ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

যমুনার পানি বাড়ছেই, আতঙ্কে দিন কাটছে বানভাসিদের

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৪ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০২০
যমুনার পানি বাড়ছেই, আতঙ্কে দিন কাটছে বানভাসিদের

বগুড়া: বগুড়ায় আতঙ্কে দিন কাটছে বানভাসিদের। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও গেল কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে জেলার সারিয়াকান্দি পয়েন্টে যমুনা নদীতে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে ৬২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হওয়ায় অসহায় মানুষগুলো আশ্রয় নিতে শুরু করেছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে।

বগুড়া জেলার তিনটি উপজেলা (সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট) যমুনা নদী বেষ্টিত। এরমধ্যে সারিয়াকান্দির প্রায় সাতটি, সোনাতলার তিনটি ও ধুনটের একটি ইউনিয়ন পুরোপুরি যমুনায় ঘেরা।

সোমবার (২৯ জুন) সারিয়াকান্দি উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, চরাঞ্চলের চালুয়াবাড়ী, কর্নিবাড়ী, কুতুবপুর, চন্দনবাইশা, কাজলা, কামালপুর, রহদহ ও সারিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলগুলো এবং পাট, ধানসহ ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।

সারিয়াকান্দি উপজেলার পূর্বপাশে যমুনা আর পশ্চিমে বসতভিটা। মাঝখানে কয়েক ফুট চওড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। সেই বাঁধ থেকে কয়েক ফুট নিচে অবস্থান করছে উত্তাল যমুনার পানি। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে বাঁধের পূর্ব দিকে বসবাসকারীদের বসতবাড়ি এখন যমুনার পেটে।

...

উপজেলার রহদহ এলাকার বাসিন্দা আব্দুর সামাদ, আইনুল শেখ, গোলজার, মিরু মিয়া, জয়নাল উদ্দিন। কারও বয়স ষাটের বেশি, কারও কাছাকাছি। তারা আশ্রয় নিয়েছেন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে। কেননা তাদের বসতভিটা এখন ডুবে গেছে।
আব্দুস সামাদসহ কয়েকজন প্রবীণ ব্যক্তি বাংলানিউজকে জানান, যমুনা নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। বংশ পরম্পরায় যমুনার আচারণ দেখে আসছেন তারা। উজান থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি নেমে আসছে। এর সঙ্গে মাঝে মাঝে মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হচ্ছে। এতে চরাঞ্চলের গ্রামের পর গ্রাম তলিয়েছে। গরম বাড়লে নাকি পানির স্তর বাড়ে এমন মন্তব্যও করেন তারা।

তারা জানান, যমুনার পানি বাঁধের কিছুটা নিচে অবস্থান করছে। কোথাও কোথাও পানি এখনো ঘূর্ণন আকারে বাঁধে আঘাত হানছে। বাঁধের এসব স্থান সার্বক্ষণিক নজরদারির মধ্যে রাখতে স্থানীয়দের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা খোঁজখবর রাখছেন।

এদিকে, সোমবার দুপুরে উপজেলার কালিতলা গ্রয়েন বাঁধের উত্তর দিকের স্পারে বালুভর্তি বস্তাদিয়ে আরও মজবুতকরণ কাজ করতে দেখা যায় শ্রমিকদের। অন্যদিকে বাঁধের বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নেওয়া বানভাসি লোকজনও বস্তায় বালু ভরে বাঁধ রক্ষায় কাজে ব্যস্ত রয়েছে। অনেকে পাউবো’র শ্রমিকদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করছেন।

বগুড়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, যমুনা নদীতে বিপৎসীমা নির্ধারণ করা হয় ১৬ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার। সোমবার (২৯ জুন) দুপুর ৩টার হিসাব অনুযায়ী নদীর পানি ১৭.৩২ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অর্থাৎ বিপৎসীমার ৬২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে এবং পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৪ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০২০
এইচএডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।