রাস্তাঘাট ডুবেছে। বাড়িঘরে উঠেছে পানি।
সিলেটে গত রাতেও থেমে থেমে ভারী বর্ষণ হয়েছে। এছাড়া উজানে ভারতের মেঘালয়ে সিলেটের দ্বিগুণ বৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে বরাক মোহনা থেকে আলাদা হয়ে আসা সিলেটের ওপর দিয়ে বহমান সুরমা-কুশিয়ারার পানি দ্রুত বেড়েছে। সিলেটের সীমান্তবর্তী অঞ্চল গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ, সিলেট সদর এলাকার নিম্নাঞ্চল উজানের ঢলে প্লাবিত হয়েছে।
ভাটি অঞ্চলখ্যাত সুনামগঞ্জ শহর ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলার মানুষকে বানবাসি করেছে আষাঢ়ের বৃষ্টি। অতিবৃষ্টিতে নগরের সড়কগুলোতেও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে যানবাহন চলাচল সাময়িকভাবে ব্যাহত হয়।
এ বিষয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেটের আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, গত রাতে সিলেটে প্রায় ৫১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এছাড়া গত তিন-চার দিনে সিলেটের কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জে প্রায় সাড়ে ৪শ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সে তুলনায় উজানে বৃষ্টিপাত হয়েছে দ্বিগুণ। এ কারণে নদ-নদীর পানি বেড়েছে। কোনো স্থানে বিপৎসীমার উপরে পানি বহমান। তবে আগামীকাল থেকে বৃষ্টি কমবে।
তিনি বলেন, এ মাসে গত ৩০ বছরে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড ৮১৮ দশমিক ৬ মিলিমিটার। কিন্তু এবছর এখন পর্যন্ত ৬শ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামীকাল থেকে আবার বৃষ্টিপাত কমে যাবে। যদি সিলেটের বাইরে প্রবল বৃষ্টি হয়, তাহলে নদ-নদীর পানি বাড়বে। এছাড়া সিলেটে একশ/দেড়শ মিলিমিটার বৃষ্টি হলেও চট্টগ্রামের মতো ভূমিধসের আশঙ্কা থাকে না এ অঞ্চলের মাটির গুণাগুণ ভালো থাকায়। শনিবার ২৪ ঘণ্টায় ১০৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হলেও কোথাও ভূমিধসের খবর মেলেনি।
এদিকে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যমতে, অতিবৃষ্টিতে সিলেটের সুরমা-কুশিয়ারা পানি বাড়লেও কেবল সুরমা নদীর দু’টি পয়েন্ট বাদে অন্যসব পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহমান।
পাউবো’র রোববার (২৮ জুন) দুপুর ১২টার তথ্য অনুযায়ী, সিলেটের দু’টি নদী সুরমা-কুশিয়ারার ৮টি পয়েন্টের মধ্যে ৪টি পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কানাইঘাটে সুরমা নদীর পানি দশমিক ৬৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এখানে পানির ডেঞ্জার লেভেল ১২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার, আর বর্তমানে প্রবাহমান ১৩ দশমিক ৪২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে।
সিলেটে সুরমার পানির বিপৎসীমা ১০ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার। এখানে ১০ দশমিক ৮১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহমান রয়েছে। জকিগঞ্জের অমলসীদ কুশিয়ারা নদীর পানির বিপৎসীমা ১৫ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার। এই স্থানে ১৪ দশমিক ৯৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহমান। বিয়ানীবাজারের শেওলা পয়েন্টে কুশিয়ারা পানির বিপৎসীমা ১৩ দশমিক ০৫ সেন্টিমিটার। এখানে প্রবাহমান রয়েছে ১২ দশমিক ৩৩ সেন্টিমিটারে।
শেরপুর কুশিয়ারা পানির বিপৎসীমা ৪ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার হলেও প্রবাহমান ৭ দশমিক ৭৩ সেন্টিমিটারে। ফেঞ্চুগঞ্জ কুশিয়ারার পানির একই বিপৎসীমা থাকলেও ৯ দশমিক ৩২ অর্থাৎ দশমিক ৭৭ উপর দিয়ে প্রবাহমান। এছাড়া কানাইঘাটের পাহাড়ি নদী লোভাছড়ার পানি ১৪ দশমিক ৭৮ সেন্টিমিটার এবং জৈন্তাপুর সারি নদীর পানির বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার হলেও ১২ দশমিক ২৭ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০২০
এনইউ/এএ