ঢাকা: সাধারণত জুলাই মাসে দেশে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়। তবে চলতি বছরে বিগত ৪১ বছরের মধ্যে জুলাই মাসে সর্বনিম্ন বৃষ্টিপাত হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক বাংলানিউজকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আমাদের কাছে ১৯৮১ সাল থেকে বৃষ্টিপাতের ধারাবাহিক প্রতিবেদন আছে। তার আগের ধারাবাহিকভাবে নেই। এক্ষেত্রে জুলাই মাসে ১৯৮১ সালের পর আর এতো কম বৃষ্টিপাত হয়নি।
বৃষ্টিপাত কম হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের (পেরুর কাছের অংশটিতে) তাপমাত্রার ওপর পুরো পৃথিবীর বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নির্ভর করে। সেখানে তাপমাত্রা বেশি থাকলে আমরা তাকে এল নিনো বলি। আর তাপমাত্রা কম থাকলে বলা হয় লা নিনা।
দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের ওই অংশ এবার লা নিনা ছিল, অর্থাৎ তাপমাত্রা কম থাকার কারণে পুরো পৃথিবীতেই জলীয় বাষ্প কম ছিল। আমাদের এখানেও কম ছিল। জলীয় বাষ্প সাগর থেকে কম আসলে মেঘমালা কম সৃষ্টি হয়। বৃষ্টিপাতও কম হয়। যে কারণে বৃষ্টিপাত পুরো পৃথিবীতেই কম হয়েছে। এবার জুলাইতে খরা, তাপপ্রবাহ বেশি ছিল।
এবারে জুলাইয়ের শুরু থেকে অর্থাৎ ৫ জুলাই থেকে পরবর্তী ১৭দিন টানা তাপপ্রবাহ ছিল। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ১৩ জুলাই রাজশাহীতে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। টানা তাপপ্রবাহ এবারের ঈদুল আযহার আন্দনকেও মাটি করে দিয়েছে। তীব্র গরমে অনেকেই ঘরের বাইরের যাননি।
এটা জলবায়ু পরিবর্তনের কোনো প্রভাব কি-না, জানতে চাইলে আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, এটা তো কেবল এই বছরই হলো। পরপর কয়েক বছর হলে বোঝা যেত। কেননা, ৩০ বছর পরপর জলবায়ুর স্বাভাবিক পরিবর্তন হয়। কাজেই এটা এখনই বলা যাচ্ছে না।
এদিকে দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান জানিয়েছেন, আগস্টেও সামগ্রিকভাবে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা কম রয়েছে। এক থেকে দুটি বর্ষাকালীন লঘুচাপের সৃষ্টি হতে পারে, যার একটি নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
চলতি মাসে এক থেকে দুই দিন মাঝারি ধরনের বজ্রঝড় ও তিন থেকে চারদিন হালকা বজ্রঝড় হতে পারে। এছাড়া বিচ্ছিন্নভাবে মৃদু তাপপ্রবাহ (৩৬ ডিগ্রি থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বয়ে যেতে পারে। ফলে দিন ও রাতের তাপমাত্রা কিছুটা বেশি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে মাসের দ্বিতীয়ার্ধে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে মৌসুমী ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে কয়েক স্থানে স্বল্প থেকে মধ্য মেয়াদী বন্যা হতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ২, ২০২২
ইইউডি/এমএমজেড