ব্রাহ্মণবাড়িয়া: মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতা, ডাকসুর সাবেক সাধারণ সম্পাদক(জিএস) ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুস মাখনের মাতা আমেনা খাতুন আর নেই।
শনিবার সকাল পৌনে আটটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পুনিয়াউট এলাকায় নিজ বাসভবনে বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন।
শনিবার সকালে মরহুমের ছোট ছেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হেলাল উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, বাদ আছর ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের নিয়াজ মোহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে দক্ষিণ মৌড়াইল গোরস্থানে তার মায়ের দাফন সম্পন্ন করা হবে।
এদিকে আমেনা খাতুনের মৃত্যুতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী ও পৌরসভার মেয়র মো. হেলাল উদ্দিন শোক প্রকাশ করেছেন।
পারিবারিক সূত্র জানায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পুনিয়াউট এলাকার মোহাম্মদ আব্দুল আলীর স্ত্রী আমেনা খাতুনের সাত ছেলে ও চার মেয়ের মধ্যে জাতীয় বীর আব্দুল কুদ্দুস মাখন ছিলেন তৃতীয়। ১৯৪৭ সালের ১ জুলাই তার ঔরসে জন্ম নিয়েছিলেন জাতীয় বীর আব্দুল কুদ্দুস মাখন।
বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের চেতনায় ছাত্রসমাজকে ছাত্রলীগের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ করে মুক্তিযুদ্ধকে সুসংগঠিত করতে আব্দুল কুদ্দুস মাখনের ছিল অসামান্য অবদান। ১৯৭১ সালে গঠিত স্বাধীনবাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের চার নেতার একজন ছিলেন তিনি।
ওই ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ১৯৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে সর্বপ্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে। ৩ মার্চ ছাত্র পরিষদের এক জনসভায় স্বাধীনতার প্রথম ইস্তেহার পাঠ করা হয়।
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা, জাতীয় সঙ্গীত, রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতি ও বঙ্গবন্ধুকে জাতির জনক ঘোষণা দেওয়া হয় ওই ইস্তেহারে। ২৩ মার্চ বঙ্গবন্ধুর হাতে জাতীয় পতাকা তুলে দেন আব্দুল কুদ্দুস মাখন।
স্বাধীনতা যুদ্ধেও আব্দুল কুদ্দুস মাখনের ছিল অসামান্য অবদান। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য ছিলেন। আজীবন সংগ্রামী এই নেতা ১৯৯০ সালে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মায়ের আগেই ক্ষণজন্মা এই মানুষটি ১৯৯৮ সালে মাত্র ৪৭ বছর বয়সে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৫ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০১৩
মাসুক হৃদয়/এনএস