ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

ভাঙছে কীর্তনখোলা, আতঙ্কে নির্ঘুম গ্রামবাসী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৮ ঘণ্টা, জুলাই ৬, ২০১৫
ভাঙছে কীর্তনখোলা, আতঙ্কে নির্ঘুম গ্রামবাসী ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বরিশাল: বরিশালে কীর্তনখোলা নদীর ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না ফসলি জমি, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়ি।



দিন দিন ভাঙন বাড়তে থাকায় আতঙ্কে রয়েছেন নদী তীরবর্তী আশপাশের গ্রামের সাধারণ মানুষ। নদীতে বিলীন হওয়ার আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে তাদের।

এদিকে, সোমবার (০৬ জুলাই) সকালে ভাঙনরোধে ঘটা করে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হলেও আর কোনো সরকারি উদ্যোগে নেই বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্তদের।

ফলে বাধ্য হয়ে  স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্যোগে নদীর চরকাউয়া ইউনিয়নের খেয়াঘাট এলাকায় প্রতিরোধ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

অন্যদিকে, ২ সপ্তাহ পার হলেও চরবাড়িয়া ইউনিয়নের তালতলী থেকে লামচরি পর্যন্ত সড়কের ভাঙন প্রতিরোধে এখনও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এতে মূল ইউনিয়ন থেকে যেকোনো সময় বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে বেশ কয়েকটি গ্রাম।

স্থানীয় সূত্র জানায়, কীর্তনখোলা সংলগ্ন মধ্য লামচড়ির সর্দার বাড়ির সামনের সড়ক নদীতে বিলীন হওয়ার পর এখন একর পর এক বসতি জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এরইমধ্যে লামছচড়ি ও চরবাড়িয়া এলাকার বিভিন্ন গ্রামের ঘরবাড়ি  নদীতে বিলীন হয়ে যেতে শুরু করেছে।

সোমবার দুপুরে সরেজমিন লামছরির ভাঙনকবলিত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, অনেকেই নিজের জমিতে থাকা ছোট-বড় গাছ কেটে বিক্রি করে ফেলছেন। এছাড়া অন্যরা নিজেদের বসতঘর খুলে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন।

সরকারি সহায়তা না পেয়ে নিজস্ব উদ্যোগেই লামচড়ি এলাকায় নদীগর্ভে বিলীন সড়কটি মেরামতের লক্ষ্যে পাইলিং বসানোর কাজ শুরু করেছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় বাসিন্দা জালাল হোসেন জানান, বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য জেবুন্নেছা আফরোজ কয়েকদিন আগে এ এলাকা পরিদর্শনে এসে স্থানীয় ইট ব্যবসায়ীদের রাস্তাটি ঠিক করে দিতে বলেন। পরে তারাই স্থাণীয়দের সহায়তায় সোমবার সকাল থেকে পাইলিংয়ের কাজ শুরু করেছেন।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী জহির উদ্দিন আহম্মেদ জানান, কীর্তনখোলা নদীর ভাঙন থেকে বেলতলা এলাকার ২৩শ মিটার এবং চরবাড়িয়া ইউনিয়নে বিভিন্ন স্থানের ২৩শ মিটার এলাকা রক্ষার জন্য ২৩ কোটি টাকা করে মোট ৪৬ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদনের জন্য গত বছর মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সেখান থেকে চরবাড়িয়া প্রজেক্টে ৩ কোটি টাকার একটি বরাদ্দ পেয়েছেন তারা। যা দিয়ে চরবাড়িয়া এলাকায় নদী ভাঙনকবলিত এলাকায় ৯৪ মিটার কাজ করা হবে। ওই কাজের দরপত্রের প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। কাজ যেকোনো সময় শুরু হতে পারে।

তিনি জানান, ভাঙনরোধে জরুরিভাবে বেলতলা এলাকার জন্য ২৪ লাখ এবং লামচরির এলাকার জন্য ২৩ লাখ টাকা বরাদ্দ চেয়ে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু একটিও পাশ হয়নি। তবে ৩০ লাখ টাকার জিও ব্যাগ ফেলার অনুমতি পেয়েছেন তারা। কিন্তু বরাদ্দ না থাকায় স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণ সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি আরো বলেন, ভাঙনরোধে চরকাউয়া বাজার সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদীর ক্ষতিগ্রস্ত ৯০ মিটারসহ মোট ১১০ মিটার জায়গা জুড়ে প্রাথমিকভাবে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার পরিকল্পনা তাদের।

সোমবার সকালে বরিশালের জেলা প্রশাসক ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামান জিও ব্যাগ ফেলার কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পাউবোর বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী জহির উদ্দিন আহম্মেদ, বরিশাল সদর উপজেলার চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রিন্টু, চরকাউয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম ছবি প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৬, ২০১৫
এসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।