ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মূল পরিকল্পনায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’ছাত্র

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৩
মূল পরিকল্পনায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’ছাত্র

চট্টগ্রাম: আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’ছাত্র চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানোর মূল পরিকল্পনা করে। পরবর্তীতে তারা সঙ্গে নেয় আরও দু’জনকে।

জামায়াত-শিবির কর্মীদের চারজনের এ দল মিলে বিমানবন্দরে ঘটায় এ নাশকতা।

ককটেল বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত চারজন হল, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র শাহেদ হোসেন (২৭) ও বিবিএ’র ছাত্র জসীম এবং শিবির কর্মী জাবেদ ও ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের কর্মচারী জামায়াত সমর্থক সাহাবউদ্দিন।


এদের মধ্যে সাহাব উদ্দিনকে ঘটনার পর গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার রাতে শাহেদকে গ্রেপ্তার করেছে নগর গোয়েন্দা ‍পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে শাহেদ ককটেল বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত চারজনের নাম প্রকাশ করে এবং পুরো বিষয়টি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরে।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (গোয়েন্দা) বাবুল আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’ছাত্রসহ ঘটনার সঙ্গে চারজন পরস্পরের পূর্ব পরিচিত। তারা নিজেরাই বিমানবন্দরে ককটেল হামলার পরিকল্পনা করে এবং পরবর্তীতে তা বাস্তবায়ন করে। আমরা জসীম ও জাবেদকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।

গত ১৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে ভিআইপি গাড়ি পার্কিংয়ের স্থানে একটি শক্তিশালী ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাহেদ জানায়, স্কুলে থাকতেই শাহেদ ছাত্রশিবিরের সঙ্গে জড়িত হই। প্রথমে শিবিরের সমর্থক পরে কর্মী হিসেবে মনোনীত করা হয়। আর ঘটনার সঙ্গে জড়িত জাবেদ পতেঙ্গা আলিয়া মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে এবং ইসলামী ছাত্র শিবিরের সদস্য। জসিম শিবিরের সাথী।

শাহেদ জানায়, ঘটনার দিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শাহেদ, জাবেদ, জসিম ও সাহাবউদ্দিন বিমানবন্দর এলাকায় একটি রেস্টুরেন্টে বসে ককটেল বিস্ফোরণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়। প্রথমে বিমানবন্দরের প্রবেশ মুখে ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু প্রবেশমুখে আনসার সদস্যরা দায়িত্বে থাকায় ধরা পড়ে যাবার আশংকায় ভিআইপি কার পার্কিং এলাকায় বিষ্ফোরণ ঘটানোর সিদ্ধান্ত নেয় তারা।

ওই বৈঠকেই জাবেদ একটি প্যাকেটে মোড়ানো অবস্থায় ককটেল দেয় সাহাবউদ্দিনকে।  

এর আগে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সাহাবউদ্দিন জানিয়েছিল, জামায়াত সমর্থক সাহাবউদ্দিনকে ওইদিন মাগরিবের নামাজের পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র শিবিরের এক কর্মীসহ দু`জন এসে ককটেলের প্যাকেটটি দিয়ে যায়। এসময় সাহাবউদ্দিন ককটেলসহ বিমানবন্দরের ভেতরে ঢুকেন। ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের কর্মচারী হওয়ায় তাকে সন্দেহ করেনি বিমানবন্দরের নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মীরা।

মাত্র কয়েক মিনিটের জন্য ভিআইপি কার পার্কিংয়ের স্থান ফাঁকা পেয়ে বিমানবন্দরের দোতলার জানালা দিয়ে ককটেল ছুঁড়ে আবার নিচে নেমে ইউনাইটেডের অফিসে চলে যায় সাহাবউদ্দিন।

ওই ঘটনার পর থেকেই চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে বাড়তি সতর্ক অবস্থায় আছে প্রশাসন।

এদিকে গ্রেপ্তার হওয়া শাহেদকে রোববার আদালতে হাজির করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২,২০১৩
সম্পাদনা: তপন চক্রবর্তী, ব্যুরো এডিটর।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।