ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

কিউইদের বিধ্বস্ত করে সেমিতে লংকানরা

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৯ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০১৪
কিউইদের বিধ্বস্ত করে সেমিতে লংকানরা

চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম থেকে: মাত্র ১১৯ রানকে পুঁজি করেই বিধ্বংসী বোলিংয়ে সেমিফাইনালে পৌঁছে গেলো লংকান সিংহরা। সোমবার কিউইদের ৬০ রানে গুটিয়ে দিয়ে ৫৯ রানের জয় তুলে নিয়েছে তারা।



শ্রীলঙ্কা: ১১৯ (১৯.২ ওভার/২০ ওভার)
নিউজিল্যান্ড: ৬০ (১৫.৩ ওভার/ ২০ ওভার)
ফল: শ্রীলঙ্কা ৫৯ রানে জয়ী
প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ: রঙ্গনা হেরাথ

সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ৩০তম ম্যাচে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামে লাসিথ মালিঙ্গার নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কান। টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া কিউই অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককুলামের সিদ্ধান্তকে যৌক্তিকই প্রমাণ করেন তার দলের বোলাররা। ১৯.২ ওভারে মাত্র ১১৯ রানে লংকান ব্যাটসম্যানদের গুটিয়ে দেন তারা।

সেমিফাইনালে যেতে হলে শ্রীলঙ্কার সামনে যেমন এ জয় ছাড়া উপায় ছিল না, তেমনি নিউজিল্যান্ডকেও করতে হতো ১২০ রান।

সেমিফাইনালে যাওয়ার লক্ষ্যে জয়ের জন্য কিউইদের হয়ে ব্যাটিং ওপেন করতে আসেন মার্টিন গাপটিল এবং কেন উইলিয়ামসন।

চতুর্থ ওভারে দলীয় ১৮ রানের মাথায় গাপটিল রান আউট হয়ে ফিরে যান। কোন রান যোগ না হতেই শূন্য রানে ব্রেন্ডন ম্যাককুলামও সাজঘরে ফেরেন। আর পাঁচ রান যোগ হতে রস টেলর উইকেট খোয়ান রঙ্গনা হেরাথের এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে। ব্যস এতেই অনেকটা ম্যাচের ফলাফল নির্ধারিত হয়ে যায়।

তিন টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানের দ্রুত বিদায়ে এই চাপ সামাল দেওয়ার আগেই রঙ্গনা হেরাথ ফেরান জিমি নিশামকে। হেরাথ তার তৃতীয় ওভারে আক্রমণে এসে লুক রঞ্চিকে এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে ফেললে কিউইরা ২৯ রানেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলে। দলীয় ৩৩ রানে মিড-উইকেটে বল ঠেলে দিয়ে সেনানায়েকের বলে ম্যাথুজের হাতে ক্যাচ তুলে দেন নাথান ম্যাককুলাম। মাত্র ৩৩ রানেই কিউইদের ষষ্ঠ উইকেটের পতন ঘটে। কেন উইলিয়ামসনের সঙ্গে ১৮ রানের ছোট্ট জুটি গড়ে কাইল মিলস সেনানায়েকের দ্বিতীয় শিকার হন। ৫১ রানেই সপ্তম উইকেটের পতন ঘটে নিউজিল্যান্ডের। আর ওপেনিংয়ে নামা কেন উইলিয়ামসন একপ্রান্ত আগলে রেখে ৪৩ বলে ৪২ রান করে সাজঘরে ফিরলে জয়ের সুবাস পেতে থাকে লংকানরা। এরপর ট্রেন্ট বোল্ট হেরাথের বলে জয়াবর্ধনের হাতে ক্যাচ তুলে দিলে আঘাতপ্রাপ্ত কোরি অ্যান্ডারসনের শেষ উইকেট ভাঙার আনন্দের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে লংকানরা। কিন্তু জানানো হয়, কোরি খেলতে নামতে পারছেন না। লংকান সিংহরা বিজয়ের আনন্দের মেতে ওঠে।

