চট্টগ্রাম: দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে পরিচালিত ষড়যন্ত্র জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দেবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, মহানগরীর আমির শাহজাহান চৌধুরী।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে বিজয় দিবস উপলক্ষে জামায়াত ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের পুরো ইতিহাসকে বিকৃত করেছে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে স্বাধীনতার বিরোধী আখ্যা দিয়ে ৫৩ বছর মিথ্যার আশ্রয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করেছে।
১৯৪৭, ৭০, ৭৫, ৯০ এর গণঅভ্যুত্থান, ২০০১ ভোট বিপ্লবের পরে ২০২৪ এর ৩৬ জুলাই এটাই প্রমাণ করে হিন্দুস্তান যতই ষড়যন্ত্র করুক বাংলাদেশে এক ইঞ্চি জায়গার ওপরেও হিন্দুস্তান আধিপত্য বিস্তার করতে পারবে না। কারণ এই স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও ইসলামের জন্য জামায়াতের নেতারা ফাঁসির মঞ্চেও গেছেন। এই স্বাধীনতার জন্য ২০২৪ সালের ৩৬ জুলাই ১ হাজার ৫৮৩ জন দামাল যুবক ছাত্ররা তাদের বুকের তাজা রক্ত দিয়েছে। বাংলাদেশের বিডিআর হত্যাকাণ্ড সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র।
তিনি বলেন, বিজয় দিবসকে তারা তাদের একক সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছিল। অথচ আজকে কত সুন্দর সারাদেশে সব দলের অংশগ্রহণে বিজয় দিবস উদযাপন করা হচ্ছে। বিজয় দিবসের নামে হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে। চিকিৎসার নামে টাকা বিদেশে পাচার করেছে। আমার দেশকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। এক এক করে সব ষড়যন্ত্র জনগণের সামনে উন্মোচিত হচ্ছে।
দেওয়ান বাজারের বাংলাদেশ ইসলামিক একাডেমি (বিআইএ) মিলনায়তনে আলোচনা সভায় নগর জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিনের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য চট্টগ্রাম মহানগরীর নায়েবে আমির পরিবেশবিদ মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, নগর অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ উল্লাহ ও ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুস, নগর সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগরী সভাপতি এসএম লুৎফুর রহমান, নগর কর্মপরিষদ সদস্য আবু হেনা মোস্তফা কামাল ও কোতোয়ালী থানা আমির আমির হোছাইন, চকবাজার থানা আমির আহমদ খালেদুল আনোয়ার, সমাজসেবক ডা. খাইরুল আনোয়ার, কোতোয়ালী থানা সেক্রেটারি মোস্তাক আহমেদ, চকবাজার থানা সেক্রেটারি সাদুর রশিদ চৌধুরী প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন নগর কর্মপরিষদ সদস্য আবু বকর সিদ্দিক, অধ্যক্ষ মো. সাইফুল্লাহ ও হামেদ হাসান ইলাহী।
পরিবেশবিদ মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ দীর্ঘ ১৮ বছর জামায়াতে ইসলামীকে বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের সুযোগ দেয়নি। বাংলাদেশের মানচিত্র নিয়ে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র চলছে। পূর্ব পাকিস্তানের সীমানাই বাংলাদেশের সীমানা। এই সীমানার এক ইঞ্চি জায়গাও আমরা ছাড়বো না ইনশাআল্লাহ। তারা ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ মেনে নিলে ১৯৪৭ সালে আরো বড় এলাকা নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো এবং স্বাধীন সত্তা নিয়ে আমরা দাঁড়িয়ে যেতে পারতাম। কিন্তু তারা ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ মেনে নেয়নি, যার ফলে ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ করতে হয়েছে। এতে করে তারা প্রমাণ করেছে তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী। যারা ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ মেনে নেয়নি তারা আবার ১৯৭১ সালের বঙ্গভঙ্গের সহযোগিতা করেছে তাদের স্বার্থেই।
তিনি বলেন, ১৯৪৭ সালকে ধারণ করতে হবে এবং সেটাকে চর্চা করতে হবে। ১৯৪৭ সালে যদি আমরা ব্রিটিশ থেকে স্বাধীনতা অর্জন না করতাম তাহলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। কাশ্মীরের স্বাধীনতা চেয়ে তিনি বলেন কাশ্মীরে তাদের গণভোটের অধিকার দিতে হবে।
বিশ্বের মানবতাবাদীদের ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতার পক্ষে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
পাহাড়িদের আদিবাসী ঘোষণা দিয়ে উস্কে দিচ্ছে একটি মহল। তাদের উস্কানি দিয়ে পাহাড় বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্র করছে। এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামী সব সময় স্বোচ্চার রয়েছে। কোনো আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র, কোনো ইন্ডিয়ান ষড়যন্ত্র এদেশে বাস্তবায়ন হতে দেওয়া হবে না। হয় বিজয় না হয় শাহাদত, শাহাদতের তামান্না নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০২৪
এআর/পিডি/টিসি