চট্টগ্রাম: লোহাগাড়ার চুনতি থেকে হারবাং অভয়ারণ্যে বর্ষায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। এতে বন্ধ হয়ে যেতে পারে রেল যোগাযোগ।
এ অবস্থায় বিদেশি পরামর্শক দল সরেজমিন পরিদর্শন করে রেল লাইনের পাশে পাহাড়ের উভয়দিকে লতা-ঘাস ও গাছ লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) দোহাজারী-কক্সবাজার ১০১ কিলোমিটার রেললাইনের মধ্যে দোহাজারী থেকে চকরিয়া পর্যন্ত প্রায় ৫৩ কিলোমিটার রেলপথ ট্রেনে সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন সরকারি রেল পরিদর্শক (জিআইবিআর) ইঞ্জিনিয়ার ফরিদ আহমেদ। বুধবার তিনি কক্সবাজার আইকনিক স্টেশন পরিদর্শন করেন।
প্রকল্প পরিচালক জানিয়েছেন, এই প্রকল্পের বিদেশি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান পাহাড়ের উভয় পাশে লতা-ঘাস ও গাছ লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন। সে অনুযায়ী কাজ চলছে। এছাড়া ট্রেনের ধাক্কায় একটি বাচ্চা হাতি মারা যাওয়ার পর উভয় পাশ দিয়ে যাতে হাতি রেললাইনে নামতে না পারে, সেজন্য উঁচু করে ওয়াল নির্মাণ কো হচ্ছে। হাতি নামার পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ পরিদর্শন শেষে ফরিদ আহমেদ বলেন, প্রকল্পের কাজ এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি। আমরা ট্র্যাকের কাজ পরিদর্শন করেছি। সিগন্যালিং সিস্টেম ও ইলেক্ট্রিক্যাল লেভেল ক্রসিংগুলো দেখলাম। দোহাজারীর পর যেসব স্থানে বন্যার পানিতে রেলপথ ডুবে যায় সেখানে যেসব কালভার্ট করা হয়েছে সেগুলো দেখলাম। বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ার পর তারা আরো ৪টি কালভার্ট নতুন করে তৈরি করেছেন। চুনতি থেকে হারবাং অভয়ারণ্যে বর্ষায় পাহাড় ধসে রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, বিষয়টিও দেখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, রেলপথে লেভেল ক্রসিং, পয়েন্ট ক্রসিং, পাহাড় ধস, নিরাপত্তাসহ কোনো ক্রটি থাকলে সেগুলো চিহ্নিত করে দ্রুত সমাধানের তাগিদ দেব। এসব বিষয়ে আমরা বিশেষজ্ঞদের মতামত নেব। কারণ এই রেলপথ নিয়ে সারাদেশের মানুষের আগ্রহ বেশি। এখনো কাজ শেষ না হওয়ায় কিছুটা ক্রটি রয়েছে বলে মনে হলেও কাজ শেষ হলে সেগুলো আর থাকবে না।
দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণের সবচেয়ে বড় ক্রটি দেখা গেছে কক্সবাজারের আইকনিক স্টেশন নির্মাণে। বর্ষায় স্টেশনের ওপর থেকে পানি চুঁইয়ে স্টেশনের ভেতরে পড়ার বিষয়ে ফরিদ আহমেদ বলেন, কক্সবাজার আইকনিক স্টেশন পরিদর্শন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথটি ২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর উদ্বোধন করা হয়। ট্রেন চলাচল শুরু হয় ১ ডিসেম্বর থেকে। বর্তমানে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে সরাসরি দুটি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করছে। এর বাইরে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার একটি বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করা হচ্ছে। ১৮ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের মধ্যে রামু থেকে টেকনাফের ঘুমধুম পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার রেলপথ বাদ যাওয়ায় দোহাজারী-কক্সবাজার ১০১ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে সরকারের ব্যয় হয়েছে সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০২৪
বিই/টিসি