ঢাকা: টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিশনে বাংলাদেশের হিসেবের ঘরটি শূন্য। প্রাপ্তির চেয়ে অপ্রাপ্তি বেশি তাই সমীকরণ টানার দরকার হলো না।
টানা হারের মধ্য দিয়ে তিনটি মাস অতিবাহিত করেছে বাংলাদেশ। আইসিসির সহযোগী সদস্য আফগানিস্তান ও হংকংয়ের বিপক্ষে হেরেছে বাংলাদেশ। গতবছর নিউজিল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে, শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ খেলেছে। সেসব সিরিজে দারুণ পারফর্ম করে মুশফিক, সাকিব, তামিমরা। হঠাৎ দলের এমন কি হলো, কেনো খেলোয়াড়রা রান পাচ্ছে না? এমন নানা প্রশ্ন যখন ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে তখন হয়তো চুল-ছেঁড়া বিশ্লেষণ সম্ভব নয়। তবে উত্তরণের পথ তো রয়েছে।
জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক রকিবুল হাসান বললেন: হ্যাঁ এটি সত্যি যে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি মিশন শেষ হয়েছে। কিন্তু ষোলো কোটি মানুষের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। বাংলাদেশ দলকে এবং টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতা কাছ থেকে আমার ধারণা, বাংলাদেশের সামর্থ্য আসলে এতোটুকুই। এতে হয় তো অনেকেই চমকে যাবেন- কিন্তু গত তিন সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশ যেভাবে খেলেছে তাতে ব্যক্তিগত এবং দলীয়ভাবে কেউ ভালো করেনি। খেলোয়াড়দের আরো দায়িত্ব নিয়ে খেলা উচিত ছিলো। অন্য ক্রিকেটের তুলনায় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট একটু আলাদা। টি-টোয়েন্টির হচ্ছে শক্তির খেলা, পেশি শক্তির। আমাদের বিকল্প ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিংয়ে স্কিল পুরোপুরি রপ্ত হয়নি। অন্য দলগুলো যেখানে সাত আসমান সমান দক্ষতা, সেখানে আমাদের দুই আসমানের সমান। তবে আমাদের আরো ভালো খেলার সুযোগ ছিল। কিন্তু ম্যানেজমেন্টের অদক্ষতা এবং উদাসীনতায় তা হয়নি। তবে ব্যর্থতাকে বাদ দিয়ে আমাদের আগামীর কথা ভাবতে হবে।
জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার জাভেদ ওমর বেলিম জানালেন, টি-টোয়েন্টি কিন্তু একটু ভিন্ন জায়গা। ওয়ানডে কিংবা টেস্টে আমরা যত ভালো দল। টি-টোয়েন্টিতে ততটা ভালো দল নই। এটা সবাইকে স্বীকার করতে হবে। বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হেরেছে। এর পেছনে বড় দুটি প্রধান কারণ বাজে ফিল্ডিং এবং আত্মবিশ্বাসের অভাব। শ্রীলঙ্কা সিরিজ থেকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত প্রায় ছয়টি ক্লোজ ম্যাচ আমরা জয়ের কাছে গিয়েও হেরেছি। এটা আমাদের মানসিকভাবে অনেক দুর্বল করে দিয়েছে। আর টি-টোয়েন্টিতে হংকংয়ের বিপক্ষে হেরে যাওয়ার পর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারিনি। দলকে আরো বেশি পরিশ্রম করতে হবে। ব্যাট-বলের পাশাপাশি ফিল্ডিংয়ে আরো বেশি মনোযোগী হতে হবে। বিশেষ করে ক্যাচগুলো আমরা ঠিকমতো ধরতে পারছি না। এটা টি-টোয়েন্টিতে হলে ম্যাচ জয় করা যায় না।
খেলোয়াড়দের অনুশীলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনুশীলনের পর যে খাবার দেওয়া হয়, সেটা ঠিক মতো খেলেই চলে। খেলোয়াড়দের খাওয়া নিয়ে কোনো সমস্যা আছে বলে আমার মনে হয় না। অরেঞ্জ জুস খেতে হবে এমন কোনো ধরা বাধা নিয়ম নেই। ডিম, দুধ ঠিক মতো খেতে হবে। আমাদের দেশ এতটা সাবলম্বী নয়, ঘরে ঘরে সবাই অরেঞ্জ জুস খাবে। ভারতের ভিরাট কোহলি কী আমাদের সাকিবদের চেয়ে বেশি শক্তিশালী? ফিটনেসে তো ওরা প্রায় সমানই। ও চার-ছয় মারতে পারলে, আমরা পারব না কেন? শুধু চেষ্টা আর আত্মবিশ্বাস দরকার।
দেশের প্রতিনিধি হিসেবে মাঠে নামেন এগারো জন ক্রিকেটার। আর তাদের উৎসাহ ও সমর্থন জানায় কোটি ক্রিকেটপ্রেমী দর্শক। কেউ ঘরে টেলিভিশনের সামনে কেউবা গ্যালারিতে বসে সমর্থন দেয় মুশফিক, সাকিব, তামিম, এনামুল ও নাসিরদের। কিন্তু তাদের হারের সঙ্গে হারে কোটি হৃদয়ও।
বাংলাদেশ সময়: ০১১০ ঘণ্টা, ৩ এপ্রিল ২০১৪