ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সস্তা ডিটারজেন্টে ‘স্বাস্থ্যঝুঁকি’

পলাশ দে, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২২
সস্তা ডিটারজেন্টে ‘স্বাস্থ্যঝুঁকি’

চট্টগ্রাম: বাজারে কাপড় কাচার ডিটারজেন্টের দাম বেশ চড়া। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে চট্টগ্রামের নগর ও গ্রামের হাটবাজারে বিক্রি হচ্ছে নকল ডিটারজেন্ট।

দামে সস্তা ও বিভিন্ন নামী ব্রান্ডের দেখেই এসব নকল ডিটারজেন্ট কিনছেন ক্রেতারা। এছাড়া নকল ডিটারজেন্ট ব্যবহারে ত্বকে সৃষ্টি হচ্ছে ক্ষত ও বিভিন্ন চর্মরোগ।

জানা যায়, এসব নকল ডিটারজেন্ট সচরাচর দোকানে পাওয়া যায় না। নগরের অলিগলি কিংবা গ্রামের হাটবাজারে ভ্যানে ফেরি করে বিক্রি করা হয় বাহারি নামের এ ডিটারজেন্ট প্যাকেট। সচরাচর ৫০০ গ্রামের তিনটি প্যাকেট বিক্রি হয় ১০০ টাকায়। প্রচলিত দামের চেয়ে সস্তা হওয়ায় নিম্ন-মধ্যবিত্ত ক্রেতারা সহজে এ অসাধু বিক্রেতাদের ফাঁদে পড়েন।  

নকল ডিটারজেন্ট ব্যবহার করেছেন এমন বেশ কয়েকজন জানান, নামি ব্রান্ডের সুন্দর প্যাকেট ও দামে সস্তায় হওয়ায় ভ্যান থেকে কিনেন ডিটারজেন্ট। প্যাকেট খুলে হাতে নিলেও বুঝার উপায় নেই এগুলো নকল।  

কিন্তু পানিতে দেওয়ার পর যখন আশানুরূপ ফেনা ও কাপড়ও পরিষ্কার হয় না তখনই তাঁরা যে ঠকেছেন সেটি বুঝতে পারেন। অনেকের কাপড়ে রং উঠে যাওয়ার মতো অভিজ্ঞতা হয়েছে।

শুধু কি তাই, নকল ডিটারজেন্টে কাপড় ধুয়েছিলেন হাটহাজারীর গৃহিনী মমতাজ বেগম (৫৫)। পরেরদিনই তাঁর হাতে সৃষ্টি হয় ক্ষতের।  

গৃহিনী মমতাজ বেগমের ছেলে নাজিম উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, বাজার থেকে আমার ছোটভাই একশ টাকায় ৩টি ডিটারজেন্ট কিনেছিলেন। এ ডিটারজেন্ট ব্যবহার করে আমার মায়ের দুই হাতে ফোসকার মতো পড়ে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। এক সপ্তাহ চিকিৎসার পর এ ক্ষত সেরেছে।

চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সুলতানা আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, উচ্চক্ষার যুক্ত ডিটারজেন্টে ব্যবহারে হাতের চামড়া ফ্যাকাশে, লালচে দানা ও ক্ষতের সৃষ্টি হয়। তাই অনুমোদনহীন ডিটারজেন্ট ব্যবহার করা উচিত নয়।

ভ্যানে করে নকল ডিটারজেন্ট বিক্রি করছেন কথা হয় এমন একজন বিক্রেতার সঙ্গে। তিনি জানান, প্যাকেট প্রতি ১০ টাকা কমিশনে বিক্রি করছেন এসব ডিটারজেন্ট। প্রতিদিন  একেক বাজার ও অলিগলিতে বিক্রি করেন এসব ডিটারজেন্ট। আবার অনেকে ঢাকা থেকে সংগ্রহ করে ফেরি করে বিক্রি করেন।  

ওই বিক্রেতার বিক্রি করা ডিটারজেন্টের প্যাকেটটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, মোড়কের গায়ে ‘সুপার এক্সসেল’যে নামটি ব্যবহার করা হয়েছে একটি ভারতীয় ব্রান্ডের নাম। তবে এর মোড়কের ডিজাইনটি আবার দেশে প্রচলিত জনপ্রিয় একটি ব্রান্ডের মতো দেখতে। অর্থাৎ সুন্দর মোড়কের মাধ্যমে ক্রেতাকে ধোঁকাটা সহজে দিচ্ছেন এসব অসাধু বিক্রেতা।

এব্যাপারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সুমন গাঙ্গুলি বাংলানিউজকে বলেন, এসব ডিটারজেন্টে ক্ষারের মাত্রা অনেক বেশি থাকে। কাপড় কাচার সোডার সঙ্গে সুগন্ধি মিশিয়ে মূলত এ ডিটারজেন্ট তৈরি করা হয়। তাই এসব ডিটারজেন্ট ব্যবহার করলে ত্বকের ক্ষতি হচ্ছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১০১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০২২
পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।