ঢাকা: টেলিফোন, মোবাইল, ই-মেইলে উদ্ভবের আগের কথা। হাতে লেখা চিঠিই ছিল ঘরে বসে দূর যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম।
আধুনিক প্রযুক্তির যুগে চলচ্চিত্রের গল্পের মতো বিষয়টি এখন কেবল চলচ্চিত্রেই দেখা যায়। ক’টা বোতাম চেপে মুহূর্তে প্রয়োজনীয় বার্তা পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ আসার পরে চিঠি প্রায় ভুলতে বসেছে মানুষ। কিন্তু কবুতরের পথ চিনে গন্তব্যে যাওয়ার রহস্য আজও তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে গবেষকদের।
যুগ যুগ পরে উত্তর মিললো সেই প্রশ্নের। কবুতর তার মস্তিষ্কে জাইরোস্কোপ (gyroscope) ব্যবহার করে পথ চিনতে। গবেষকদের মতে, পাখি তার স্মৃতিতে থাকা ভূ-মণ্ডলের চিত্রে নিজের বাড়িকে কেন্দ্র ধরে মানচিত্র সাজিয়ে নেয়।
সুইজারল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব জুরিচ-এর গবেষক ডা. হেন্স পিটার লিপ বলেন, কবুতর ফ্লাইট কম্পাসের মতো তার গতিপথ নির্ধারণ করতে সক্ষম এটা সর্বজন স্বীকৃত। কিন্তু এর আগে কেউ বলেনি কবুতর কীভাবে তার অবস্থান নির্ধারণ করে। অতীতের কিছু গবেষণায় বলা হয়েছে কবুতর পথ চিনতে ঘ্রাণ ব্যবহার করে।
সুইস আর্মিতে ইউক্রেনের গবেষক ভ্যালারি কেনেভস্কিস সঙ্গে কবুতর নিয়ে কয়েক যুগ কাজ করার পরে এ প্রশ্নে উত্তর খুঁজে পান তারা। বিশেষজ্ঞদের মতে, পোষা কবুতরের স্থানিকতায় (gravity field) সমস্যা রয়েছে।
গবেষকরা শুরুতে ২৬টি কবুতরকে প্রশিক্ষণ দেন এবং প্রতিটির সঙ্গে একটি জিপিএস ট্রাকার দেওয়া হয়। কয়েক দফা চর্চার পরে ১৮টি কবুতর সঠিক গন্তব্যে বার্তা পৌঁছাতে সক্ষম হয়। বাকি সাতটি গন্তব্য হারিয়ে ফেলার পাশাপাশি তাদের বাড়ির অবস্থানও ভুলে যায়।
এর কারণ হিসেবে গবেষকরা মনে করেন, পাখিরা তাদের বাড়ি মনে রাখার জন্য পাশে থাকা অন্যান্য চিহ্ন বা বাড়ি মনে রাখে। যে পাখিগুলো ভুল করেছিল তাদের এই নির্ধারণেও ভুল ছিল। পাখিরা তাদের পথ সোজা রাখতে সেলুলার মেকানিজম (cellular mechanisms) ব্যবহার করে বলেও উল্লেখ করেন ডা. লিপ।
বাংলাদেশ সময়: ০৫০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০১৪