ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ আশ্বিন ১৪৩১, ০১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

৩৬ ওভারে বাংলাদেশ ১৩০/৪

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৬
৩৬ ওভারে বাংলাদেশ ১৩০/৪ ছবি: শোয়েব মিথুন/ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মিরপুর থেকে: নেপালের ছুঁড়ে দেওয়া ২১২ রানের টার্গেটে ব্যাট করছে বাংলাদেশ। দলীয় ৭৫ রানে স্বাগতিকদের টপঅর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান বিদায় নেন।

উইকেটে সেট ব্যাটসম্যান জয়রাজের সঙ্গে জুটি বাঁধেন মেহেদি হাসান মিরাজ। এ জুটি থেকে আসে আরও ২৩ রান। সবশেষ বিদায় নেন জয়রাজ শেখ। ধামালার বলে ইনিংসের ২৯তম ওভারে এলবির ফাঁদে পড়েন ৬৭ বলে চারটি চারে ৩৮ রান করা জয়রাজ।

এ রিপোর্ট লেখা অবধি বাংলাদেশ ৩৬ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে তুলেছে ১৩০ রান।

স্বাগতিক যুবাদের হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন পিনাক ঘোষ ও সাইফ হাসান। ইনিংসের সপ্তম ওভারে বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে আঘাত হানেন ধামালা। টাইগার ওপেনার সাইফ হাসানকে এলবির ফাঁদে ফেলেন তিনি। বিদায়ের আগে সাইফের ব্যাট থেকে ৫ রান আসে।

ওপেনার সাইফ হাসান ফিরে গেলেও জুটি বাঁধেন পিনাক ঘোষ ও জয়রাজ শেখ। তবে, ইনিংসের ২০তম ওভারে ডাবল রান নিতে গিয়ে নিজেদের ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে ফেরেন পিনাক ঘোষ। তিনি বিদায় নেওয়ার আগে জয়রাজের সঙ্গে ৪৬ রান যোগ করেন স্কোরবোর্ডে। পিনাকের ব্যাট থেকে আসে ৩২ রান। ৫৪ বলে সাজানো তার ইনিংসে ছিল দুটি বাউন্ডারি।

দুই ওপেনার সাইফ হাসান ও পিনাক ঘোষ ফিরে গেলে তাদের পথ ধরেন নতুন আসা ইনফর্ম ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত। ২৩তম ওভারে প্রেম তামাংয়ের বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৬ বলে ৮ রান করা শান্ত।

চলতি যুব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করতে শুক্রবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) নেপালের যুবাদের বিপক্ষে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সকাল নয়টায় ফিল্ডিংয়ে নামে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। কোয়ার্টার ফাইনালের এ ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন নেপাল দলপতি রাজু রিজাল।

টাইগার যুবারা দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ের পরিচয় দিয়েছেন। প্রতিপক্ষের চার ব্যাটসম্যানকে বিদায় করেন রানআউট করে। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে নেপালিরা ২১১ রান সংগ্রহ করে।

এর আগে ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন বোল্ড করে ফিরিয়ে দেন নেপালের ওপেনার সন্দীপকে (৭)। ৬ বলের ব্যবধানে নেপালের দুই ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে দিয়ে শুরুতেই আঘাত হানে বাংলাদেশ। পরের ওভারে বোলিং আক্রমণে এসে মেহেদি হাসান রানা ফিরিয়ে দেন যোগেন্দ্র কারকিকে (১)। রানার দুর্দান্ত বাউন্সারে দিশেহারা হয়ে কারকি ক্যাচ তুলে দেন সাইফ হাসানের হাতে। দলীয় ১৯ রানের মাথায় দুই উইকেট হারায় নেপাল।

এরপর উইকেটে জুটি বাঁধেন নেপালের দলপতি রাজু রিজাল আর ওপেনার সুনীল ধামালা। দুশ্চিন্তা বাড়াতে থাকা তৃতীয় উইকেট জুটিটি বাংলাদেশ ভেঙেছে দুর্দান্ত এক রান আউটের মাধ্যমে। ৪৪ রানের জুটি গড়ে বিদায় নেন ধামালা। দুই ব্যাটসম্যানের ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউট হন সেট ব্যাটসম্যান ধামালা। রানআউট হওয়ার আগে তিনি ৬২ বলে দুটি চারে ২৫ রান করেন।

দলীয় ৬৩ রানের মাথায় টপঅর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান ফিরলেও দলকে টেনে নিয়ে চলেন নেপালের অধিনায়ক রাজু রিজাল। তাকে সঙ্গ দিতে থাকেন আরিফ শেখ। ইনিংসের ২৮তম ওভারে ৫১ রানের এই জুটি ভাঙেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। ডিপ মিডউইকেটে তুলে মারতে গিয়ে জয়রাজ শেখের অসাধারণ আর দৃষ্টিনন্দন এক ক্যাচে সাজঘরের পথ ধরেন আরিফ। আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ২১ রান। ৩২ বলে দুটি চারের সাহায্যে তিনি এ রান করেন।

