চট্টগ্রাম: সিলেটগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন নির্ধারিত সময়ের প্রায় চার ঘণ্টা পর দুপুর পৌনে বারটার দিকে চট্টগ্রাম রেল স্টেশন ছেড়ে গেছে।
সিলেট থেকে ফেরার পথে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের এক শিক্ষকসহ নয় শিক্ষার্থীর কাছে ভূয়া টিকেট বিক্রি ও তাদেরকে হয়রানী করার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রোববার সকালে ট্রেনটি আটকে রাখে।
পরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এই ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে সিলেট রেল স্টেশনের বুকিং সহকারী নিজামকে বরখাস্ত ও ঘটনার তদন্ত করার আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেন। এতে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
শনিবার সকাল ৮টায় শিক্ষার্থীরা রেলস্টেশনে জড়ো হয়ে এ ঘটনার প্রতিবাদে পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি আটকে দেন ।
এদিকে সিলেটগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রীরা রেলস্টেশনে স্টেশন মাস্টারের কক্ষের সামনে ট্রেনটি ছেড়ে দেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেন। পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভের কারণে চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে সব ধরনের টিকেট বিক্রি বন্ধ হলেও পরে স্বাভাবিক হয়।
চট্টগ্রাম রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার শামসুল আলম বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের হয়রানির ঘটনায় সিলেট রেলস্টেশনের বুকিং সহকারী নিজামকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
বিভাগীয় গণিত অলিম্পিয়াড শেষে সিলেট থেকে উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনে চড়ে রোববার সকালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক গণেশ চন্দ্র রায় ও ৯ জন শিক্ষার্থী চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে পৌঁছেন।
শিক্ষার্থী রাশেদ বাংলানিউজকে জানান, শনিবার সিলেট রেলস্টেশন থেকে উদয়ন এক্সপ্রেসের ১০টি টিকেট কেনেন তারা। তাদের `অ` বগিতে আসন বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু শনিবার রাতে ট্রেনে উঠতে গিয়ে তারা দেখেন, ওই ট্রেনে `অ` নামে কোন বগির অস্তিত্ব নেই। আর তাদের যেসব টিকেট দেয়া হয়েছে সেগুলো স্ট্যান্ডিং টিকেট।
এরপর রাতভর শিক্ষকসহ ট্রেনে দাঁড়িয়েই তারা চট্টগ্রামে এসে পৌঁছেন। যাত্রাপথে তাদের নানা ধরনের বিড়ম্বনা সহ্য করতে হয়। বিষয়টি তারা টেলিফোনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের জানালে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন।
শনিবার সকাল ৮টায় শিক্ষার্থীরা রেলস্টেশনে জড়ো হয়ে এ ঘটনার প্রতিবাদে পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি আটকে দেন। ট্রেনটি সকাল ৮টায় সিলেটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবার কথা ছিল। ট্রেনটি এখনও ইঞ্জিন পর্যন্ত সংযোজন করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে সূত্র।
এ ঘটনায় চাঁদপুর থেকে মেঘনাগামী এক্সপ্রেস ট্রেনটি সীতাকুন্ড পর্যন্ত এসে আটকে গেলেও পরে ট্রেনটি চট্টগ্রামে পৌঁছে ফের চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
এদিকে পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রীরা দীর্ঘসময় অপেক্ষা করেও ট্রেন না ছাড়ায় স্টেশন মাস্টারের কক্ষের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময় তারা শ্লোগান দিয়ে মিছিল শুরু করলে পুরো স্টেশনে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
স্টেশন মাষ্টার শামসুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, `অস্ত্বিত্ববিহীন বগি কেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বরাদ্দ দেয়া হয় সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। `
বাংলাদেশ সময়: ১১০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭ ২০১৩
এসজি/আরডিজি/টিসি