ঢাকা: দেশের সীমান্তবর্তী ভারতীয় রাজ্যগুলোতে বৃষ্টিপাত বেড়ে যাওয়ায় দেশের সবচেয়ে বন্যাপ্রবণ নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এক্ষেত্রে ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও মেঘনার অববাহিকার নদ-নদীর পানি বেড়ে জামালপুর, কুড়িগ্রাম এবং সিলেট অঞ্চলে সৃষ্টি হতে পারে বন্যা পরিস্থিতি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্য পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এমন তথ্যই জানিয়েছে।
১০ দিনের এক পূর্বাভাসে কেন্দ্রটি বলছে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি সমতল ২৯ জুন পর্যন্ত স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং তারপর বাড়তে পারে। আগামী ৫ জুলাই নাগাদ বাহাদুরাবাদ স্টেশনে পানি সমতল বিপৎসীমা অতিক্রমের ৫০ শতাংশের অধিক সম্ভাবনা রয়েছে।
বাহাদুরাবাদ পয়েন্ট হচ্ছে বন্যার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই পয়েন্টের পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করলে বন্যা অবাধারিত। এ পর্যন্ত যতো বড় বড় বন্যা দেশে হয়েছে তার একটি বড় কারণ এই পয়েন্টের পানি বৃদ্ধি। আসাম থেকে নেমে আসা ব্রহ্মপুত্র এখানে এসে মিশেছে যমুনার সঙ্গে। তাই এই নদীর পানি বাড়লে যমুনা, পদ্মা নদীর পানিও বাড়ে। ফলো কুড়িগ্রাম থেকে শুরু করে মুন্সিগঞ্জ পর্যন্ত পুরো অববাহিকা ভেসে যায়। এর সঙ্গে তিস্তা, ধরলার পানি যোগ হলে বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়।
এদিকে গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতল ২৮ জুন পর্যন্ত স্থিতিশীল থেকে তারপর ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেতে পারে। আগামী ১০ দিনে আপাতত গঙ্গা নদীর অববাহিকায় বিপৎসীমা অতিক্রমের সম্ভাবনা নেই।
ঢাকার চারপাশের নদীসমূহের পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে। ঢাকার চারপাশের নদীসমূহের অববাহিকায় বিপৎসীমা অতিক্রমের সম্ভাবনা নেই।
অন্য এক পূর্বাভাসে পাউবো জানিয়েছে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে যা সোমবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। গঙ্গা নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে যা একই সময় পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। অপরদিকে পদ্মা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে যা আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
অন্যদিকে কুশিয়ারা ব্যতীত দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদ-নদীসমূহের পানি সমতল স্থিতিশীল আছে।
যা সোমবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া জানান, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ও ভারত আবহাওয়া অধিদপ্তরের গাণিতিক মডেলের তথ্য অনুযায়ী, আগামী মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার নাগাদ দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম, আসাম ও মেঘালয় প্রদেশের স্থানসমূহে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস আছে। এর ফলে এই সময়ে দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদীসমূহের পানি সমতল সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।
পাউবোর পর্যবেক্ষণাধীন বিভিন্ন নদ-নদীর ১০১টি পয়েন্টের মধ্যে রোববার (২৭ জুন) ৫০ টিতে পানির সমতল বৃদ্ধি পেয়েছে। কমেছে ৪৫টি পয়েন্টে পানির সমতল। অপরিবর্তিত আছে ৫টি পয়েন্টের পানি, একটিতে তথ্য সংগ্রহ শুরু হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৩ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০২১
ইইউডি/এনটি