ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

সাকিব-মাহমুদউল্লাহর শতরানের জুটি

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৪ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০১৭
সাকিব-মাহমুদউল্লাহর শতরানের জুটি ছবি: সংগৃহীত

শুরুর ধাক্কা সামলে বাংলাদেশকে পথ দেখাচ্ছে সাকিব-মাহমুদউল্লাহ জুটি। দু’জনের শতরানের পার্টনারশিপে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনাল দৌড়ে টিকে থাকতে নিউজিল্যান্ডের দেয়া ২৬৬ রানের টার্গেটে চোখ রাখছে টাইগাররা।

চাপের মুখে দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ দু’জনই অর্ধশতক পূরণ করেছেন। এটি সাকিবের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৩৫তম ও মাহমুদউল্লাহর ১৮ নম্বর ফিফটি।

এ রিপোর্ট লেখা অবধি দলীয় সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ৩১ ওভার শেষে চার উইকেটে ১৪৫। সাকিব ৫৭ ও মাহমুদউল্লাহ ৫১ রানে ব্যাট করছেন।

সবশেষ দলীয় ৩৩ রানের মাথায় মুশফিকুর রহিমের বিদায়ে চতুর্থ উইকেটের পতন ঘটে। অ্যাডাম মিলনির বলে ক্লিন বোল্ড হয়ে মাঠ ছাড়েন। ১২ রান তুলতেই তিন উইকেট হারায় টাইগাররা। একে একে সাজঘরে ফেরেন টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল, সাব্বির রহমান ও সৌম্য সরকার।

তিনটি উইকেটই তুলে নেন পেসার টিম সাউদি। সবশেষ পঞ্চম ওভারের মাথায় সৌম্যকে (৩) এলবিডব্লু করেন। ওয়ানডাউনে ফিরে আস্থার প্রতিদান দিতে ব্যর্থ হন সাব্বির। লুক রনকির গ্লাভসে আটকা পড়েন। ইনিংসের প্রথম ওভারেই আউট হয়ে যান ফর্মে থাকা তামিম (০)। এলবিডব্লু হওয়ার পর রিভিউ নিলেও কোনো লাভ হয়নি।

আগের দুই ম্যাচে তামিমের ব্যাট থেকে আসে ২২৩ রান। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুর্দান্ত সেঞ্চুরির (১২৮) পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলেন ৯৫ রানের ঝলমলে ইনিংস।

শেষদিকে টাইগারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে বড় স্কোর গড়তে ব্যর্থ হয় ব্ল্যাক ক্যাপসরা। নির্ধারিত ওভার শেষে তাদের সংগ্রহ ‍দাঁড়ায় আট উইকেট হারিয়ে ২৬৫। সর্বোচ্চ ৬৩ রান করেন রস টেইলর। রানআউট হওয়ার আগে কেন উইলিয়ামসনের ব্যাট থেকে আসে ৫৭।

মাঠ খেলার অনুপযোগী হওয়ার কারণে নির্ধারিত সময়ের ১ ঘণ্টা পর ম্যাচ শুরু হয়। তবে কোনো ওভার কাটা হয়নি। বৃষ্টি শঙ্কায় কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেনসে ৩০ মিনিট বিলম্বে হওয়া টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন কিউই অধিনায়ক উইলিয়ামসন।

অষ্টম ওভারের মাথায় বিপদজনক হয়ে ওঠা গাপটিল-রনকি জুটি (৪৬) ভেঙে প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেন একাদশে ফেরা তাসকিন আহমেদ। উঠিয়ে মারতে গিয়ে মিডঅনে মোস্তাফিজুর রহমানের হাতে ধরা পড়েন লুক রনকি (১৬)। তাসকিনের পর আঘাত হানেন রুবেল হোসেন। ১৩তম ওভারে দুর্দান্ত ডেলিভারিতে এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়েন মার্টিন গাপটিল (৩৩)।

টেইলর-উইলিয়ামসন জুটি (৮৩) ভেঙে আবারো ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। টেইলরের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে নন স্ট্রাইকিং প্রান্ত সিঙ্গেল নিতে গিয়ে ক্রিজে ফিরে আসার আগে শর্ট ফাইন লেগ থেকে মোসাদ্দেক হোসেনের থ্রোতে উইলিয়ামসনকে (৫৭) রানআউট করেন সাকিব আল হাসান।

এরপর নেইল ব্রুমকে নিয়ে আরও ৪৯ রান যোগ করেন টেইলর। ব্যক্তিগত ৫৩ রানে তাসকিনের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন তিনি। ৪৪তম ওভারে কিউই ব্যাটিং লাইনআপে জোড়া আঘাত হানেন মোসাদ্দেক।

