চট্টগ্রাম: দেশের বিশাল সমুদ্র অঞ্চলের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য শক্তিশালী নৌবাহিনী গড়ে তোলার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ।
তিনি বলেছেন, কারও সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য নয়, আত্মমর্যাদাশীল জাতির সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকার জন্যই আমাদের আত্মরক্ষার সামর্থ্য থাকা দরকার।
সোমবার চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর মিডশীপম্যান ২০১২ আলফা এবং ডিইএ ২০১৩ ব্রাভো ব্যাচের গ্রাজুয়েশন প্যারেডে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি অ্যাভোকেট আব্দুল হামিদ এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ বলেছেন, ‘দেশের বিশাল সমুদ্র অঞ্চলের সার্বভৌমত্ব রার জন্য একটি শক্তিশালী নৌবাহিনী গড়ে তোলার কোন বিকল্প নেই।
প্যারেডের আগে রাষ্ট্রপতি ২০১২/এ এবং ডিইএ ২০১৩/বি ব্যাচের মিডশীপম্যান ও ডাইরেক্ট এন্টি অফিসারদের প্যারেড পরিদর্শন এবং কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করেন। এসময় রাষ্ট্রপতির সাথে ছিলেন নৌবাহিনীর প্রধান ভাইস এডমিরাল ফরিদ হাবিব এবং চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের প্রধান রিয়ার এডমিরাল আকতার হাবিব।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যকার দীর্ঘদিনের অমিমাংসিত সমুদ্রসীমা ২০১২ সালে চুড়ান্তভাবে নির্ধারিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক আদালতে ২০১৪ সালে ভারতের সঙ্গে অমিমাংসিত সমুদ্রসীমা চুড়ান্ত হবে। সে রায়ও আমাদের অনুকূলে আসতে পারে। ’
কুচকাওয়াজ শেষে মিডশীপম্যান ২০১২ আলফা ব্যাচের সেরা চৌকস ক্যাডেট হিসেবে মো. মেরাজুল ইসলামের হাতে সোর্ড অব অনার পদক তুলে দেন রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ। এছাড়াও মিডশিপম্যান মো. আফজালুল আলম ফরিদকে ওসমানী স্বর্ণ পদক এবং মো. সানজিদুর রহমানকে নৌবাহিনী প্রধান স্বর্ণ পদক প্রদান করা হয়। এই ব্যাচে ৪৪ বাংলাদেশী মিডশীপম্যানের পাশাপাশি ৮জন ফিলিস্তিনি, একজন মালদ্বীপ এবং একজন শ্রীলংকান প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
এরপর দুপুরে চট্টগ্রাম নৌঘাটি ঈসা খাঁ’তে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নবসংযোজিত চারটি যুদ্ধজাহাজের কমিশনিং করেন রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ। এসময় তিনি দেশের সর্ববৃহৎ যুদ্ধজাহাজ বিএনএস সমুদ্র জয় এবং খুলনা শিপইয়ার্ডে তৈরী তিনটি আধুনিক যুদ্ধজাহাজ বিএনএস ‘অপরাজেয়’, ‘অদম্য’ এবং অতন্দ্র’র কমান্ডিং অফিসারদের হাতে কমিশনিং ফরমান তুলে দেন।
কমিশনিং অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে একটি কার্যকর বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য স্বল্প এবং দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে, যা আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে। ’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘২০১৫ সালের নৌ-বাহিনীর বহরে যুক্ত হবে দুটি করবেট। এ দুটি করবেট এখন চীনে নির্মাণাধীন। চীন থেকে আরও দুটি মিসাইল ফ্রিগেট আগামী জানুয়ারিতে নৌবাহিনীতে সংযুক্ত হবে। ’
মিশনিং অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূঁইয়া, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল এনামুল বারী, নির্বাচনকালীন সরকারের এলজিআরডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডেন ডব্লিউ মজিনাসহ বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক, সামরিক ও বেসামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩,২০১৩
সম্পাদনা: তপন চক্রবর্তী, ব্যুরো এডিটর।