চট্টগ্রাম: জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার আওতাধীন চার উপজেলা ও তিন পৌরসভার আহ্বায়ক কমিটি গঠন নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীরা এ ব্যাপারে দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
জানা যায়, গত ১২ সেপ্টেম্বর কেন্দ্র থেকে মহসীন চৌধুরী রানাকে আহ্বায়ক এবং মীর জাকের আহমেদকে সদস্য সচিব করে ৮ সদস্যের চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা কৃষক দলের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর গত ১ নভেম্বর দক্ষিণ জেলার আওতাধীন ৪ উপজেলা বোয়ালখালী, পটিয়া, চন্দনাইশ ও বাঁশখালী এবং ৩ পৌরসভা বোয়ালখালী, পটিয়া ও বাঁশখালী শাখার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।
এর মধ্যে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবসহ ৭১ সদস্যবিশিষ্ট বোয়ালখালী উপজেলা কমিটি, ৩১ সদস্যের বোয়ালখালী পৌরসভা কমিটি, ৫১ সদস্যের পটিয়া উপজেলা কমিটি, ৩১ সদস্যের পটিয়া পৌরসভা কমিটি এবং ৩১ সদস্যের চন্দনাইশ উপজেলা কমিটি দেওয়া হয়। একই দিন দুই সদস্যবিশিষ্ট বাঁশখালী উপজেলা কমিটি ও বাঁশখালী পৌরসভা কমিটিও ঘোষণা করা হয়।
এসব কমিটি ঘোষণার পর সংগঠনের পদপ্রত্যাশী অনেক নেতা-কর্মী অনিয়মের অভিযোগ তুলেন। কৃষক দলের নেতাকর্মীরা জানান, দক্ষিণ জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক মহসীন চৌধুরী রানা টাকা নিয়ে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের অনুসারীদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এমন বিতর্কিত কমিটি বাতিল চেয়ে গত ৩ নভেম্বর কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের কাছে তারা লিখিত অভিযোগ পাঠিয়েছেন।
দক্ষিণ জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক হাজী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, এসব কমিটিতে কৃষক দলের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের বাদ দিয়ে টাকার বিনিময়ে ফ্যাসিবাদের দোসরদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সবার সঙ্গে আলোচনা না করেই আহ্বায়ক কমিটি অনুপ্রবেশকারীদের সুযোগ দিয়েছে।
বাঁশখালী পৌরসভা কৃষক দলের কমিটিতে পদপ্রত্যাশী চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা কৃষক দলের সাবেক সদস্য মোহাম্মদ শোয়েব বাংলানিউজকে বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে জাতীয়তাবাদী রাজনীতির সঙ্গে থেকে জড়িত থেকে মামলা-হামলার শিকার হয়েছি। অনেক নির্যাতন সহ্য করেছি। কিন্তু যখনই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে, তখন সুবিধাবাদী নেতারা এসে টাকার বিনিময়ে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের কৃষক দলের কমিটিতে স্থান দিচ্ছেন।
তিনি দাবি করেন, মহসীন চৌধুরী রানা প্রায় লাখ টাকার বিনিময়ে ফজল কাদেরকে বাঁশখালী উপজেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব এবং শোয়াইবুল ইসলাম চৌধুরীকে বাঁশখালী পৌরসভা কমিটির আহ্বায়ক করেছেন। অথচ তারা আওয়ামীলীগের রাজনীতি করেছেন। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে এমন বিতর্কিত কমিটি বাতিল চাই।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে দক্ষিণ জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক মহসিন চৌধুরী রানা বলেন, ‘যাদের কমিটিতে আনা হয়েছে, তারা সবাই আমাদের আন্দোলন-সংগ্রামে ছিলেন। যোগ্যদেরকেই কমিটিতে রাখা হয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের সম্মতি নিয়েই কমিটি দিয়েছি’।
কৃষক দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলাম পলাশ বলেন, ৭টি কমিটি ঘোষণার আগে আমাদের জানানো হয়নি। কেন্দ্রে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আশা করি, তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০২৪
এমআই/টিসি