ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

কক্সবাজারে অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২২ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০২১
কক্সবাজারে অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত

কক্সবাজার: ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব ও ভরা পূর্ণিমার জোয়ারে কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকার অন্তত ৫০টি গ্রাম জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে।

বিশেষ করে ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ডুকে পড়ায় জেলার কুতুবদীয়া, মহেশখালী, পেকুয়া, টেকনাফসহ উপকূলীয় এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেশি।

এছাড়াও কক্সবাজার শহরের কুতুবদীয়াপাড়া, সমিতিপাড়া, নাজিরারটেক, ফদনারডেইলসহ ১৭টি গ্রামের প্রায় ২ হাজার ঘরবাড়ি জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে।

বুধবার (২৬ মে) কক্সবাজার পৌরসভার কাউন্সিলর শাহানা আক্তার পাখি জানান, জলোচ্ছ্বাসে পানিতে তলিয়ে গেছে পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কুতুবদিয়াপাড়া, সমিতিপাড়া, বন্দরপাড়া, নাজিরারটেক, ফদনারডেইল, বাগানপাড়া, মোস্তাকপাড়া, বাসিন্যাপাড়া, উত্তর কুতুবদিয়াপাড়া, পশ্চিম কুতুবদিয়াপাড়াসহ সমুদ্র উপকূলীয় ১৫টি গ্রাম। এসব গ্রামের প্রায় দুই হাজার ঘরবাড়ি জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জোয়ারের পানিতে মহেশখালীর মাতারবাড়ি ইউনিয়নের ৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের বিভিন্ন অংশ ভেঙে গেছে। লোকালয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ায় প্রায় ৪০টি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের তরফ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। রাতে জোয়ারে পানির উচ্চতা আরও বৃদ্ধি পেলে ক্ষয়ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

 

কুতুবদীয়ার স্থানীয় সাংবাদিক লিটন কুতুবী বাংলানিউজকে জানান, ঘূর্ণিঝড় ও পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে কুতুবদিয়ার উত্তর ধুরুং, আলী আকবরডেইল ও কৈয়ারবিল ইউনিয়নে জলোচ্ছ্বাসে ২০টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন হাজারো মানুষ। একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের বেশকিছু ঘরবাড়ি ও বেড়িবাঁধ।

পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আকতার কামাল জানান, তার ওয়ার্ডে ১৫টি গ্রামের অন্তত ৮ হাজার ঘরবাড়িতে পানি ওঠেছে। এতে ১৩০টির বেশি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেকেই  নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন। শহর থেকে নাজিরারটেক যাতায়াতের তিন কিলোমিটারের পাকা সড়কটিও পানিতে ডুবে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে।

পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বঙ্গোপসাগর এমনিতে উত্তাল, তার ওপর যোগ হয়েছে ভরা পূর্ণিমার প্রভাব। সব মিলিয়ে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ছয়-সাত ফুট উচ্চতায় বেড়ে উপকূলে আঘাত হানছে। এখন পৌরসভার এই ১ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তত ২ হাজার ৩০০ ঘরবাড়ি কোমর সমান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। শুঁটকি উৎপাদনের অন্তত ২০০টি মহাল পানির নিচে ডুবে আছে। অনেক টাকার শুঁটকি নষ্ট হচ্ছে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বাংলানিউজকে জানান, জেলায় কি পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। মহেশখালী ও কুতুবদীয়ায় জোয়ারের পানি ঢুকে পড়েছে অনেক গ্রামে। সেখানে শুকনো খাবার বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মানুষ যেন কষ্ট না পান আপাতত সেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৪ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০২১
এসবি/এমআরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।