্রস্তাবিত বাজেটকে ধনীক শ্রেণীর স্বার্থ রক্ষার বাজেট হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাপ। এক প্রতিক্রিয়ায় পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া বলেন, ঘোষিত বাজেটে গরিব জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তির কোনো দিক নির্দেশনা নেই। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির খাতে বিশাল অংকের অর্থ বরাদ্দ করে কাবিখা, টিআর ও কর্মসৃজন প্রকল্পের নামে সরকারদলীয় লোকদের প্রস্তাবিত বাজেটের লুটপাটের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। দেশের দরিদ্র্য জনগোষ্ঠীর কথা চিন্তা না করে প্রস্তাবিত বাজেটে ধনীক শ্রেণীর স্বার্থ রক্ষার প্রচেষ্টা বিদ্যমান। তাই এ ধরনের বাজেট সাধারণ জনগণের কোনো উপকারে আসবে না।
প্রস্তাবিত বাজেট শিল্প বিকাশ ও কর্মসংস্থানের প্রশ্নে দিশাহীন উল্লেখ করে জোটের শরিক বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, এ বাজেটে কৃষির ওপর নির্ভরশীল বিরাট সংখ্যক গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য সামান্যতম রাষ্ট্রীয় সহায়তা নেই। সেচের ডিজেল-বিদ্যুৎ, সার-বীজের ওপর প্রত্যক্ষ ভর্তুকি নেই। উৎপন্ন ফসলের জন্য মূল্য সহায়তা নেই। একইভাবে দেশের শ্রমিক জনগোষ্ঠীর জন্য কোনো সহায়তা, কর্মপ্রত্যাশীদের জন্য কোনো পদক্ষেপের কথা বলা হয়নি। পাচার হওয়া হাজার হাজার মানুষের জন্যও কোনো সহায়তার কথা বলা হয়নি।
২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে ২০দলীয় জোটের শরিক ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এনডিপি চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেছেন, সরকারের ঘোষিত বাজেট নির্বাচনমুখী। এ বাজেটে দেশের সাধারণ মানুষের জন্য কোনো সুখবর নেই।
তারা বলেন, আগামী নির্বাচনকে টার্গেট করে মহা লুটপাটের জন্যই এ বিশাল বাজেট ঘোষণা করেছে সরকার। ঘাটতি পূরণে উৎসের কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছাড়া ঘোষিত বাজেট স্বপ্নবিলাসী ছাড়া আর কিছু নয়।
এ বাজেট জনকল্যাণে কোনো কাজে আসবে না উল্লেখ করে বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থ ও মহাসচিব আব্দুল মতিন সাউদ বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট গরীবকে আরও গরীব করবে, ধনীদের আরও ধনী করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এমনিতে দারিদ্র কমার হার কমে যাচ্ছে, এ বাজেটে দারিদ্র কমার হার আরও কমে যাবে। কারণ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে না,অর্থনীতির নতুন খাত তৈরি হচ্ছে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৯ ঘণ্টা, জুন ০৮, ২০১৮
এমএইচ/এসএইচ