চলতি বর্ষা মৌসুমে নদ-নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যার আতঙ্ক বিরাজ করছে কুড়িগ্রামের নয়টি উপজেলার চার শতাধিক চর ও দ্বীপচরের প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক মানুষের মধ্যে।
কুড়িগ্রাম জেলার উপর দিয়ে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ছোট-বড় নদ-নদী প্রবাহিত হওয়ায় প্রতিবছর দেশের অন্যান্য স্থানের চেয়ে বন্যার ভয়াবহতা অনেকাংশে বেশি হওয়ায় আগাম আতঙ্কাবস্থা বিরাজ করছে চরাঞ্চলগুলোতে।
নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করায় ইতোমধ্যে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় আগাম প্রস্তুতিমূলক সভা করেছে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন। বন্যার সময় ঘর-বাড়ি তলিয়ে থাকা বন্যা কবলিত মানুষদের আশ্রয়, খাদ্য, চিকিৎসাসহ তাদের জন্য করণীয় বিষয়ে পরিকল্পনা তৈরি করতেই জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীনের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জেলার আইরমারী চর ও দইখাওয়ার চরের বাসিন্দা জানু সেখ, আব্দুস ছালাম, শমসের আলী, শুক্কুর আলী বাংলানিউজকে বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়তে থাকায় এ দুই চরের প্রায় ছয় শতাধিক পরিবারের আতঙ্কে দিন কাটছে। ভারতের বন্যার বেশিরভাগ পানি ব্রহ্মপুত্র নদ দিয়ে প্রবল বেগে নেমে আসায় এ অববাহিকায় প্রতিবছর বড় আকারের বন্যা দেখা দেয়। চরের সব মানুষকে ঘর-বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে হয়। উজানের ঢলের পানির প্রবল স্রোতে ঘর-বাড়িগুলো ভেসে যায়। বাড়ে অবর্ননীয় কষ্ট। এবারও নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করায় যেকোনো মুহূর্তে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ঘর-বাড়িতে ঢুকতে পারে। তাই বড় দুঃচিন্তায় আছি।
কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. এস এম আমিনুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বন্যার সময় বন্যাকবলিতদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে গত বছর ৩৬টি মেডিকেল টিম কাজ করেছিল। এ বছর বন্যা শুরু হলে মেডিকেল টিমের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। যাতে বন্যাকবলিত মানুষের চিকিৎসা সেবায় কোনো সমস্যা না হয়। পাশাপাশি বন্যা এলাকায় যাতে সাপের কামড় ও পানিতে ডুবে কোনো শিশু বা বৃদ্ধের মৃত্যু না হয় সেজন্য মেডিকেল টিম সর্তক থাকবে।
জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীন বাংলানিউজকে বলেন, অন্যান্য বছরের মতো জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তা মোকাবেলায় আগাম প্রস্তুতিমূলক সভা করা হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সব বিভাগ ও শ্রেণী-পেশার মানুষকে নিয়ে দুর্যোগ মোকাবেলায় কমিটি করা হয়েছে। উপজেলা এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়েও কমিটি কাজ করবে। যাতে বন্যার সময় মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে এনে তাদের খাদ্য, চিকিৎসা, স্যানিটেশন নিশ্চিত করা যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৮ ঘণ্টা, জুলাই ০৩, ২০১৮
আরবি/