দিনটা কি শুধুই ওয়েস্ট ইন্ডিজের? বলা যেতে পারে চাইলে। শুরুটা আশা জাগানিয়া হয়েছিল বাংলাদেশের।
সেন্ট লুসিয়ায় দুই ম্যাচ সিরিজের শেষটির প্রথম দিনশেষে বাংলাদেশের চেয়ে তারা পিছিয়ে আছে ১৬৭ রানে। কিন্তু শেষ সেশনে ব্যাট হাতে নেমে একটিও উইকেট হারায়নি, করেছে ৬৭ রান। এর আগে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২৩৪ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ।
শেষ বিকেলে বাংলাদেশের বোলাররা যত কিছুই চেষ্টা করেছেন, ব্যর্থ হয়েছে ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ও জন ক্যাম্পবেলের কাছে। ওভার প্রতি ৪.১৮ গড়ে রান তুলেছেন তারা। যেন বুঝিয়ে দিয়েছেন, বাংলাদেশের ব্যাটিংটা আসলে খুব বাজেই হয়ে গেছে। এখন ক্যাম্পবল ৩২ আর ব্র্যাথওয়েট অপরাজিত ৩০ রানে।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দিনের শুরুটা খারাপ হয়নি বাংলাদেশের। যদিও রোচের করা দ্বিতীয় ওভারেই ফিরতে পারতে পারতেন তামিম। কিন্তু তাকে এলবিডব্লিউ দেননি আম্পায়ার। পরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ রিভিউ নিলেও আম্পায়ারস কলে বেঁচে যান তিনি।
এরপর জয়ের সঙ্গে ভালো জুটি গড়ে তুলেছিলেন তামিম। একদিকে জয় খেলছিলেন ধীরস্থিরভাবে, আরেকদিকে তামিম বাউন্ডারি হাঁকাচ্ছিলেন দারুণ। কিন্তু ঝামেলা বাঁধে অভিষিক্ত অ্যান্ডারসন ফিলিপস বোলিংয়ে এলে। ইনিংসের ১৩তম ওভারে নিজের ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় বলে জয়কে বোল্ড করেন এই ক্যারিবীয়ান পেসার।
অনেক পরে ব্যাট চালানো জয় সাজঘরে ফিরে যান ৩১ বলে ১০ রান করে। ভেঙে যায় তামিমের সঙ্গে তার ৪১ রানের জুটি। এরপরও চালিয়েই খেলছিলেন তামিম। কিন্তু ফিফটি থেকে মাত্র ৪ রান দূরে থাকতে নিজের উইকেট দিয়ে আসেন তিনি।
আলজেরি জোসেফের বলকে হাফ ভলি ভেবেছিলেন তামিম। কিন্তু লেন্থটা ছিল আরেকটু পেছনে। শট খেলত গিয়ে টাইমিং ঠিকঠাক হয়নি। ব্ল্যাকউডের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে আউট হয়ে যান তামিম। সেশনের বাকিটা সময় ভালোভাবেই পাড় করেন শান্ত ও এনামুল হক বিজয়।
মধ্যাহ্নভোজের বিরতি থেকে ফিরে প্রথমে ফেরেন বিজয়। আট বছর পর টেস্ট দলে ফেরা এই ব্যাটারকে বেশ আত্মবিশ্বাসী লাগছিল শুরুতে। শটেও ছিল নির্ভরতা। কিন্তু ফিলিপের করা বল কিছুটা নিচু হয়ে গিয়ে লাগে বিজয়ের পায়ে, এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে। এর আগে ৩৩ বলে ২৩ রান করেন তিনি।
এরপর অনেকটা একইভাবে ফেরেন নাজমুল হোসেন শান্তও, কাইল মেয়ার্সের বলে। বলটা তার প্যাডে লাগার পর আউট দেন আম্পায়ার। রিভিউতে দেখা যায় অল্প একটু লেগেছে স্টাম্পে, কিন্তু আম্পায়ার্স কলে ফিরতে হয় সাজঘরে। ৭৩ বল খেলে ২৬ রান করেন একাদশে টিকে থাকার লড়াইয়ে থাকা এই ব্যাটার।
নিজের ইনিংসকে লম্বা করতে পারেননি সাকিব আল হাসানও। আগের দুই ইনিংসে ফিফটি হাঁকানো এই অলরাউন্ডার এবার বোল্ড হন সিলসের বলে, ৯ বল খেলে ৮ রান করে। বাংলাদেশের এরপর আশার ছিল নুরুল হাসান সোহান ও লিটন দাস জুটি।
কিন্তু সোহানও পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। লিটন অবশ্য এরপরও ছিলেন ক্রিজে। স্বীকৃতভাবে তাকে সঙ্গ দিতে পারা শেষ সম্বল হিসেবে তার সঙ্গী ছিলেন মিরাজ। '
কিন্তু চা বিরতি থেকে ফেরার পরই উইকেট দিয়ে আসেন তিনি। মেয়ার্সের বলে পয়েন্টে দারুণ ক্যাচ নিয়ে তাকে ফেরান বদলি ফিল্ডার থমাস। এরপর ফিফটি তুলে নেন লিটন দাস। এবাদতকে আগলে রেখে ভালোই খেলছিলেন তিনি। কিন্তু হুট করেই ক্যাচ তুলে দেন মিড উইকেটে দাঁড়িয়ে থাকা ব্র্যাথওয়েটের হাতে। ৭০ বলে ৫৩ রান করেন তিনি।
বাংলাদেশের ক্রিকেটে যে দৃশ্যের দেখা মিলে না, এরপর দেখা মিলল তেমন কিছুর। দারুণ ব্যাট করলেন টেল-এন্ডাররা। এবাদত হোসেন ও শরিফুল ইসলামের নবম উইকেট জুটিতেই আসে ৩৬ রান। ১৭ বলে ২৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে শরিফুল সাজঘরে ফেরত গেলেও শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন এবাদত। ৩৫ বলে ২১ রান করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময় : ০৩৪৯, জুন ২৫, ২০২২
এমএইচবি