ঢাকা: কেবল মানুষই নয়, রেসাস বানরও আয়নার প্রতিচ্ছবি থেকে শিক্ষা নেয়। সম্প্রতি একটি জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিশেষজ্ঞরা এ মত জানান।
তাদের মতে, রেসাস বানর বা লাল বানর আয়নায় প্রতিচ্ছবি দেখে নিজেকে দেখা যাচ্ছে বুঝতে পারে না, এর অর্থ এই নয় তারা শিক্ষা নেয় না। নিজেদের প্রতিচ্ছবি দেখা যাচ্ছে বোঝার পরেই তারা শিখতে শুরু করে। আয়নায় তারা নিজেদের শরীরের সেই অংশগুলো দেখতে থাকে যা সাধারণত দেখতে পায় না তারা।
প্রতিবেদনে চায়নিজ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্স-এর গবেষক নেং গং বানরের মস্তিষ্কের সঙ্গে কম্পিউটার হার্ডওয়্যারের তুলনা করেন। এতে বলা হয়, বানরের মস্তিষ্ক হলো কম্পিউটার হার্ডডিস্ক। আয়নায় দেখে নিজেদের প্রতিচ্ছবি বুঝতে তাদের প্রশিক্ষণ দরকার যা কম্পিউটার সফটওয়্যার।
এর আগে একটি গবেষণায়, বানরদের বিভিন্ন আকৃতির আয়না দেওয়া হয়। যখন তারা এই আয়নাগুলোর ব্যবহার শেখে, তখন তারা অন্য জিনিসপত্র দেখার জন্য টুলস হিসেবে এগুলো ব্যবহার করে। কিন্তু তারা নিজেদের সম্পর্কে জানতে আয়না ব্যবহার করেনি। তবে গবেষকরা বানরের মুখে থাকা দাগ ও আয়নায় থাকা প্রতিচ্ছবি একই দেখিয়ে দেওয়ার পরে তারা বুঝতে পারে।
গবেষণায় গং এবং তার সহকর্মীরা আয়না দেওয়ার পরে প্রশিক্ষিত করতে বানরের মুখে বিরক্তিকর লেজার লাইট ফেলে। দুই থেকে পাঁচ সপ্তাহ পরে বানরগুলো তাদের মুখের যে অংশ দাগ দেখতে পায় আয়নায়, সেখানে হাত দিতে শেখে। সাতটির মধ্যে পাঁচটি প্রশিক্ষিত বানর আয়নায় দেখে নিজেদের আচরণের প্রতিচ্ছবি নির্দিষ্ট করতে শেখে। প্রশিক্ষণ পাওয়ার পরে কেবল মুখেই নয়, শরীরের অন্য অংশও তারা দেখতে শুরু করে।
বানরের ওপর করা এই গবেষণা মস্তিষ্ক বিকৃতি, প্রতিবন্ধকতা, সিজফ্রেনিয়া কিংবা অন্য রোগের কারণে যারা আয়নায় নিজেদের শনাক্ত করতে পারেন না তাদের জন্য ইতিবাচক হতে পারে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৫