বুধবার (৪ জুলাই) বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ২০ দলের নেতাদের বৈঠকের পর জোটের সমন্বয়কারী নজরুল ইসলাম খান সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘জোটের বৈঠকে রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশনের আসন্ন নির্বাচনের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
জোটের শরিক জামায়াতের সিলেট মহানগর আমির এহসানুল মাহবুব জুবায়েরের প্রার্থিতার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে নজরুল বলেন, ‘প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় এখনো শেষ হয়নি। আমরা বলেছি যে, প্রার্থী একজনই থাকবেন। ’
সিলেটে জামায়াত ছাড় দেবে না বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে, এই বিষয়ে জানতে চাইলে সংবাদ সম্মেলন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সেটা তাদের বক্তব্য। আমাদের ২০ দলের বক্তব্য হচ্ছে আমরা একক প্রার্থী নিয়েই নির্বাচন করবো। ’
সেক্ষেত্রে যদি বিএনপির প্রার্থীর সঙ্গে জামায়াতের প্রার্থীর নির্বাচন হয়, তাহলে আপনারা কী করবেন? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এটা নির্ভর করবে যখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে তখন, আপনারা জানতে পারবেন। তবে আমরা সিলেটে যে প্রার্থী দিয়েছি (আরিফুল হক চৌধুরী) সেটাকে ২০ দল ইতিমধ্যে অনুমোদন দিয়েছে। ’
সিলেটের প্রার্থী নিয়ে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের কোনো টানাপোড়েন হবে কি-না জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কোনো টানাপোড়েন হয়নি। এখন পর্যন্ত প্রশ্নই ওঠেনি। যে কারণে আপনারা নিশ্চয় আমাদের রেজোল্যুশনে লক্ষ্য করেছেন যে, আমরা ২০ দল একত্রিতভাবেই কাজ করবো। ’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আজকের বৈঠকে জামায়াতের প্রতিনিধি ছিলেন। তারা একমত হয়েছেন যে, তারাও একক প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবেন। ’
২০ দলের বৈঠকে কারাবন্দি জোট নেত্রী খালেদা জিয়ার ‘জামিন বিলম্বে সরকারের ছলচাতুরির’ অভিযোগ তুলে তার নিন্দা জানানো হয় এবং অবিলম্বে তার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবি করা হয়।
বৈঠকে গৃহীত প্রস্তাবে কারাবন্দি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার ও তাদের মুক্তি, গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান, কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা ও গ্রেপ্তারের ঘটনার নিন্দা জানানো হয়।
জতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতিয়েরেস রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করায় জোটের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানানো হয়। একইসঙ্গে রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর আরও চাপ সৃষ্টিতে জাতিসংঘসহ বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানায় জোট।
চাকরিরত ইউএনওদের শিক্ষা ও রাজনৈতিক জীবন ও নিকট আত্মীয়দের বিষয়ে সরকার ‘গোপন অনুসন্ধান চালাচ্ছে’ অভিযোগ তুলে বৈঠকে তারও নিন্দা জানায় ২০ দল।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের আবদুল হালিম, বিজেপির আন্দালিব রহমান পার্থ, খেলাফত মজলিসের আহমেদ আবদুল কাদের, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা আবদুল করীম, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, এনডিপির খোন্দকার গোলাম মুর্তজা, এনডিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ন্যাপের জেবেল রহমান গানি, ন্যাপ ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, লেবার পার্টির ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এমদাদুল হক চৌধুরী, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, এলডিপির সাহাদাত হোসেন সেলিম, মুসলিম লীগের শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, ডিএলের সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী, মাওলানা রেজাউল করীম, ইসলামিক পার্টির আবুল কাশেম, পিপলস লীগের সৈয়দ মাহবুব হোসেন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৩ ঘণ্টা, জুলাই ০৪, ২০১৮
এমএইচ/এইচএ/