শ্রীমঙ্গল: ‘দু’টি পাতা একটি কুঁড়ি’র চা বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে জনপ্রিয় পানীয়ের একটি। শৈশব থেকেই আমরা পরিচিত হই এ পানীয়ের সঙ্গে।
গাঢ় সবুজ পাতার চায়ের সুগন্ধযুক্ত সাদা ফুলের মাঝখানে রয়েছে স্বর্ণাভ হলুদ রঙা পরাগকেশর, যা চা ফুলকে করে তুলেছে অতি আকর্ষণীয়। চা গাছ চিরসবুজ ঝোপাল গুল্ম কিংবা ছোট আকারের বৃক্ষজাতীয় উদ্ভিদ। সাধারণত একটি চা গাছ তিন থেকে চার মিটার লম্বা হয়। তবে চা বাগানের চা গাছগুলো দু’ফুটের বেশি লম্বা হয় না। এর মূল খুব শক্তিশালী। চা আর ক্যামেলিয়া একই প্রজাতির গাছ।
বিখ্যাত ক্যামিলিয়া ফুল চা গাছের সহ-প্রজাতি। চা গাছের বৈজ্ঞানিক নাম Camellia sinensis বা ক্যামেলিয়া সিনেনসিস। আর ক্যামেলিয়া ফুলের নাম ক্যামেলিয়া জাগানিকা। চায়ের ফুল দেখতে অনেকটা ক্যামেলিয়া ফুলের মতো। তবে ক্যামেলিয়ার মতো বিচিত্র বর্ণের নয়। হালকা সাদা রঙের এবং আকারে কিছুটা ছোট। চায়ের কচি পাতা ক্যাফেইনসমৃদ্ধ। তাই সহজেই চাঙা হয়ে ওঠার কার্যকারিতা রয়েছে এতে।
গবেষকদের ধারণা, খ্রিস্টপূর্ব দু’হাজার সাতাশ শতাব্দীতে চীনা সম্রাট সিন নুং-এর সময় চা আবিষ্কৃত হয়। আবার ইতিহাসবিদের মতামত, বুদ্ধের জন্মের প্রায় এক হাজার বছর আগে চীনা সন্ন্যাসীরা চা আবিষ্কার করেন। ভারতীয় উপমহাদেশে ১৮৩৩ সালে প্রথম চা চাষ শুরু ভারতের লখিমপুর চা বাগানে। আর ১৮৫৭ সালে বাংলাদেশে প্রথম সিলেটের মালিনীছড়ায়। জাতিসংঘের এক তথ্য থেকে জানা যায়, প্রায় এক বিলিয়ন বা একশো কোটি মানুষ বর্তমানে প্রতিদিন কমপক্ষে দু’কাপ করে চা পান করেন।
শহরের কোলাহলের বন্দি থেকে যাদের চা বাগান দেখার সৌভাগ্য হয়নি কখনো; চিরসবুজের প্লাবনে এসে হয়নি প্রাণভরে নিঃশ্বাস নেওয়ার সুযোগ; তাদের বলছি – শুধু চা নয়, ছোট চায়ের ফুলকেও আপনার ভালোবাসা ছড়িয়ে দিতে চলে আসুন শ্রীমঙ্গল। পাকা সড়ক ধরে এগিয়ে যেতে হঠাৎই দেখবেন হাজার হাজার চা পাতার ভিড়ে একটি ছোট্ট চা-ফুল আপনার দিকে তাকিয়ে যেন হাসছে!
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৪