ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বছরের এক বিস্ফোরণেই শেষ শত মানুষের স্বপ্ন

মিজানুর রহমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২২
বছরের এক বিস্ফোরণেই শেষ শত মানুষের স্বপ্ন ...

চট্টগ্রাম: অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা প্রায় সময় ঘটে বাংলাদেশে। অগ্নিকাণ্ড কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে তা বুঝিয়ে দিয়েছে চট্টগ্রামে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা বিএম ডিপো’র বিস্ফোরণ।

বছরের মাঝামাঝি সময়ে ঘটে যাওয়া এ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫০ জন। আহত হন শতাধিক মানুষ।

চলতি বছরের গত ৪ জুন রাতে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে আগুন লাগার পর একের পর এক বিস্ফোরণ ঘটে। ডিপোতে থাকা রাসায়নিকের কারণে ছড়িয়ে পড়া ওই আগুন ৮৬ ঘণ্টা পর বিভিন্ন বাহিনীর চেষ্টায় নেভানো হয়। এই দুর্ঘটনায় অনেকেই হারিয়েছেন তার স্বজন। আবার অনেকেই পাননি মরদেহের শেষ অস্তিত্বটুকু।

বিএম ডিপো’র সেদিনের ভয়াবহতা আজও তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে ভুক্তভোগীদের। বেঁচে থাকার তাগিদে হয়তো আবারো কাজ ফিরেছেন অনেকে তবে এখনো স্বাভাবিক হতে পারেননি তারা।

বছরজুড়ে আলোচনায় থাকা এই অগ্নিকাণ্ড ছাড়াও চট্টগ্রামে ঘটেছে ডজনখানেক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি নগরের আকবর শাহ থানা এলাকার কর্ণেলহাটে ফার্নিচারের দোকানে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। এতে ক্ষতি হয় প্রায় ১০ লাখ টাকা।

এছাড়া ১১ মার্চে নগরের জহুর হকার্স মার্কেটে আগুন লাগে। এতে ভস্মীভূত হয় কয়েকটি দোকান। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ৯টি ইউনিটের প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ১৩ মে ভোরে বন্দরের ৪ নম্বর গেইট এলাকায় একটি কনটেইনারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

১৮ মে নগরের ইপিজেড কলসি দীঘির পাড় এলাকায় কয়েকটি দোকান ও বসতঘরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে আব্দুল করিম হাওলাদার নামের শতবর্ষী এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। একই বছরের ৮ জুন ভোরে নগরের ডবলমুরিং থানার পূর্ব মাদারবাড়ি কামাল গেইট এলাকায় জুতার কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে কয়েক লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয় বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

৭ সেপ্টেম্বর বাঁশখালীর চাম্বল ইউনিয়নের পশ্চিম চাম্বলের জলদাসপাড়ায় ৬০টি বসতঘরে আগুন লাগে। এতে সবগুলো ঘরই ভস্মীভূত হয়। এছাড়া চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর বায়েজিদে একটি সেমিপাকা ঝুট কাপড়ের গুদামে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ক্ষতি হয় প্রায় কয়েক লাখ টাকা। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে জানিয়েছিল ফায়ার সার্ভিস।

এসব অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বুঝিয়ে দিয়েছে চট্টগ্রামে বার্ন ইউনিটের প্রয়োজনীয়তা। শুধুমাত্র চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ২৪ শয্যার বার্ন ইউনিটই ভরসা অগ্নিদগ্ধদের জন্য। সচেতন নাগরিকরা বলছেন, চট্টগ্রামের মতো একটা অঞ্চলে স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও পূর্ণাঙ্গ বার্ন ইউনিট গড়ে না উঠা দুঃখজনক। তবে পূর্ণাঙ্গ বার্ন ইউনিট প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ।  

বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা,  ডিসেম্বর ২৮, ২০২২
এমআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।