নেইল ব্রুমকে (৩৬) তামিম ইকবালের তালুবন্দি করার পর কোরি অ্যান্ডারসনকে (০) প্রথম বলেই এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন। নিজের পরের ওভারে (৪৬তম) আবারো স্পিন ভেলকি দেখান মোসাদ্দেক। এবার স্ট্যাম্পিং হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন জিমি নিশাম (২৩)। সপ্তম উইকেটের পতন ঘটে।

শেষদিকে এসে উইকেটের খাতায় নাম লেখান মোস্তাফিজ। ৪৯তম ওভারে অ্যাডাম মিলনিকে (৭) ক্লিন বোল্ড অষ্টম উইকেটের পতন  ‘কাটার মাস্টার’। আর উইকেট যায়নি। আট উইকেট হারিয়ে কিউদের স্কোর দাঁড়ায় আট উইকেটে ২৬৫। মিচেল স্যান্টনার ১৪ ও টিম সাউদি ১০ রানে অপরাজিত থাকেন।

স্পিন বোলিংয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট শিকার করেন ব্যাটিং অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক। তাসকিন দু’টি ও একটি করে নেন মোস্তাফিজ ও রুবেল।

চার পেসার নিয়ে মাঠে নামে বাংলাদেশ। একাদশে আনা হয় দু’টি পরিবর্তন। মেহেদী হাসানের মিরাজের জায়গায় দলে ফেরেন তাসকিন আহমেদ। অন্যদিকে, বাদ পড়েন ইমরুল কায়েস। ফেরানো হয় মোসাদ্দেক হোসেনকে।

কার্ডিফে নিউজিল্যান্ড বধে বাংলাদেশকে উঁকি দিচ্ছে এক যুগ আগের সুখস্মৃতি। যোগাচ্ছে বাড়তি আত্মবিশ্বাস। ২০০৫ সালে এই ভেন্যুতেই অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ইতিহাস গড়েছিল লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। কার্ডিফে এই একটি ম্যাচই খেলেছে বাংলাদেশ।

হারলেই বিদায়! জয়ী দল টিকে থাকবে সেমির রেসে। আর যদি বৃষ্টিতে ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের সামনেই কেবল শেষ চারের সুযোগ টিকে থাকবে। এমন সমীকরণ সামনে রেখেই গ্রুপপর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হয় মাশরাফির দল।

এরপর তাকিয়ে থাকতে হবে ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের দিকে। শনিবার (১০ জুন) বার্মিংহামের এজবাস্টনে বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৩টায় হাইভোল্টেজ ম্যাচটি শুরু হওয়ার কথা। যদি না বৃষ্টি বাগড়া না দেয়! টানা দুই জয়ে এরই মধ্যে সবার আগে সেমি নিশ্চিত করেছে স্বাগতিকরা।

অজিরা জিতে গেলে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড ম্যাচের ফলাফল কোনো প্রভাব ফেলবে না। দু’দলই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেবে। শেষ চারে ইংলিশদের সঙ্গী হবে অস্ট্রেলিয়া। অজিরা হেরে গেলে কিংবা ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হলে নতুন সমীকরণ সামনে আসবে।

দুই ম্যাচই যদি পরিত্যক্ত হয় সেমিতে উঠে যাবে অস্ট্রেলিয়া। আবার বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড ম্যাচ পরিত্যক্ত হলে দু’দলের পয়েন্ট হবে অজিদের সমান ২। সেক্ষেত্রে ইংল্যান্ডের কাছে অজিরা নির্দিষ্ট ব্যবধানে হারলে সেমিতে উঠবে বাংলাদেশ।

যদি এমন হয় যে, বাংলাদেশ জিতলো আর আবারো পরিত্যক্ত ম্যাচের শিকার হলো অস্ট্রেলিয়া সেক্ষেত্রে সমান ৩ পয়েন্ট হলেও সেমিতে জায়গা করে নেবে টিম বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ড জিতলেও তাই হবে। পরিত্যক্ত ম্যাচের কারণে নেট রান রেট খালি থাকায় দেশের বিমান ধরবেন স্মিথ-ওয়ার্নাররা।

পয়েন্ট টেবিলে দুই ম্যাচ শেষে পূর্ণ ৪ পয়েন্ট ইংল্যান্ডের। অস্ট্রেলিয়ার দুই ম্যাচই বৃষ্টিতে ভেসে যায়। পরিত্যক্ত ম্যাচ থেকে ২ পয়েন্ট নিয়ে তাদের অবস্থান দ্বিতীয়। একইভাবে সমান ১ পয়েন্ট নিয়ে যথাক্রমে তৃতীয় ও তলানিতে বাংলাদেশ, নিউজিল্যান্ড। দু’দলই ইংল্যান্ডের কাছে হার মানে। নেট রান রেটে সুবিধাজনক অবস্থানে বাংলাদেশ। যথাক্রমে -০.৪০৭, -১.৭৪০।

বাংলাদেশ সময়: ২৩০৪ ঘণ্টা, ৯ জুন, ২০১৭
এমআরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।