ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সীতাকুণ্ডে ট্রাকে পেট্রোল বোমা, পুড়ে মরল ৭টি গরু

বাংলানিউজ টিম, চট্টগ্রাম ব্যুরো | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৩
সীতাকুণ্ডে ট্রাকে পেট্রোল বোমা, পুড়ে মরল ৭টি গরু ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ড উপজেলার ফৌজদারহাট বাজারে নাশকতার নির্মম বলি হয়েছে ৭টি গরু। নাশকতার নির্মমতা থেকে রেহাই পায়নি এ অবুঝ প্রাণীগুলোও।



অবরোধকারীদের নাশকতার আগুনে গরুগুলো জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা যাবার পাশাপাশি পুড়ে গেছে বেশ কয়েকটি আসবাবপত্রের দোকান, গুদাম ও কারখানা এবং একটি বসতঘর।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ফৌজদারহাট বাজারে চট্টগ্রাম শহর অভিমুখী গরুবোঝাই একটি ট্রাকে চোরাগোপ্তাভাবে পেট্রোল বোমা ছুঁড়ে মারে অবরোধকারীরা।
এতে ট্রাকটিতে আগুন ধরে যায় এবং সেটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার একপাশে গিয়ে উল্টে যায়।

এসময় ট্রাক থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে রাস্তার পাশে থাকা ফার্ণিচারের শোরুমে। সেখান থেকে আসবাবপত্রের কারখানা, গুদাম ও একটি বসতঘরেও আগুন লাগে।

ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-সহকারী পরিচালক জসীম উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, উত্তরবঙ্গ থেকে ২৬টি গরু নিয়ে আসা একটি ট্রাকে আগুন দেয়ার পর সাতটি গরু দগ্ধ হয়ে মারা গেছে। বাকি ১৯টি গরু অক্ষত আছে।

আগুনে কালাম চৌধুরী, ইউনূস চৌধুরী এবং সালাউদ্দিনের মালিকানাধীন তিনটি শোরুম ও সঙ্গে থাকা কারখানা-গুদাম এবং পাশ্বর্বর্তী একটি বাড়ির একাংশ পুড়ে গেছে বলে তিনি জানান।

সীতাকুণ্ড ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র অফিসার ফারুক আহমেদ বাংলানিউজকে জানান, ভোরে সাড়ে ৫টার দিকে আগুন লাগার খবর পাবার পর ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটের পাঁচটি গাড়ি ঘটনাস্থলে গিয়ে সকাল ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। সকাল পৌনে ৮টার দিকে আগুন পুরোপুরি নির্বাপণ সম্ভব হয়েছে।

ফারুক আহমেদ বলেন, আগুন লাগার পর ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে রাস্তার পাশে পড়ে যাওয়ায় আগুন আসবাবপত্রের দোকানে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে নির্বাপণে বেশি সময় লেগেছে।

তবে আগুনে কোন লোকজনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে তিনি জানান।

সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, আগুনে জীবন্ত দগ্ধ গরুগুলো ট্রাকের আশপাশে ছড়িয়ে, ছিটিয়ে আছে। কোনটি থেকে তখনও ধোঁয়া উঠছে, কোনটি পড়ে আছে অর্ধসিদ্ধ অবস্থায়। অবুঝ প্রাণী নিয়ে নির্মমতার খবর শুনে ঘটনাস্থলে আসেন আশপাশের এলাকার অনেক নারীপুরুষ। অনেকে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মোহাম্মদ ইলতুৎমিশ সাংবাদিকদের বলেন, আমার জীবনে এরকম নির্মমতা আমি দেখিনি। অবুঝ গরুগুলো আগুনের তাপে দগ্ধ হয়ে জিহ্বা বের করে বাঁচার চেষ্টা করছিল, কিন্তু বাঁচতে পারেনি সেগুলো।

আগুনে সাতটি গরু মারা যাবার পাশাপাশি আরও একটি গরু দগ্ধ হয়েছে বলে পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে ফার্নিচারের দোকান আগুন লাগার খবর শুনে ঘটনাস্থলে এসে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এক মালিক সালাহউদ্দিন। তিনি জানান, তার প্রায় ৮০ লক্ষ টাকার আসবাবপত্র এবং ২০ লক্ষ টাকার বিভিন্ন মালামাল পুড়ে গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০১৯ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪,২০১৩
সম্পাদনা: তপন চক্রবর্তী, ব্যুরো এডিটর।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।