ইতিহাসে ঘটে যাওয়া এমন ভয়াবহ পাঁচটি সুনামি নিয়ে বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য কিছু আলোচনা-পর্যালোচনা তুলে ধরা হলো:
আচেহ প্রদেশে ‘মেগাথ্রাস্ট’ ভূমিকম্প: ২০০৪ সালের ডিসেম্বরের ২৬ তারিখ। এদিন ইন্দোনেশিয়ার উত্তরাঞ্চলের দ্বীপ সুমাত্রার আচেহতে আঘাত হানে ৯ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প মেগাথ্রাস্ট।
সুনামিটি ভারত মহাসাগরের অনেক দেশেই আঘাত হানে। কেবল ইন্দোনেশিয়াতেই ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়। নিহতের সংখ্যা সবথেকে বেশি ছিল আচেহ প্রদেশে।
এ সুনামিতে বিভিন্ন দেশের আরও ৫০ হাজার মানুষের প্রাণহানি হয়। সবমিলিয়ে আনুমানিক মৃতের সংখ্যা দুই লাখ ছাড়িয়ে যায়। এটাকে ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্যোগগুলোর একটি হিসেবে ধরা হয়।
জাপানের সুনামি: ২০১১ সালের মার্চের ১১ তারিখে ভয়াবহ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে জাপানে। ৯ মাত্রার ভয়াবহ এ ভূমিকম্প থেকে সৃষ্টি হয় সুনামির।
জাপানের এ সুনামিতে ১৯ হাজারের মতো মানুষ প্রাণ হারান। অনেকেই থাকেন নিখোঁজ। বলা হয়, সুনামিটির ভয়াবহ উচ্চতার পানির গতি ছিল একটি জেট প্লেনের গতির সমান।
এ সুনামিতেই ফুকুশিমা দাইচি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রও প্লাবিত হয়। ১৯৮৬ সালের চেরনোবিল পারমাণবিক দুর্ঘটনার পর এটিই সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা।
চিলির ভূমিকম্প ১৯৬০: ১৯৬০ সালের মে মাসে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ চিলিতে আঘাত হানে ভয়াবহ ভূমিকম্প। ভূমিকম্পটির মাত্রার ছিল ৯ দশমিক ৫। এখন পর্যন্ত এটিকেই বিশ্বের ভয়াবহ ভূমিকম্প বলা হয়। এর থেকে সৃষ্টি হয় সুনামির।
উপকূলে সুনামির আঘাতে চিলিতে প্রাণ হারান পাঁচ হাজার সাতশ’র বেশি মানুষ। হাওয়াইয়ে প্রাণ হারান ৬১ জন। দুর্যোগটি জাপান পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।
বলা হয়, চিলির এ সুনামিটির উচ্চতা ছিল ১৬ ফুট।
মরো উপসাগর: ১৯৭৬ সালের ১১ আগস্ট মধ্যরাত। ফিলিপাইনের মিনদানাও ও সুলু দ্বীপে আঘাত হানে ৭ দশমিক ৯ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প। এরপর সৃষ্টি হয় সুনামির। এর উচ্চতা ছিল পাঁচ মিটার।
এ সুনামিতে প্রাণ হারান পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ। ফিলিপাইনের ইতিহাসে ভয়াবহ দুর্যোগগুলোর মধ্যে এটি একটি।
পাপুয়া নিউগিনি: ১৯৯৮ সালের জুলাইয়ের ১৭ তারিখ। এদিন পাপুয়া নিউগিনিতে পরপর দুটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। দুটির মাত্রাই ছিল ৭। এরপর সৃষ্টি হয় সুনামির। এ সুনামিটি উত্তরাঞ্চলের উপকূলের ৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। ভেসে যায় সাতটি গ্রাম।
সরকারি তথ্যানুযায়ী, এ সুনামির ফলে দুই হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারান। তবে স্থানীয়দের মতে, এতে প্রাণ হারিয়েছেন ছয় হাজারের বেশি মানুষ। এছাড়াও ঘরহারা হন ১২ হাজারের বেশি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৮
এএইচ/এনএইচটি