ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

তাকিয়ে ওদের দিকে

সাজ্জাদ খান, স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০১৫
তাকিয়ে ওদের দিকে ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বিশ্বকাপে বাংলাদেশের তরুণ ক্রিকেটারদের দুর্দান্ত পারফর‌ম্যান্স নতুন করে স্বপ্ন দেখাচ্ছে ভক্তদের। মাশরাফি, সাকিব, তামিম, মুশফিক, মাহমুদুল্লাহদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লড়েছ সাব্বির-সৌম্য-তাসকিনরা।



তাইতো সম্ভাবনার নতুন এক উঠোন তৈরি করতে চলেছে ক্রিকেট বীররা। উঠোনের আঙ্গিনাজুড়ে বিশ্বকাপ-সাফল্য।

১৯ বছরের ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যালান্সড বাংলাদেশ দলের তকমা পেয়েছে বিশ্বকাপ টিমটি। এমন এক দল পেয়েই মাশরাফির হাওয়ায় ওড়াওড়ি! হাওয়ায় তো উড়েছেন-ই। ক্রিকেটের জনক ইংল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে নিজেদের পেখম মেলে ধরেছে। বিশ্বকাপ খেলে বীরের বেশেই ফিরেছেন দেশে।

বিশ্বকাপে এমন সাফল্যের জন্য দেয়া গণসংবর্ধধনায় মাশরাফি বাহিনী পেয়েছেন ভক্তদের ফুলেল শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা।  

২৪ জানুয়ারী টাইগার দলপতির দায়িত্ব ঘাড়ে নিয়ে আর কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার স্বপ্ন নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় উড়াল দেয় মাশরাফিরা। বিশ্বকাপ চলাকালীন পুরো স্কোয়াডকেই আগলে রেখে অসাধারণ দক্ষতায় পারফরম্যান্স আদায় করে নিয়েছেন তরুণ টাইগারদের কাছ থেকে। সাহস দিয়েছেন। তরুণ তুর্কিদের বলেছেন ‘ভয় পাবি না, সাহস নিয়ে খেলবি। ’ এমন তুই-তুকারি-ই যেন আরো বেশি সাহস যুগিয়েছে ওদের।

২৯ মার্চ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় থাকতে চেয়েছিলেন মাশরাফি! স্বপ্ন তার এত বড়ই ছিল। এমন স্বপ্ন মাশরাফিকে দেখিয়েছিল তরুণ ক্রিকেটাররাই। স্কোয়াডের ৯ জন ক্রিকেটার-ই বিশ্বকাপে প্রথম। এমন অনভিজ্ঞ একটি দলের শক্তি হয়তো ‘তারুণ্য’ই ছিল। তামিম ইকবালের সঙ্গে ওপেনিংয়ে যোগ্য সঙ্গীর অভাব ছাড়া প্রতিটি জায়াগায় যোগ্য ক্রিকেটারটি এসে পূর্ণ করেছে বাংলাদেশ দলকে।   

মাহমুদুল্লাহর মহা-কাব্যিক ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরী ব্র্যাকেট বন্দী করে রাখলে তরুণ-নবীন ক্রিকেটাররা সমানে লড়াই করে গেছেন সিনিয়রদের সঙ্গে। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পক্ষে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারি হয়েছেন তরুণ তুর্কি তাসকিন আহমেদ। নিয়েছেন ৯টি উইকেট।

তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে সৌম্য সরকার স্ট্রোক খেলে গেছেন অপরুপ নান্দনীকতায়। এভারেজে ২৯ রান করেছেন। আছে একটি ফিফটিও। অনেক বড় ইনিংস না খেলতে পারলেও ছোট ইনিংসগুলো দিয়ে দলের জন্য রেখেছেন অবদান।

মিডল অর্ডারে ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সাব্বির রহমান খেলে গেছেন ‍বুক চিতিয়ে। কঠিন চাপের সময়েও করে গেছেন ছন্দময় ব্যাটিং। কখনো মারমুখী মেজাজ, প্রয়োজনে আবার সতর্কতা। ৬ ম্যাচ খেলে এক ফিফটিতে করেছেন ১৮২ রান।

অস্ট্রেলিয়ার প্রসিদ্ধ মাঠগুলোতে প্রথমবার নেমেই যেভাবে লড়াই করেছে সাব্বির-সৌম্য-তাসকিনরা তাতে বলা যায়, দাপট নিয়েই সামনের দিনগুলোতে অনেক পথ পাড়ি দেবে বাংলাদেশ দল।  

আর এ বছরটিই-ই হতে পারে সাফল্যের কালজয়ী একটি বছর। যেখান থেকে শুরু হতে পারে বাংলাদেশের ক্রিকেটে নব-অধ্যায়। বিশ্বকাপ-সাফল্যের পর পাকিস্তান সিরিজ দিয়েই শুরু হোক নতুন স্বপ্ন বুননের। চলতি বছরই ঘরের মাঠে আরো পাওয়া যাবে ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী দলগুলোকে। ওদের বিপক্ষে ভালো করলে নিয়মিত-ই হবে সিরিজ! আর সম্ভাবনার পুরো উঠোন মাড়িয়ে আসবে বাংলাদেশ দল।

তরুণ ক্রিকেটারদের ধারাবাহিকতা এমন স্বপ্ন দেখাচ্ছে বাংলাদেশকে। তবে একটি শঙ্কাও আছে। এসব প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের খারাপ ফর্মের সময় আমরা যেন তাদের ভুলে না যাই। দর্শকদের কাছ থেকে চোখের আড়াল হলেও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড যেন ঠিকই নজরে রাখে এসব ক্রিকেটারদের প্রতি।

দলের পারফরম্যান্স মূল্যায়ন ও পর্যবেক্ষণে টেকনিক্যাল কমিটি করার পরিকল্পনা রয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি)। অফ-ফর্মের কারণে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া ট্যালেন্টেড ক্রিকেটারদের নজরে রাখতে সঙ্গে আরো একটি কমিটি হলে মন্দ হতো না।    

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩০ ঘণ্টা, ১৪ এপ্রিল ২০১৫
এসকে/এমআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।