শ্রীমঙ্গল: ‘দিন কানা’ নাম হলেও সে আদতে মোটেই কানা নয়। দিনেও দেখতে পারে বেশ।
বনের শুকনো লতাপাতা, ডালপালা আর মাটির সঙ্গে অনায়াসে মিশে যায় পাখিটি। তার শরীরের রং আর ওই বিবর্ণ লতাপাতার রং বড় আশ্চর্যজনকভাবে মিলে যায়। স্বাভাবিক চোখে কখনোই এ পার্থক্য ধরা পড়ে না। পাখিটির ইংরেজি নাম Large-tailed Nightjer। তবে ল্যাঞ্জা রাতচরা, লম্বা লেজ রাতচরা প্রভৃতি নামেও পাখিটির পরিচিতি রয়েছে।
বনের পথ ধরে হাঁটতে গিয়ে বহুবার ধোঁকা খেয়েছি! পায়ের একদম কাছাকাছি বসে ছিল পাখিটি। অথচ দেখা হলো না! আমার আগমনশব্দে উধাও হয়ে গেলো। অবাক হলাম। এত্তো কাছে ছিল সে! তবুও দেখা মিললো না। তাই বনের পথ ধরে এগিয়ে যেতে থাকলে একটু সতর্কদৃষ্টি রাখা চাই পাখিটিকে দেখতে চাইলে।
প্রখ্যাত পাখি বিশেষজ্ঞ ও লেখক শরীফ খান এ পাখি সম্পর্কে বলেন, দিনে কানা পাখিটি বাংলাদেশের একমাত্র পাখি যারা ডিম ও ছানা সরিয়ে নিতে পারে। এরা নিশাচর। সন্ধ্যায় ও ভোরে এরা বেশ তৎপর এবং জোরে জোরে একটানা ডাকে। এদের মূল খাদ্য উড়ন্ত পোকামাকড়। উড়তে উড়তেই মুখ হা করে পোড়ামাকড় ধরে থাকে।
তিনি আরও বলেন, এদের দৈর্ঘ্য ৩৩ সেমি। মার্চ-মে এদের প্রজনন মৌসুম। তখন এরা মাটির উপরে বা ঝরাপাতার উপর দু’টি ডিম পাড়ে। দু’জনে মিলে পালা করে ডিমে তা দেয়। ষোলো অথবা বিশ দিন পর ছানা বের হয়। ছানাগুলোর শরীরে সোনালি আভাযুক্ত ধূসর ও হলুদাভ পালক গজায়। সারা দেশেই কম-বেশি দিনে কানাদের দেখা যায়।
বাংলাদেশ সময়: ০০৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৪