জানুয়ারির শুরুতেই উত্তরাঞ্চলে শৈত্য প্রবাহ শুরু হয়। এ মাসেই তিনটি শৈত্য প্রবাহের পূর্বাভাস আগেই দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
বর্তমানে পাবনা, চুয়াডাঙ্গা, নওগাঁ, দিনাজপুর, ও সৈয়দপুর অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে মৃদু শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং অব্যাহত রয়েছে। এই শৈত্য প্রবাহ পরিস্থিতি ঢাকা, ময়মনসিংহ, রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অন্যান্য স্থানেও বিস্তার লাভ করতে পারে কয়েকদিনের মধ্যে।
আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, আগামী পাঁচ দিনের শেষ দিকে তাপমাত্রা আরও হ্রাস পাবে। এ সময় রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলিসিয়াস কমে যাবে।
চলছে পৌষের শেষার্ধ। মাঘ মাস আসতে আরও ১০দিন বাকি। কিন্তু এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে কনকনে ঠাণ্ডা বাতাস। মূলত উত্তর থেকে আসা বাতাসে দেশের নিন্মাঞ্চল শীতে কাঁপছে। ঢাকার দিকেও ধেয়ে আসছে শীত।
বুধবার (৩ জানুয়ারি) দিনগত রাতে ঢাকা শহরে ঘুরে দেখা গেছে, কনকনে ঠাণ্ডা বাতাসে বাইরে টিকে থাকাই দায়। ছিন্নমূল মানুষ, রাতের রাজধানীতে বিভিন্ন কাজে দায়িত্বরতা খুব প্রতিকূল পরিবেশের সঙ্গে রীতিমত যুদ্ধ করছেন। অনেকেই দেখা গেছে, আগুন জ্বালিয়ে শরীর গরম করে নিতে। অনেকেই আবার গায়ে কম্বল চাপিয়েও বাইরে রয়েছেন।
রাতের নাইট গার্ডের কাজ করেন রহিম মিয়া। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ঠাণ্ডা গত কয়েকদিনে অনেক বেড়েছে। গ্রামের মতো ঠাণ্ডা বাতাসে যেনো শরীর কেটে যায়।
আবহাওয়া অধিদফতরের এক পূর্বাভাসে জানিয়েছে, উপ-মহাদেশীয় উচ্চ চাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। ফলে অস্থায়ীভাবে আকাশ মেঘলা থাকতে পারে।
আবহাওয়ার এমন অবস্থায় বুধবার দেশের সর্বনিন্ম তাপামাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায়। সেখানে ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ঈশ্বরদী ও বদলগাছীতে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি, দিনাজপুরে ১০ ডিগ্রি, সৈয়দপুরে ৯ দশমিক ৭ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এদিকে চট্টগ্রাম ও সিলেটে বৃষ্টিপাতও হয়েছে। এক্ষেত্রে চট্টগ্রামে ১২ মিলিমিটার এবং সিলেটে ৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতরে উপ-পরিচালক কাওসার পারভীন জানিয়েছেন, আগামী রোববার পর্যন্ত দেশের আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। এ সময় মাঝারি ধরণের শৈত্য প্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
জানুয়ারিতে ঘন কুয়াশার তীব্রতা বেড়ে দুপুর পর্যন্ত স্থায়ী হওয়ার আশঙ্কাও করছে সংস্থাটি। এক মাসের দীর্ঘমেয়াদী পূর্বভাসে বলা হয়েছে, এ মাসে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে এবং নদ-নদী অববাহিকায় মাঝারি বা ঘন কুয়াশা এবং অন্যত্র হালাকা বা মাঝারি ধরণের কুয়াশা পড়তে পারে। ঘন কুয়াশা পরিস্থিতি কখনও কখনও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
জানুয়ারিতে দেশের সার্বিক বৃষ্টিপাত স্বাভাবিক থাকবে। দৈনিক গড় বাষ্পীভবন হবে ২ দশমিক ২৫ থেকে ৩ দশমিক ২৫ মিলিমিটার। আর সূর্যকিরণের কার্যকাল বেড়ে হবে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা।
আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক ও বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, জানুয়ারিতে দেশের উত্তরাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে ১ টি মাঝারি (৬ ডিগ্রি-৮ ডিগ্রি সে:), তীব্র (৪ ডিগ্রি-৬ ডিগ্রি সে:) ধরণের শৈত্য প্রবাহ, অন্যত্র ২ থেকে ৩টি মৃদু (৮ ডিগ্রি ১০ ডিগ্রি সে:) বা মাঝারি ধরণের শৈত্য প্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০১৮
ইইউডি/আরআইএস/