শ্রীমঙ্গল: পরিবেশ রক্ষায় ফুলবাগানের গুরুত্ব অপরিসীম। সৌন্দর্যের জন্য ফুল বাগান করা হলেও তা সরাসরি উপকার করে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের।
নানা রকমের ফুলে সুসজ্জিত এখন শ্রীমঙ্গলের জালালাবাদ গ্যাস অফিস। শীত মৌসুমের ফুলে ভরা বাগানটি দেখে ভীষণ মুগ্ধ হলাম। অফিসের ভেতর ঢুকেই দেখা গেল ওখানে ফুটে রয়েছে নানা রঙের ফুল। ফুলের এই হাসি চোখের দৃষ্টিসীমার মধ্য দিয়ে হৃদয়কে সরাসরি স্পর্শ করে।
এর থেকেও বড় কথা– এখানে মেলা বসেছে প্রজাপতি আর মৌমাছিদের। কিছুক্ষণ সেখানে নীরবে দাঁড়িয়ে থেকে অনুভব করলাম ফুলেদের গালে তাদের মৃদু চুম্বনের প্রাকৃতিক রহস্য! বেশি বেশি করে বাগান তৈরি হলে কিছুটা হলেও রক্ষা পাবে বিপন্ন পরিবেশ।
জালালাবাদ গ্যাস অফিসের সহকারী ব্যবস্থাপক নাসিমা আক্তার চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ডালিয়া, গাঁদা, কসমস, জিনিয়া, গোলাপ, সূর্যমুখী প্রভৃতি ফুল ফুটেছে আমাদের এখানে। অফিসের খরচ থেকে আমরা এই ফুলের বাগানটি করেছি।
তিনি আরও বলেন, প্রতি বছর আমরা এ বাগান করি। শীত মৌসুমে নানা জাতের ফুল লাগানো হয়। গতবার আরো বেশি পরিমাণে ফুল ধরেছিল। এবার শীতে কিছু চারা মরে গেছে। মৌমাছির চাষ করে আমরা খাঁটি মধুও পাই।
পরিবেশ রক্ষায় বাগানের গুরুত্ব সম্পর্কে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আবদুল বাকী বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের দেশের বিভিন্ন অফিস-আদালতের ভেতর পড়ে থাকা জমিটুকুতে ছোট্ট করে বাগান করা যেতেই পারে। এতে পরিবেশের উপকার হবে।
তিনি বলেন, পরিবেশের উপর নির্ভরশীল প্রাণী ও জীববৈচিত্র্যগুলো তাদের বেঁচে থাকার উপযুক্ত অবলম্বন খুঁজে পাবে। কিছু কিছু কীট-পতঙ্গ রয়েছে যারা সরাসরি ফুলের উপর নির্ভর করে বেঁচে থাকে। নানা জাতের প্রজাপতি, মৌমাছি এদের অন্যতম।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের অনেক সরকারি-আধা সরকারি বা ব্যক্তিমালিকানাধীন অফিস কিংবা দালানের পাশে এমনিতে পড়ে রয়েছে কিছু জায়গা। সেই জায়গাগুলোতে নিজদের উদ্যোগে ফুলের চাষ করা হলো বড়ই উপকার হবে প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্যের।
শৌখিন প্রকৃতিপ্রেমীরা বাড়ির আঙিনা, বারান্দা বা ছাদের ফুলের বাগান করে থাকেন। এতে করে তারা প্রকৃতির প্রতি গভীর এক মমত্ববোধের জন্ম দেন। যা আমাদের বিপন্ন পরিবেশের জন্য অত্যাবশ্যকীয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১৫