ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চট্টগ্রামে ছাত্রদলের হরতালের নেপথ্যে...

মো.মহিউদ্দিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৩
চট্টগ্রামে ছাত্রদলের হরতালের নেপথ্যে...

চট্টগ্রাম: ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সিনিয়র সহ- সভাপতি বজলুল করিম চৌধুরী আবেদকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে সোমবার চট্টগ্রামে ছাত্রদল সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করে। আকস্মিকভাবে এ হরতাল আহ্বান নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।



অনেকের মতে, এ হরতাল ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির জন্য নয়, পুলিশের মামলার আসামী হয়ে আত্মগোপনে থাকা এক বিএনপি নেতার আদালতের হাজিরার তারিখ পেছাতে দায়সারা গোছের এ হরতাল আহ্বানের কৌশল নেয়া হয়।  

এছাড়া হরতালের এ কর্মসূচি নিয়ে বেশ কৌতুহলেরও জন্ম দেয়।


এদিকে হরতালের ডাক দিলেও সোমবার চট্টগ্রামের রাজপথে তেমন কোন কার্যকর ভূমিকা দেখা যায়নি ছাত্রদলের। সাধারণ মানুষও হরতালের বিষয়ে তেমন কিছু জানতেন না।

অনুসন্ধ্যানে জানা গেছে, নগরীর কোতোয়ালী থানায় দায়ের করা একটি মামলায় সোমবার আদালতে হাজির হওয়ার কথা ছিল চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডা.শাহাদাত হোসেনের।

এ মামলায় আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে পারেন এমন আশঙ্কার কারণেই মূলত: শাহাদাত সমর্থিত ছাত্রদল নেতারা হরতালের ঘোষণা দেন।

প্রসঙ্গত: হরতালে চট্টগ্রাম আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকে। দেশের অন্য  কোথাও হরতালে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ না থাকলেও চট্টগ্রাম আইনজীবীদের সম্মিলিত সিদ্ধান্তে গত ২৩ বছর ধরে নজিরবিহীন এ নিয়ম চালু আছে।  

মামলার আসামী পক্ষের আইনজীবী কামরুল ইসলাম সাজ্জাদ বাংলানিউজকে বলেন, নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন সোমবার আদালতে হাজির হওয়ার কথা ছিল। হরতালের কারণে তিনি আসতে না পারায় মামলার তারিখ পেছানো হয়েছে।

চট্টগ্রাম মহানগর পিপি এডভোকেট কামাল উদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, আইনজীবী সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হরতাল হলে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকে। এতে আসামী ও সাক্ষীরা এসে ফেরত যান। মামলার কার্যক্রম বিলম্বিত হয়। কিন্তু আমাদের আইনজীবী সমিতির সিদ্ধান্ত মানতে হবে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নগর ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ ও সমন্বিত কোন সিদ্ধান্ত না থাকলেও শুধুমাত্র নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডা.শাহাদাত হোসেনের আদালতে হাজিরা ঠেকাতেই এ হরতাল আহ্বানের বিষয়টি এখন নেতাকর্মীদের মধ্যে জোরালো আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রোববার সকালে নগরীর নাসিমন ভবনের সামনে অবরোধের সমর্থনে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক (চট্টগ্রাম মহানগর) এসএম সালাউদ্দিন সোমবার চট্টগ্রামে সকাল সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেন।

তবে হরতাল ঘোষণার সময় চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি গাজি সিরাজ উল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু উপস্থিত ছিলেন না।

হরতাল আহ্বানের সময় অনুপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে নগর ছাত্রদলের সভাপতি গাজি সিরাজ উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে নগরীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তাই দলীয় কার্যালয়ে যেতে পারি না।

ডা.শাহাদাত হোসেনের আদালতে হাজিরা ঠেকাতেই হরতাল আব্হান কিনা জানতে চাইলে গাজি সিরাজ তা অস্বীকার করে বলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গ্রেফতার, নেতা-কর্মীদের নামে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার ও নেতা-কর্মীদের বাসায় তল্লাশীর নামে পুলিশি হয়রানির প্রতিবাদে হরতাল আহ্বান করা হয়েছে।

একই বিষয়ে হরতাল আহ্বানকারী ছাত্রদল নেতা এসএম সালাউদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, হরতাল সম্পর্কে ভুল ব্যাখ্যার অবকাশ নেই।  

তিনি এসময় হরতাল আধাবেলা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। যদিও এর আগে সকাল-সন্ধ্যা হরতালে আহ্বান করেছিলেন তিনি।  

আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে থাকা বিএনপির এক জ্যেষ্ঠ্য নেতা বাংলানিউজকে বলেন, মামলা, আটক, গ্রেপ্তার মোকাবেলা করার সাহস না থাকলে নেতৃত্ব দেয়া যায়না। এরকম কর্মকান্ডের জন্য বিএনপি রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম জমাতে পারছেনা।    

বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৩
এমইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।