রাজশাহী: অবশেষে সফল প্রজননের মাধ্যমে বিলুপ্তপ্রায় কালেম পাখির (Purple swamphen) বংশ বাড়াতে সক্ষম হয়েছেন নওগাঁর মহাদেবপুরের মুনসুর সরকার। এ বিষয়ে তাকে সহায়তা করেছে রাজশাহী বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ।
রাজশাহী বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ থেকে গত ২৬ জানুযারি একটি পুরুষ কালেম পাখি সরবরাহ করা হয় তাকে।
পরে তার কাছে থাকা একটি স্ত্রী কালেমের সঙ্গে প্রজননের মাধ্যমে দেশ থেকে বিলুপ্তপ্রায় কালেম পাখির সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা শুরু করেন মুনসুর। অবশেষে নিরলস পরিশ্রমে সফলতার মুখ দেখেন তিনি। ওই এক জোড়া পাখি থেকে দশ জোড়া কালেম পাখির জন্ম হয়। মুনসুর সরকার উৎপাদিত কালেম পাখিগুলো এখন সম্পূর্ণ সুস্থ ও স্বাভাবিক।
অতি সম্প্রতি মুনসুর সরকার তার কাছে থাকা সাতটি কালেম পাখি রাজশাহী বিভাগীয় বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কাছে হস্তান্তর করেন। তাই প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য পুনরুদ্ধারে মুনসুরের এ ক্ষুদ্র সফলতা একটি মাইলফলক বলে মনে করছেন বন কর্মকর্তারা।
রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোল্যা রেজাউল করিম বাংলানিউজকে জানান, বনে-জঙ্গলে কালেম পাখি এখন আর সেভাবে চোখে পড়ে না। কালের বিবর্তনে এ পাখিগুলো যেনো হারিয়ে যেতে বসেছে। এক সময় জলচর কালেম পাখির প্রাচুর্য থাকলেও বর্তমানে প্রাকৃতিক পরিবেশের বিরূপ প্রভাবে আবাসস্থল হারিয়ে বিলুপ্ত হতে চলেছে এই বিপন্ন প্রজাতিটি।
মোল্যা রেজাউল করিম বলেন, জলাশয়ে নির্বিচারে পাখি নিধন ও কৃষিতে ইচ্ছেমতো কীটনাশকের ব্যবহারের ফলে পাখিগুলো এখন আর বংশ বিস্তার করতে পারছে না। ঠিক এ সময় আবারও কালেমের সফল প্রজনন, উৎপাদন ও প্রকৃতিতে ফিরিয়ে দেওয়ার অক্লান্ত প্রচেষ্টায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন মুনসুর।
এ জন্য ভবিষ্যতে তাকে সব ধরনের সরকারী সহায়তার আশ্বাস দেন বিভাগীয় এ বন কর্মকর্তা।
পাখিপ্রেমিক মুনসুর সরকার রাজশাহীর পাশ্ববর্তী নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলার কুঞ্জবন পাখিগ্রামের বিচিত্র পাখি উৎপাদন বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৪