ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কর্পোরেট কর্নার

ডিজিটাল পদ্ধতিতে বিদেশে কর্মী পাঠাতে হবে: মন্ত্রী

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২২
ডিজিটাল পদ্ধতিতে বিদেশে কর্মী পাঠাতে হবে: মন্ত্রী

ঢাকা: প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেছেন, যখনই আমরা পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের কথা বলি, সেটাকে অংশীদারিত্বই হতে হয়। সরকার সুযোগ দেয় কারণ তার সেবাটি প্রয়োজন।

বিএমইটির একার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। সেটি করেও থেমে থাকা যাবে না। আর এভাবেই সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। আমরা সব সময় একজোট হয়ে কাজ করি। আমার কাজ কর্মীদের বিদেশ পাঠানো। এখন আর এনালগ পদ্ধতিতে বিদেশে কর্মী পাঠানো যাবে না, ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠাতে হবে।

শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) ঢাকার দ্য ওয়েস্টিন হোটেলে জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরো (বিএমইটি) কর্তৃক আয়োজিত ডিজিটাল পদ্ধতিতে ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স প্রক্রিয়ার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, ইতোমধ্যে অংশীদারিত্বের ফলাফলও পাওয়া যাচ্ছে যার এটি উদাহরণ হলো বিএমইটি ডাটাবেজ। ২০১৩ সালে সরকার প্রথম বিএমইটির জন্য ডাটাবেজ তৈরির সিদ্ধান্ত নিলেও তা মূলত আলোর মুখ দেখেছে আমি প্রবাসী যুক্ত হবার পর। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে, অ্যাপটি তৈরিতে সার্ভিস চার্জ ভিত্তিক মডেল অনুসরণ করায় এতে সরকারের কোনো ধরনের ব্যয় হয়নি। এছাড়াও মন্ত্রী জনবান্ধব সেবা দেওয়ায় বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় বিদ্যমান হিডেন চার্জ এড়াতে বিদ্যমান প্রক্রিয়াটিকে আরও সহজীকরণে নির্দেশনা দেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, ডিজিটাইজেশন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় গতির সঞ্চার করবে।

অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে আমি প্রবাসীর সঙ্গে সরকারি সুরক্ষা, নির্বাচন কমিশন (ইসি) এবং পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ইন্টিগেশনের মতো প্রাইভেট-পাবলিক কলাবরেশনের উদাহরণ দ্রুত বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নেবে।

তিনি বলেন, আমরা একটি স্মার্ট সার্ভিস আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করতে যাচ্ছি এবং ইতোমধ্যে আমি প্রবাসী অ্যাপটি কার্যকর হয়েছে। বিএমইটির ডিজিটাল পরিষেবাগুলো পেতে এখন পর্যন্ত আমি প্রবাসী অ্যাপে প্রায় ২০ লাখ মানুষ নিবন্ধন করেছে। এমন স্মার্ট একটি প্রকল্প নিয়ে কাজ করায় তিনি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানান।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুস সালেহীন।  

তিনি মন্ত্রণালয়ের কাজে প্রতিনিয়ত স্বচ্ছতা বাড়ানো এবং অভিবাসী কর্মীদের জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ সেবা দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান।

পর্যায়ক্রমে বিএমইটির সব পরিষেবা ডিজিটাল করার পরিকল্পনা কথা জানিয়ে বিএমইটির মহাপরিচালক মো. শহীদুল আলম বলেন, (ডিজিটাইজেশনের ফলে) সেবা সহজ হচ্ছে, খরচ কমছে, ভিজিট কমছে এবং সহজেই যাচাইযোগ্য হচ্ছে।

আমি প্রবাসী অ্যাপ এবং ওয়েব পোর্টালের বিভিন্ন ফিচার এবং তার সাফল্য তুলে ধরে তিনি বলেন, আমি প্রবাসী থেকে প্রাপ্ত বিশাল ডেটা কীভাবে বাংলাদেশ সরকারকে অভিবাসন খাতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করছে তার সবিস্তারিত তথ্য তার আলোচনায় উঠে আসে। উল্লেখ্য যে, বিদেশগামী কর্মীদের সহায়তার জন্য সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশি প্রকৌশলী এবং প্রযুক্তিবিদদের দিয়ে তৈরি বিশ্বে এমন অ্যাপ এটাই প্রথম।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিস (বায়রা)-এর নবনির্বাচিত সভাপতি মোহাম্মাদ আবুল বাশার। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত এসসা ইউসেফ এসসা আল দুহাইলান, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর প্রতিনিধিরা ও জনপ্রতিনিধিরা।

বিদেশগামী কর্মীদের সর্বশেষ ধাপ, জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরো (বিএমইটি) কর্তৃক প্রদত্ত বহির্গমন ছাড়পত্র বা ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স এখন ডিজিটাল পদ্ধতিতেই করা সম্ভব হবে। এখন একজন বিদেশগামী কর্মী স্বল্প সময়ে, কম অর্থ ব্যয়ে এবং কোনো ধরনের ভোগান্তি ছাড়া অনলাইনেই ক্লিয়ারেন্সের জন্য আবেদন এবং বিএমইটি স্মার্ট কার্ড গ্রহণ করতে পারবেন।

সম্পূর্ণ ডিজিটাল প্রক্রিয়াটি প্রস্তুত করেছে বিএমইটির ডিজিটাল সার্ভিস প্রোভাইডার আমি প্রবাসী লিমিটেড। ক্লিয়ারেন্স স্মার্ট কার্ড এখন সত্যিকার অর্থেই ‘স্মার্ট’। QR Code ভিত্তিক এই কার্ডটি খুব সহজে চাইলে যে কেউ পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে যাচাই করতে পারবেন।

ইতোমধ্যে আমি প্রবাসী অ্যাপের মাধ্যমে বিএমইটি ডাটাবেজে নিবন্ধন, ট্রেনিং কোর্সে আবেদন, ট্রেনিং ও প্রি-ডিপার্চার ওরিয়েন্টেশন (পিডিও) সেশন বুকিং, ট্রেনিং ও পিডিও সার্টিফিকেট ডিজিটাইজেশনে ভূমিকা রেখেছে। এছাড়াও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় নিবন্ধিত বিদেশগামী কর্মীদের বিএমইটি নম্বর ‘সুরক্ষা’য় প্রেরণ করে কর্মীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রস্তাব রাখলে মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে, পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করে মহামারির মধ্যে আমি প্রবাসী ১০ লাখেরও বেশি নিবন্ধন সম্পন্ন করেছে। এতেও সরকারের কোনো অতিরিক্ত অর্থ খরচ করতে হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০২২
আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।