প্রতি বছরের মতো এবারো দেশের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চল থেকে বহু শ্রমিকের আগমন ঘটেছে মানিকগঞ্জের নবীন সিনেমা হলের সামনের অবস্থিত শ্রমিকের হাটে।
তাদের মধ্যে কয়েকজন শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃষ্টির কারণে শ্রমিকের বাজারে মন্দা দেখা দিয়েছে।
নাটোরের লালপুর উপজেলার রাহাত উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, প্রায় ৭/৮ বছর ধরে তিনি মানিকগঞ্জে বিভিন্ন মৌসুমে কৃষি কাজের জন্য আসেন। একই এলাকা থেকে তার সঙ্গে আরও ৮/১০ জন করে লোক আসেন। এখানে শ্রমের চাহিদা থাকায় প্রতি মৌসুমে প্রায় এক থেকে দেড় মাস করে কাজ করেন তারা। আয়ও হয় বেশ ভালো। তবে বৃষ্টির কারণে এখন শ্রমিকের তেমন চাহিদা নেই বলে জানান তিনি।
একই এলাকার ফিরোজ মিয়া বাংলানিউজকে জানান, দুই সপ্তাহ আগে মানিকগঞ্জে কৃষি কাজ করতে এসেছেন তিনি। এরমধ্যে তিনদিন তাকে সময় অলসভাবে কাটাতে হয়েছে। এতে করে বেশ বিপাকে রয়েছেন তিনি। এছাড়া পহেলা বৈশাখের আগে শ্রমিকের বাজার ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত গেলেও এখন যাচ্ছে সাড়ে তিনশো থেকে চারশো টাকা পর্যন্ত।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার কাজিমুল হক বাংলানিউজকে জানান, দৈনিক কাজে যেতে পারলে কম বেশি আয় হয়। খাবারের টাকা ও থাকার চিন্তা করা লাগে না। কিন্তু কাজে যেতে না পারলে বাসস্ট্যান্ডের টার্মিনালে ঝড় বৃষ্টির মধ্যে ঘুমাতে হয়। এরমধ্যে আবার তিন বেলার খাবার কিনে খাওয়া লাগে। বর্তমানে বৃষ্টির কারণে মানুষ এখন কাজে নিতে চায় না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নওগাঁ সরকারি ডিগ্রি কলেজের বিবিএস তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্র বাংলানিউজকে বলেন, ৪/৫ বছর ধরে মানিকগঞ্জে দুই মৌসুমে প্রায় তিন মাস করে কাজ করি। ওই আয়ের টাকা দিয়েই পড়াশুনার খরচ চালাতে হয়। পরিবারেও কিছুটা যোগান দিতে হয় ওই টাকা থেকেই। প্রায় ১৫ দিন ধরে কাজে এসেছি। এর মধ্যে চারদিন কোনো কাজ পায়নি। কাজে এসে কাজ না পেলে বসে বসে খাওয়াটা বেশ কষ্ট।
জেলার ঘিওর এলাকার সব্জি চাষী মিন্টু মিয়া বাংলানিউজকে জানান, তিন বেলা খাবার দিয়ে ৪০০ টাকা করে জনপ্রতি দিতে হয়। বৃষ্টি হলে কাজ করা বন্ধ থাকে। কিন্তু খাবার এবং দৈনিক মুজরি দিতে হয় ঠিকই। যে কারণে চারজন শ্রমিকের দরকার হলেও তিনি দুই জন শ্রমিক নিয়েই বাড়ি যাচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৫০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৮
কেএসএইচ/এনটি