একা রঙ্গনা হেরাথের ঘূর্ণিতেই নাকানি-চুবানি খেতে হয় কিউই ব্যাটসম্যানদের। লংকান এই স্পিন জাদুকর একাই কিউইদের ৫ উইকেট ঝুলিতে ভরেন। ৩ ওভার ৩ বল করে রান দিয়েছেন মাত্র ৩। এর মধ্যে টি-টোয়েন্টির মতো ম্যাচে মেডেন ওভারও নিয়েছেন ২টি।

এছাড়া, সেনানায়েকের ঝুলিতে গেছে ২ উইকেট। রান খরচে সেনানায়েকও কম কৃপণ নন। ৩ ওভার করে রান দিয়েছেন মাত্র ৩।

পাওয়ার প্লে’র ছয় ওভারে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ৪ উইকেটে ২৩ রান। দলীয় অর্ধশতক হয় ৭৭ বলে।

এর আগে, প্রথম ইনিংসে লংকানদের হয়ে ব্যাটিং সূচনা করতে নামেন তিলকারত্মে দিলশান এবং কুশল পেরেরা। দ্বিতীয় ওভারে দলীয় ২০ রানের মাথায় ট্রেন্ট বোল্টের বলে উইকেটের পিছনে ধরা দেন কুশল পেরেরা। আউট হওয়ার আগে ৮ বলে ১৬ রান করেন তিনি।

গত ম্যাচ বাদ দিয়ে আবারো ধারাবাহিক ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন টি-টোয়েন্টিতে কিউইদের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রানের (২৯৬) মালিক দিলশান। দিল-স্কুপ মারতে গিয়ে ট্রেন্ট বোল্টের বলে উইকেটের পিছনে লুক রঞ্চির হাতে ধরা দেন দিলশান (৮ রান)। দলের এই বিপর্যয়ে আর ৬ রান যোগ হতেই বোল্টের তৃতীয় শিকার হন কুমার সাঙ্গাকারা (৪ রান)।

৩৫ রানে তিন উইকেট হারালে দলের হাল ধরেন মাহেলা জয়াবর্ধনে এবং লাহিরু থিরিমান্নে। আরও ৩০ রানের জুটি গড়ে জিমি নিশামের বলে ডিপ থার্ডম্যানে মার্টিন গাপটিলের তালুবন্দ্বি হন থিরিমান্নে। আউট হওয়ার আগে থিরিমান্নে করেন তিন চারে ১৮ বলে ২০ রান। দলীয় ৮১ রানে ম্যাকক্লেনাঘ্যানের বলে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ। টি-টোয়েন্টিতে কিউইদের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রানের (২৯৬) মালিক দিলশানকে এই ম্যাচে পাশ কাটানো (৩০১) মাহেলা জয়াবর্ধনে ৩২ বলে ২৫ রান করে সাজঘরে ফিরে গেলে ষষ্ঠ উইকেটের পতন ঘটে লংকানদের।

শেষ দিকে থিসারা পেরেরার ১৬ রান এবং সাচিত্রা সেনানায়েকের ১৭ রানের কল্যাণে শ্রীলঙ্কার রানের ঘরে পুঁজি হয় ১১৯।

তবে, আরও কমেই গোটানো যেত লংকানদের। এর মধ্যে বেশকিছু রান আউট ও ক্যাচ আউটের সুযোগ মিস করেন কিউই ফিল্ডাররা।

পাওয়ার প্লে’র ছয় ওভারে লংকানরা করেছিল তিন উইকেটে ৩৫ রান। দলীয় অর্ধশতক আসে ৫২ বলে। আর দলীয় শতক আসে ১০৬ বলে।

কিউই বোলার ট্রেন্ট বোল্ট ৪ ওভার বল করে ২০ রান দিয়ে লংকানদের প্রথম ৩ উইকেট তুলে নেন। জিমি নিশাম ২.২ ওভার বল করে ২২ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন। এছাড়া ম্যাকক্লেনাঘ্যান নেন দুই উইকেট।

বাংলাদেশ সময়: ২২২৭ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।