এদিকে আবার অন্য পাখিদের মতো পা নেই তাদের। রয়েছে কেবল পায়ের নখ।
সারাক্ষণ বাতাসে ভেসে থাকা পাখিটির নাম এশীয়-তালবাতাসি। ইংরেজিতে বলে Asian Palm Swift এবং এর বৈজ্ঞানিক নাম Cyphiurus Balasiensis। গ্রামাঞ্চলে তালগাছ সংলগ্ন এলাকায় পাখিগুলোকে দলগতভাবে আকাশে সারাক্ষণ উড়ে বেড়াতে দেখা যায়। আকাশে এরা দলবদ্ধভাবে নানা রকম খেলায় মেতে থাকে। তীক্ষ্ম কণ্ঠে ‘হি-হি-হি, হি-হি-হি’ স্বরে বারবার ডেকে ডেকে ওঠে।
প্রখ্যাত পাখি বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ইনাম আল হক বাংলানিউজকে বলেন, বাতাসে উড়ে উড়ে তালবাতাসি পাখিদের যৌন মিলনের কথা শোনা যায়। যৌনজীবন নিয়ে বিতর্ক রয়েছে ‘বাতাসি’ প্রজাতির পাখিদের, ওরা যেহেতু বসতে পারে না।
তিনি আরো বলেন, তবে রাতে ওরা তালগাছে ঝুলে থাকে। তালগাছের মাঝে থাকে বলে এদের নাম তালবাতাসি হয়েছে। ওদের নখ রয়েছে। ওই নখ দিয়েই তালগাছের পাতায় তারা ঝুলে থাকতে পারে। বিজ্ঞানীরা এ জন্যই অনুমান করেছেন যে, ওরা বাতাসে সঙ্গীর সঙ্গে যৌন মিলন করে। যদিও আজ পর্যন্ত তাদের বাতাসে যৌনমিলনের কোনো ছবি পাওয়া যায়নি।
পাখিদের সঙ্গম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তালবাতাসিদের বাতাসের মাঝে সঙ্গমের বিষয়টিকে অসম্ভব মনে হয়। কারণ পাখির তো ঠিক ওই রকম যৌনাঙ্গ নেই। যেখান দিয়ে ওদের মলমূত্র বের হয় ওটাকে ‘গ্লোয়ারকা’ বলে। যেখান দিয়েই পুরুষ পাখিটিকে বীর্য ছুড়ে মারতে হয়। তো ওইভাবে ছুড়ে মরার বিষয়টি পাখির জন্য বসেই কষ্ট হয়। এজন্য বহু পাখি বহুবার চেষ্টা করেও এতে সফল হতে পারে না। তালবাতাসিরা বাতাসে কি করে যৌনমিলন করবে তা কেউ জানে না এখনো। এটা এখনো অনুমানের বিষয়। কারণ একটি পাখির গায়ের উপর তো অপর পাখিটি বাসতেই পারছে না। মন্তব্য করেন ইনাম আল হক।
পাখিটির আকৃতি ও শারীরিক গঠন সম্পর্কে তিনি বলেন, এরা আকারে আমাদের চড়ুইয়ের চেয়ে ছোট। মাত্র ১৩ সেন্টিমিটার। নিচ থেকে দেখলে দেহকে বাদামি দেখায়। সরু ও ধনুকের মতো বাঁকানো বেশ লম্বা ডানা। আকাশের উড়ন্ত পতঙ্গ খায়।
বাংলাদেশ সময়: ০৬০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৮
বিবিবি/এএ