ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জলবায়ু ও পরিবেশ

‘হুদহুদ’ আসলে কি?

শামীম হোসেন,নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০১৪
‘হুদহুদ’ আসলে কি?

ঢাকা: ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘হুদহুদ’। উপকূল জুড়ে জারি করা হয়েছে সতর্কতা।

এই ভয়ের মধ্যেও মনে কি প্রশ্ন জাগে ‘হুদহুদ’ কি? কেনইবা এর নামকরণ ‘হুদহুদ’ করা হলো?

হ্যাঁ, আপনাদের মনের সেই জিজ্ঞাসা থেকেই চলুন জানি ‘হুদহুদ’ সম্পর্কে।

হুদহুদ মূলত একটি অনন্য সুন্দর পাখি। ওমানের অ্যাফ্রো-ইউরেসিয়ান একটি পাখির নামানুসারে হুদহুদের নামকরণ করা হয়েছে।

এই পাখিটি লম্বায় ৩১ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। একে আবার অনেকে মোহনচূড়া বা পতিতহুদহুদ বলে ডেকে থাকে। এর বৈজ্ঞানিক নাম Upupa epops আর ইংরেজি নাম Common Hoopoe/ Eurasian Hoopoe।

অনন্য সুন্দর এ পাখিটির শরীর বাদামি এবং ডানা-লেজে সাদাকালো দাগ রয়েছে। মাথায় খুব সুন্দর একটা ঝুঁটি ও ঝুঁটির হলদে বাদামি পালকের মাথাটা কালো রংয়ের।

সাধারণত ভারতীয় উপমহাদেশে পাখিটি বেশি দেখা যায়। আর ডাকেও বেশ মিষ্টি করে..হু..পো...পো..।

অন্যদিকে, ফিলিপাইনের উত্তর দ্বীপমালার লুপগাও সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য এই ‘হুদহুদ’ ভজনগান। এটা গাওয়া হয় মূলত ফসল কাটার সময়, শেষকৃত্যানুষ্ঠান এবং ধর্মীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের সময়।   ১৭০০ সালের আগে প্রায় ২০০ ভজনগান নিয়ে একটি হুদহুদ তৈরি হতো এবং এটা ৪০টি পর্বে ভাগ করা থাকতো। একটা পরিপূর্ণ ভজনগান কয়েকদিন ধরে চলতো।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউইউএমও) আওতায় জাতিসংঘের এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের আবহাওয়াবিদদের সংস্থা এস্কেপের আবহাওয়াবিদদের নিয়ে গঠিত একটি কমিটি বিশ্বের বড় ঝড়গুলোর নাম দিয়ে থাকে।

এস্কেপের প্যানেলে বাংলাদেশ, মিয়ানমার, ভারত, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, শ্রীলংকা এবং ওমানের প্রতিনিধিরা রয়েছেন। ২০০০ সালে এস্কেপের প্রস্তাবনা অনুযায়ী প্রতিটি দেশ থেকে ঘূর্ণিঝড়ের ১০টি নাম জমা নেওয়া হয়। এখান থেকেই পরবর্তী ঘূর্ণিঝড়গুলোর নামকরণ করা হয়।

নামকরণের ধারাবাহিকতা অনুসারে নতুন এ ঘূর্ণিঝড়ের নাম রাখা হয়েছে ওমানের প্রস্তাবিত ‘হুদহুদ’ পাখির নামে। যেহেতু এর আগে ‘মহাসেন’র নাম রাখা হয়েছিলো শ্রীলংকার তৃতীয় শতকে শাসক রাজা’র নামানুসারে। তাই এবার হুদহুদের নাম রাখা হয়েছে ওমানের প্রস্তাবিত একটি পাখির নামানুসারে।

আগে প্রতিটি ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হতো নারীদের নামে। কিন্তু ১৯৭৯ সাল থেকে নামকরণের ক্ষেত্র পুরুষের নাম অন্তর্ভূক্ত করা হয়। এখন তালিকায় পর্যাক্রমে পুরুষ ও নারী দুই নামই রাখা হয়েছে। যেহেতু ঝড় যেহেতু মৃত্যু ও ধ্বংসের সঙ্গে জড়িত, তাই কোনো নামই দ্বিতীয়বার আর ব্যবহার করা হয় না।

এরপর যে ঘূণিঝড়গুলো আঘাত হানবে তার নামগুলো হবে পর্যায়ক্রমে-হেলেন, লহর, মাদী, নানাউক, নিলুফার, প্রিয়া, কোমেন, চপলা, মেঘ, ভালি, কায়নত্দ, নাদা, ভরদাহ, সামা, মোরা, অক্ষি, সাগর, বাজু, দায়ে, লুবান, তিতলি, দাস, ফেথাই, ফণী, বায়ু, হিকা, কায়ের, মহা, বুলবুল, সোবা ও আমপান। এ নামগুলো চলবে ২০১৬ সাল পর্যন্ত।

আবহাওয়াবিদদের মতে, ভয়াবহতার দিক থেকে সব ঘূর্ণিঝড়ের বৈশিষ্ট্য প্রায় একই থাকে। তবে স্থানীয়ভাবে ঘূর্ণিঝড়গুলোর নাম ভিন্ন হয়ে থাকে। যেমন ভারত মহাসগরীয় অঞ্চল থেকে উৎপন্ন ঘূর্ণিঝড়গুলোকে সাইক্লোন বলা হয়। টাইফুন বলা হয় প্রশান্ত মহাসগরীয় অঞ্চলের ঘূর্ণিঝড়গুলোকে।   আর হারিকেন বলা হয় আটলান্টিক মহাসাগরীয় এলাকার ঘূর্ণিঝড়কে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০১৪

** ভারতের দিকে এগুচ্ছে ঘূর্ণিঝড় হুদহুদ
** ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় হুদহুদ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।