৩৪তম ওভারে বয়স নিয়ে বিভ্রান্ত ছড়ানো নেপালের দলপতি রাজু রিজালকে ফিরিয়ে দেয় টাইগার যুবারা। রানআউট হয়ে ফেরার আগে তিনি ৮০ বলে ৭২ রান করেন। নিজের ভুলে উইকেট বিলিয়ে সাজঘরের পথ ধরার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৮টি চার আর একটি ছক্কা।

ইনিংসের ৩৭তম ওভারে টপঅর্ডারের ষষ্ঠ ব্যাটসম্যানকে হারায় নেপাল। বিদায় নেন সালেহ আহমেদ শাওনের বলে এলবির ফাঁদে পড়া রাজবির সিং (৯)। শাওনকে সুইপ করতে গিয়ে এলবির ফাঁদে পড়েন তিনি। দলীয় ১৫৩ রানে নেপালের ষষ্ঠ উইকেটের পতন ঘটে। ইনিংসের ৪৩তম ওভারে আরেকটি রানআউটের ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন কুশল ভুরতাল (১৪)। পিনাক ঘোষ আর মেহেদি হাসান মিরাজের দারুণ ফিল্ডিংয়ে রানআউট হন তিনি।

৪৯তম ওভারে আক্রমণে এসে মিরাজ বোল্ড করেন ২২ রান করা দীপেন্দ্র সিংকে। ইনিংসের শেষ বলে রানআউট হন সুশীল কান্দাল। ২৪ বলে ২২ রান করে অপরাজিত থাকেন প্রেম তামাং।

টাইগার বোলারদের মধ্যে একটি করে উইকেট পেয়েছেন সালেহ আহমেদ শাওন, মেহেদি রানা ও মেহেদি হাসান মিরাজ। আর সাইফুদ্দিন পেয়েছেন দুটি উইকেট।

যুব বিশ্বকাপের মেগা ইভেন্টে এর আগে বাংলাদেশ তিনবার কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেছে। তিনবারই ছিটকে পড়তে হয় টাইগার যুবাদের। এবারে ফেভারিটের তকমা লাগিয়েই মিশন শুরু করেছে স্বাগতিকরা। ঘরের মাঠের বিশ্বকাপকে নিজেদের কাছে রেখে দিতেই দৃঢ় প্রতিজ্ঞ নাজমুল হোসেন শান্ত, সাইফ হাসান, আরিফুল ইসলাম, পিনাক ঘোষ, সালেহ আহমেদ শাওন, সাঈদ সরকাররা।

গ্রুপপর্বে চ্যাম্পিয়ন হয়েই টাইগার যুবারা কোয়ার্টারে উঠে। নিজেদের প্রথম ম্যাচে তারা হারায় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকাকে। পরের ম্যাচে স্কটল্যান্ড আর নিজেদের শেষ ম্যাচে নামিবিয়াকে উড়িয়ে দেয় মিজানুর রহমানের ছাত্ররা।

বাংলাদেশ-নেপাল যুবাদের পরিসংখ্যান দেখলে কাগজে-কলমে কিছুটা এগিয়ে নেপালিরা। একবারই দুইদল মুখোমুখি হয়েছিল বিশ্বমঞ্চে। ২০০২ বিশ্বকাপের আসরে প্লেট সেমিফাইনালে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়া নাফিস ইকবালের দলকে হারতে হয় ২৩ রানে। তবে, এবার একেবারেই ভিন্ন গল্প রচনা করে চলেছে টাইগার যুবারা।

আজকের ম্যাচে জিততে পারলে দারুণ একটি মাইলফলক ছোঁয়া হবে মেহেদি হাসান মিরাজের দলের। বলা চলে যুব বিশ্বকাপের আসরে বাংলাদেশ দলের। শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত ২০০৬ সালের যুব বিশ্বকাপে মুশফিকুর রহিমের নেতৃত্বে বাংলাদেশ পঞ্চম হয়েছিল। সেটিই এখন পর্যন্ত টাইগার যুবাদের সেরা সাফল্য হয়ে আছে।

এবারের আসরে নিউজিল্যান্ড, আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে এসেছে গ্রুপ রানার্সআপ হওয়া নেপাল। নিজেদের গ্রুপের সর্বশেষ ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে হারে জগত বাহাদুরের শিষ্যরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৬ ঘণ্টা, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬
এমআর

** ইনফর্ম শান্তর বিদায়
** নিজেদের ভুলে রানআউট পিনাক
** ১৯ ওভারে বাংলাদেশ ৬১/১
** সাইফের বিদায়
** সেমির লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে স্বাগতিক যুবারা
** সেমিতে উঠতে যুবাদের টার্গেট ২১২ রান
** টাইগারদের হুঙ্কারে নেপালের ষষ্ঠ উইকেটের পতন
** নেপাল দলপতির বিদায়
** সাইফুদ্দিন-জয়রাজ ফেরালেন আরিফকে
** ২৬ ওভারে নেপাল ১০৫/৩
** সেট ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়েছে টাইগাররা
** উইকেটের অপেক্ষায় টাইগার যুবারা
** ১৪ ওভার শেষে নেপাল ৫১/২
** নেপালের ওপেনার সাজঘরে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।